• হাইকোর্টের রায়ে দিশেহারা অশোকনগরের দুই শিক্ষিকা
    বর্তমান | ০২ মে ২০২৪
  • শ্যামলেন্দু ভৌমিক, বারাসত: সুখে সংসার চলছিল কয়েকবছর। কিন্তু হঠাৎ একটি রায় ঘোষণা আদালতের। তারপরেই বদলে গেল সবকিছু। কার্যত মাথার উপর ভেঙে পড়ল আকাশ। চারদিক আজ যেন অন্ধকার ওঁদের। আগামীতে কী হবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না অশোকনগরের দুই শিক্ষিকা। হাইকোর্টের রায় নিয়ে ইতিমধ্যে ২০১৬ সালে নিয়োগ পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্যানেল 'অবৈধ' বলে বাতিল করেছে। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। কিন্তু,পরে যদি আদালতের মাধ্যমে তাঁরা চাকরি ফিরে পান কীভাবে লজ্জা ঢেকে ফের পড়ুয়াদের সামনে যাবেন তা নিয়েও চিন্তা বাড়ছে তাঁদের। তবে, সম্মান বাঁচানো ও ঋণের টাকা মেটাতে লড়াই জারি থাকবে জানালেন দুই 'প্রাক্তনী'র।

    অশোকনগর শহরের বাসিন্দা স্বর্ণালী চক্রবর্তী ও শাওনি ভট্টাচার্য। বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা যে তাঁরা হওয়ার যোগ্য তার সব প্রমাণ আছে। তারপরেও এমন রায় শোনার পর থেকেই ভেঙে পড়েছেন দুই গৃহবধূ। চোখের জল থামাতে চাইলেও পারছে না কোনওভাবেই। ছোটবেলা থেকে পড়াশোনা করা ভালো ফলাফলের পরে শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্নকে স্বার্থক করতে কঠোর পরিশ্রম করে এসএসসি পরীক্ষা দেন। ২০১৬ সালে চাকরি পাওয়ায় কার্যত 'কাল' হল তাঁদের। এক রায়ে তাঁদের চাকরি চলে গেল। সুন্দর গোছানো জীবন কেমন যেন অগোছালো হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি বিচারব্যবস্থার উপর যে ভরসা ছিল সেটাও যেন ক্রমশ ফিকে হচ্ছে অশোকনগরে স্বর্নালি ও শাওনিদের। চোখে মুখে একরাশ হতাশা নিয়ে স্বর্ণালী বলেন, আদালতের রায়ে যোগ্য শিক্ষকদের সামাজিক অসম্মান করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। আগামী দিনে কীভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে দাঁড়াব বুজতে পারছি না। অন্যদিকে শাওনি বলেন, চাকরি পাওয়ার পর বাড়ি তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল। এখন কীভাবে সেই টাকা ও সংসার চালাব বুঝে উঠতে পারছেন না। পাড়া-প্রতিবেশী থেকে অনেকের অন্যভাবে তাকানো সহ্য করা যাচ্ছে না। বাড়ির বাইরে বেরানোর ক্ষেত্রেও এখন আত্মসম্মানে লাগছে। কিন্তু করার কিছু নেই। দুই পরিবারের সদস্যরাও চাকরি যাওয়ায় দিশাহীন। তাঁরা বলছেন, একটা রায় সব শেষ করে দিল আগামী প্রজন্মকে। আদালতের উচিৎ ছিল সঠিক তথ্য বের করে ব্যবস্থা নেওয়া।
  • Link to this news (বর্তমান)