• নির্বাচনী আচরণবিধির গেরোয় আটকে সম্পত্তি করে প্রবীণদের ছাড়
    বর্তমান | ০১ মে ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধির গেরোয় আটকে গিয়েছে প্রবীণ নাগরিকদের সম্পত্তি করে ছাড় দেওয়ার বিশেষ সুবিধা। ফলে পুরসভা ছাড় দিতে চাইলেও বঞ্চিত হচ্ছেন শহরের প্রবীণরা। কলকাতা পুরসভা জানাচ্ছে, আইন থাকলেও নতুন করে কোনও উপভোক্তাকে ছাড় দেওয়া যাচ্ছে না। নির্বাচনী আচরণবিধি উঠলেই এই সুযোগ ফের মিলবে। শুধু তাই নয়, অন্যান্য নাগরিক আবেদনের ভিত্তিতে সম্পত্তি করের ক্ষেত্রে সুদ এবং পেনাল্টির উপর যে ছাড় পান, এখন তাও দিতে অপারগ পুর কর্তৃপক্ষ। স্বভাবতই আবেদনের পাহাড় জমছে কর সংগ্রহ বিভাগে। 

    পুরসভা সূত্রে খবর, ২০১৯ সালে আইন সংশোধন করে ঠিক হয়, বয়স্ক নাগরিকরা সম্পত্তি করের মূল প্রদেয় অর্থের উপর ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন। সেই সঙ্গে কর্মরত কিংবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা জওয়ানরাও ২৫ শতাংশ ছাড় পাবেন এক্ষেত্রে। এই ছাড় টানা তিন বছর দেওয়া হবে। তারপর আবার নতুন করে আবেদন জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট করদাতাকে। এর বাইরেও সুদের উপর ৫০ শতাংশ এবং পেনাল্টির উপর ৯৯ শতাংশ ছাড় পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সেক্ষেত্রে তাঁদের মেয়রের কাছে আবেদন জানাতে হবে। 

    অন্যান্য নাগরিকের ক্ষেত্রে সারা বছরই আবেদনের ভিত্তিতে সম্পত্তি করের সুদের ওপর ৫০ শতাংশ এবং পেনাল্টির উপর ৯৯ শতাংশ ছাড় দেওয়া হতো। সিদ্ধান্ত হয়েছিল, ১ এপ্রিল থেকে সেই বিপুল ছাড় উঠে যাবে। তার বদলে যে করদাতা যত বেশি দিন সম্পত্তি করের টাকা বকেয়া ফেলে রেখেছেন, সেই করদাতা তত কম ছাড় পাবেন বলে স্থির হয়। কিন্তু ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ায় এই নিয়ম কার্যকর করা যায়নি। পুরসভার সম্পত্তি কর সংগ্রহ বিভাগের কর্তাদের একাংশের প্রশ্ন, বয়স্ক বা সেনা জওয়ানদের ক্ষেত্রে বাড়তি ছাড় আইনসিদ্ধ। সেটা নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নয়। বেশ কয়েক বছর ধরেই এই নিয়ম কার্যকর রয়েছে। পাশাপাশি, অন্যান্য নাগরিকের ক্ষেত্রে ছাড়ের বিষয়টিও নতুন কোনও ‘পলিসি ডিসিশন’ নয়। সেক্ষেত্রে ভুরিভুরি আবেদনের কিছু অংশ অনুমোদন করাই যেত। কিন্তু শীর্ষ কর্তৃপক্ষ তা মানতে নারাজ। পুরসভার এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের স্পষ্ট গাইডলাইন রয়েছে, পুরনো স্কিমে পুরনো উপভোক্তাদের চালু থাকা সুযোগ-সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু প্রকল্প পুরনো হলেও নতুন করে তাতে কোনও উপভোক্তাকে যুক্ত করা যাবে না।’ ওই পুরকর্তার আরও সংযোজন, ‘ঠিক যেমন কন্যাশ্রী কিংবা স্বাস্থ্যসাথী মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত। কিন্তু সেখানেও এই ক’মাস নতুন উপভোক্তাকে তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে না। তবে এনিয়ে কোনও নাগরিকের অভিযোগ থাকলে তিনি সরাসরি নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে গিয়ে তা জানাতে পারেন। সেক্ষেত্রে কমিশন পুরসভাকে এই সংক্রান্ত নির্দেশ দিলে, তা মেনে চলা হবে।’ 
  • Link to this news (বর্তমান)