• সেনাবাহিনীর চক্ষু ছিলেন তিনি, প্রয়াত বায়ুসেনার সবচেয়ে বয়স্ক ফাইটার পাইলট
    হিন্দুস্তান টাইমস | ২০ এপ্রিল ২০২৪
  • ১০৩ বছর বয়সে চলে গিয়েছেন ভারতীয় বায়ুসেনার সবচেয়ে বয়স্ক ফাইটার পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার। সোমবার রাতে উত্তরাখণ্ডে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন দলীপ সিং মাজিতিয়া। গত ২০২০ সালে ২৭ জুলাই ১৯২০ সালে জন্মগ্রহণকারী দলীপ সিং মাজিতিয়ার ১০০ তম জন্মদিন উদযাপন করেছিল ভারতীয় বিমান বাহিনী। অকালি দলের নেতা হরসিমরত কৌর এবং বিক্রম সিং মাজিতিয়ার কাকা, দলীপ সিং মাজিতিয়া, সিমলার স্কিপলিন ভিলায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন।

    মাত্র দশ বছর বয়সে, দলীপ সিং অমৃতসরের খালসা কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন। এরপর লাহোরে গিয়ে স্নাতক ডিগ্রির জন্য পড়াশোনা শুরু হয়েছিল তাঁর। দলীপ সিং, উচ্চ শিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়েও গিয়েছিলেন, ঘোড়ায় চড়তে জানতেন, এমনকি নিজের এই গুণের জন্য অশ্বারোহী বাহিনীতেও কাজের সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি।

    দলীপ সিং মাজিতিয়া তাঁর কাকা সুরজিত সিং মাজিতিয়ার (বিক্রমজিৎ সিং মাজিতিয়ার দাদু) দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন, যিনি তাঁর থেকে মাত্র আট বছরের বড় ছিলেন। তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে, দলীপ সিং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য ১৯৪০ সালে স্বেচ্ছাসেবক হিসাবে ভারতীয় বিমান বাহিনীতে যোগদান করেছিলেন। তাঁর বাবা কৃপাল সিং মাজিতিয়া পঞ্জাবে ব্রিটিশ আমলে বেশ বিখ্যাত ছিলেন। তাঁর পিতামহ সুন্দর সিং মাজিতিয়া চিফ খালসা দিওয়ানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি খালসা কলেজ অমৃতসরের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও ছিলেন।

    দলীপ সিং মাজিতিয়া করাচি ফ্লাইং ক্লাবে জিপসি মথ বিমানে ওড়ানোর প্রাথমিক বিষয়গুলি শিখেছিলেন। ১৯৪০ সালের আগস্টে ওয়ালটন, লাহোরের ইনিশিয়াল ট্রেনিং স্কুলে (ITA) চতুর্থ পাইলট কোর্সে ভর্তি হওয়ার তিন মাস পরে তিনি সেরা পাইলট ট্রফি জিতে নিয়েছিলেন। ১৯৪৩ সালের মার্চ মাসে, দলীপ বাবা মেহর সিং-এর অধীনে নয় নম্বর স্কোয়াড্রনে একজন ফ্লাইং অফিসার হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর নবগঠিত স্কোয়াড্রন নতুন জায়গা পরিদর্শন করতে থাকে এবং ১৯৪৩ সালের নভেম্বরে এটি বর্তমান বাংলাদেশের কক্সবাজারে পৌঁছে গিয়েছিল। এখানে, তিনি বেশ কয়েকটি পুনরুদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে ১৪ তম সেনাবাহিনীর চক্ষু হিসাবে পরিচিত লাভ করেছিলেন। এই সময়কালে, মাজিতিয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় বার্মা ফ্রন্টে বিখ্যাত হকার হারিকেন উড়ানোর ফাইটার পাইলট হিসাবেও কাজ করেছিলেন।

    যদিও বিমান বাহিনীতে তার কর্মজীবন মাত্র এক বছরের জন্য স্থায়ী হয়েছিল এবং তিনি ১৯৪৭ সালের অগস্টে ভারতের স্বাধীনতার পর অবসর নিতে হয়েছিল তাঁকে। কিন্তু আকাশে উড়ান দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর আবেগ তাঁকে সাহায্য করে। পরবর্তীতে তিনি টানা ১১০০ ঘণ্টা ১৩টি ভিন্ন ভিন্ন বিমান উড়িয়ে রেকর্ড তৈরি করেছিলেন। ২৩ এপ্রিল ১৯৪৯ সালে কাঠমান্ডু উপত্যকায় বিমান অবতরণকারী প্রথম ব্যক্তি ছিলেন তিনিই। এয়ার মার্শাল রণধীর সিং, যিনি পরে ১৯৪৮ সালে বীর চক্রে ভূষিত হয়েছিলেন, তিনিও সেই সময়ে দলীপের সঙ্গে একই স্কোয়াড্রনে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এরই পাশাপাশি দলীপ সিং মাজিতিয়া ফিল্ড মার্শাল স্যাম মানেকশ-এর সঙ্গে ও কাজ করার সুযোগ পেয়েছিলেন।
  • Link to this news (হিন্দুস্তান টাইমস)