• তৃণমূলে মিশে গিয়েছেন রচনা, হুগলি বিজয়ের স্বপ্ন দেখছে কর্মী মহল
    বর্তমান | ০২ মে ২০২৪
  • অভিজিৎ চৌধুরী, চুঁচুড়া: রাজনীতিতে নবাগতা হলেও ঘাসফুলের ঘরে মানিয়ে গুছিয়ে নিয়েছেন রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় একমাসের প্রচার পর্বের পরে এমনই উপলব্ধি তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের। ফলে, তারকা প্রার্থীকে নিয়ে দলের দাপুটে নেতাদেরও বিশেষ ‘অস্বস্তি’ নেই। তাঁরা একান্ত আলোচনায় রচনাকে শংসাপত্রই দিচ্ছেন। হুগলি লোকসভার ফলাফল কী হবে, তা অন্য প্রশ্ন। তবে রচনা দলের সঙ্গে এবং দলের নেতারা তাঁর সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ায় স্বস্তিতে আছে ঘাসফুলের রাজ্য নেতৃত্বও। সাধারণত, রাজনীতির বাইরের মানুষকে প্রার্থী করলে অনেক ক্ষেত্রেই দলের নেতাদের ‘চাপা গোঁসা’ হয়। রচনার ক্ষেত্রে তা এখনও দেখা যায়নি। রাজনৈতিক মহল বলছে, ওই পারস্পারিক সমন্বয় ভোট রাজনীতিতে বড় ফ্যাক্টর।

    কিন্তু কোন মন্ত্রে এমন সমন্বয়ের সুর? তৃণমূলের অন্দরমহল সূত্রে জানা গিয়েছে, রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর নিজের পেশার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত এবং খ্যাত। কিন্তু তারকা হলেও দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি তারকাসুলভ ব্যবহার প্রথম থেকেই করেননি। উল্টে খুবই সহজসরলভাবে দলের সঙ্গে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন। তাঁর মধ্যে তারকাসুলভ ‘বায়নাক্কা’ এবং ‘ইগো’ও বিশেষ দেখা যায়নি। স্থানীয় নেতাদের নিয়ন্ত্রণ করার পরিবর্তে তিনি তাঁদের কথামতোই চলেছেন। অর্থাৎ কর্তৃত্ববাদী মানসিকতাও তার মধ্যে দেখা যায়নি। তাতে দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতার স্বর জোরাল হয়েছে।  দলের একটি অংশের মত, সমস্যা হতে পারে সেই আশঙ্কা রাজ্য নেতৃত্বের ছিল। সেই কারণেই দলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে হুগলিতে এসে সকল নেতাকর্মীদের নিয়ে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে তিনি স্পষ্টই বার্তা দিয়ে গিয়েছিলেন, ‘রচনা দিদির পছন্দের প্রার্থী’। কিন্তু দলেরই এক প্রভাবশালী নেতা বলেন, শীর্ষ নেতৃত্ব ওই রকমের বার্তা দিলেও অনেক ক্ষেত্রে সমঝোতার অভাব থাকে। রচনাদেবী নিজগুণে সেই অভাব পূরণ করে দিয়েছেন। তাই তাঁকে নিয়ে সকলেই খুশি। বিষয়টি স্পষ্ট করে বলে দিচ্ছেন হুগলি তৃণমূলের ‘দিদি’ তথা দলের জেলা চেয়ারম্যান অসীমা পাত্র। ধনেখালির বিধায়ক প্রাক্তন মন্ত্রী অসীমাদেবী প্রথম দিন থেকেই রচনার সঙ্গে ছায়ার মতো রয়েছেন। তিনি বলেন, উনি ভালো মানুষ। সবচেয়ে বড় কথা রাজনীতিতে সদ্য এলেও দলের মত মেনে নিয়ে কাজ করতে চান। সেটা খুব বড় গুণ। এনিয়ে রচনাও অকপট। তিনি বলেন, মমতাদি’র সঙ্গে যোগাযোগ পুরনো হলেও রাজনীতির পাঠশালায় আমি নতুন। তাই যাঁরা বহু নির্বাচন লড়ে এসেছেন বা জিতে এসেছেন, তাঁদের মত অগ্রাহ্য করার ধৃষ্টতা আমার নেই। সম্মান দিতে পারার শিক্ষাও আমার আছে। ফলে, আমে আর দুধ মিশে গিয়ে স্বাদু পানীয় তৈরি হয়েছে। ঘাসফুলের ঘরে আপাতত স্বস্তির হাওয়া। তা বাইরে ছড়িয়ে গিয়ে নতুন ইতিহাস ‘রচনা’ করে কী না, সেটাই এখন দেখার।
  • Link to this news (বর্তমান)