• 'এতদিনের অবদান হঠাত্‍ শূন্য হয়ে যায় না,' কুণালের পাশে TMC মুখপাত্র শান্তনু
    Aajtak | ০৩ মে ২০২৪
  • বুধবার থেকেই কুণাল ঘোষকে নিয়ে বিতর্কে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। বুধবার সকালেই একই মঞ্চে হাজির হয়ে কলকাতা উত্তরের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের প্রশংসা করেছিলেন কুণাল ঘোষ৷ আর সেখান থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে থাকে কুণালের। তৃণমূলের মুখপাত্র, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অপসারণ করা হয় তাঁকে।  এবার দলের তারকা প্রচারকের তালিকা থেকেও বাদ দেওয়া হয়েছে কুণাল ঘোষের নাম। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই আবেগতাড়িত রাজ্যসভার প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ। আর এই আবহেই কুণালের পাশে দাঁড়াতে দেখা গেল রাজ্যসভায় তৃণমূলের আরেক প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেনকে। দলের প্রতি কুণালের অবদান ভুলে গেলে চলবে না, এমন মন্তব্য করতেই দেখা যায় এই তৃণমূল নেতাকে।

    শান্তনু সেন এদিন সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলেন, “নির্বাচনের সময় এমন কিছু কথা বলে আমাদের দলের প্রার্থীকে বিব্রত করে থাকেন তার জন্য দল নিশ্চিত করে পদক্ষেপ করেছে। আমার কিছু বলার নেই। আমার পাশাপাশি কোনও একটা মানুষের এক দুদিনের মন্তব্যের জন্য তাঁর অতীতের যে দলের প্রতি যে অবদান সেটা কিন্তু হঠাৎ শূন্য হয়ে যায় না।” শান্তনুর আরও সংযোজন, “বিগত কয়েক বছরে দল যখন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়েছে তখন শান্তনু সেন বা কুণাল ঘোষ, আমাদের মতো হাতেগোনা কয়েকজন আগু-পিছু না ভেবে দলের হয়ে বলে গিয়েছি, দলকে ডিফেন্ড করে গেছি। বিরোধীদের চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করেছি।” শান্তনু বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই অরাজনৈতিক মঞ্চে অংশ গ্রহণের কথা ও জন সংযোগের কথা বলেন। আর তা করতে গেলে অন্য দলের লোকেদের সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করতেই হয়। 

    শান্তনুর বক্তব্য, "অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি হলে শান্তনু সেন বা কুণাল ঘোষের মতো ব্যক্তিরা অগ্রপশ্চাৎ না ভেবে দলের পাশে দাঁড়িয়েছে। এটা ঠিক দল যাকে প্রার্থী করবে তাকে মেনে নিতে হয়। তেমনি কেউ হঠাৎ করে একদিন বা দুই দিন কোনও মন্তব্য করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার। কুণাল ঘোষ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে বসে ফিশফ্রাই খাচ্ছেন। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী অফিসের দ্বারোদঘাটনে অনেকে যেতে না পারলেও কুণাল ঘোষ ছিলেন। আবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইফতারে কুণাল ঘোষ ছিলেন। কুণাল ঘোষ উত্তর কলকাতার প্রার্থী সুদীপ বন্দোপাধ্যায়ের হয়েই ভোটে লড়বেন। তিনি নিজেই বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হলেন তাঁর নেতা-নেত্রী। তিনি তৃণমূলের সৈনিক।” প্রসঙ্গত বুধyeর কলকাতা উত্তরের বিজেপি প্রার্থী তাপস রায়ের সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা মিলেছিল কুণালের।  তৃণমূল নেতা বলেছিলেন, ‘প্রার্থী ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাপসদাকে ব্যক্তিগতভাবে আমি এক ইঞ্চিও পিছনে রাখতে পারব না।’ যা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক দানা বাঁধে। 

    প্রসঙ্গত কয়েকদিন আগেই ভোটে প্রার্থী না হয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে দুঃখ প্রকাশ করেন শান্তনু। সম্প্রতি অনুষ্ঠিত রাজ্যসভা নির্বাচনে শান্তনুবাবুকে প্রার্থী করেনি তৃণমূল। তার পর লোকসভার প্রার্থীতালিকাতেও নাম নেই তাঁর। দমদম কেন্দ্র থেকে সৌগত রায়ের বদলে শান্তনুবাবু প্রার্থী হতে পারেন বলে তৃণমূলের অন্দরে জল্পনা চলছিল। কিন্তু প্রবীণ অধ্যাপক সৌগত রায়ের ওপরেই ফের ভরসা রেখেছে তৃণমূল নেতৃত্ব । রাজ্যসভা ও পরে লোকসভা নির্বাচনে টিকিট না পেয়ে তিনি যে কষ্ট পেয়েছেন তা প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের বললেন শান্তনু। তাঁর বক্তব্য ছিস,  ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে ২০১৮ সালে রাজ্যসভায় পাঠিয়েছিলেন। আমি রাজ্যসভায় প্রাণ পাত করে দলের জন্য কাজ করেছি। দলের হয়ে কথা বলেছি। বিজেপির বিরুদ্ধে উগ্রভাবে আন্দোলন করেছি। দল যা বলেছে সেই নির্দেশ পালন করেছি। ভালোভাবে কাজ করার পর ভেবেছিলাম রাজ্যসভায় পুনর্মনোনয়ন হবে। কিন্তু কোনও কারণে দল সেটা করতে পারেনি। পরবর্তীকালে লোকসভাতেও স্বপ্ন দেখিনি তা নয়। যেহেতু সংসদীয় রাজনীতিটা খুব মন দিয়ে করেছি, তাই মনে করেছিলাম লোকসভায় হয়তো জায়গা হতে পারে। সেটা হয়নি। আমার নিশ্চই মনে কিছুটা খারাপ লেগেছে, কষ্ট হয়েছে। আশা করে আশাহত হলে তো কষ্ট হবেই। মনে কষ্ট থাকলেও সেই কষ্টকে চেপে রেখে দল যা দায়িত্ব দেবে সেই দায়িত্বই আমি পালন করব। মনে যতই কষ্ট থাক।’ এবার সেই শান্তনুই কুণালর হয়ে ব্যাট ধরলেন। 

     
  • Link to this news (Aajtak)