• Durga Puja 2022 : দুগ্গা সহায়! ফেসবুক পোস্ট খুঁজে দিল ভিড় ট্রেনে হারানো নতুন জামার ব্যাগ, কী ভাবে?
    এই সময় | ০২ অক্টোবর ২০২২
  • দুগ্গা সহায়! দেবীপক্ষে দেবী দুর্গাই সহায় হলেন রানাঘাটের বাসিন্দা দেবজিৎ মজুমদারের জীবনে। তাঁর সঙ্গে যা ঘটল, তা যেন হার মানাবে সিনেমার চিত্রনাট্যকেও। পরিবারের জন্য পুজোর নতুন জামাকাপড় কিনে ট্রেনে উঠেছিলেন। কিন্তু, তাড়াহুড়োতে মনের ভুলে সেই জামাকাপড়ের ব্যাগ ট্রেনেই ফেলে আসেন তিনি। এরপর দৌড়দৌড়ি করেও কোনও লাভ হয়নি। RPF, GRP, স্টেশন মাস্টার সকলেই তাঁকে ফিরিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত সহায় হল ফেসবুক। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার বিবরণ পোস্ট করায় সহৃদয় ব্যক্তি খুঁজে ফেরত এনে দেন দেবজিৎ মজুমদারের জামাকাপড়ের ব্যাগ। কী ভাবে ঘটল এই অবিশ্বাস্য ঘটনা?

    দিনটা ছিল ২৬ সেপ্টেম্বর। পুজোর উপলক্ষে পরিবারের জন্য নতুন জামাকাপড় কিনে রানাঘাট থেকে যাদবপুরে দিদির বাড়ি যাচ্ছিলেন দেবজিৎ মজুমদার। কল্যাণী থেকে রানাঘাট লোকালে উঠেছিলেন তিনি। শিয়ালদা স্টেশনে ট্রেন ঢুকতেই তাড়াহুড়ো করে নেমে পড়েন তিনি। দেবজিতের খেয়ালই নেই, জামাকাপড় ভর্তি ব্যাগটা তিনি ফেলে এসেছেন ট্রেনের কামরাতেই। শিয়ালদা স্টেশনের অন্য প্ল্যাটফর্ম থেকে এক ছুট্টে উঠে পড়েন যাদবপুরগামী ট্রেনে। তখন হঠাৎ টনক নড়ে দেবজিতের। 'আরে! আমার জামাকাপড়ের ব্যাগটা কোথায়?' পায়ের তলা থেকে যেন মাটির সরে যায় তাঁর। এই সময় ডিজিটালকে গোটা ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে দেবজিৎ বলেন, "আমি লাফ দিয়ে যাদবপুরের ট্রেনে ওঠার পর মনে হল, এত ছুটোছুটি করে উঠলাম কী ভাবে? হাতে ভারী ব্যাগটা থাকলে তো এটা পারতাম না। হঠাৎ খেয়াল হল, ব্যাগটা গেল কই?"

    দেবজিৎ মজুমদার বলেন, "ব্যাগ হারিয়েছি বুঝে তৎক্ষণাৎ ট্রেন থেকে নেমে আগের প্ল্যাটফর্মে ছুটে যাই। ততক্ষণে আগের ট্রেনটি চলে গিয়েছে। স্টেশনের খাবার বিক্রেতাদের থেকে জানতে পারি ওটা গেদে যাচ্ছে। RPF-এর সঙ্গে যোগাযোগ করি। ওরা বলে GRP-র কাছে যাও। তাদের কাছে গেলে বলে স্টেশন মাস্টারের কাছে যাও। তিনিও ফিরিয়ে দিলেন। বললেন, গেদে পর্যন্ত মোট ৫৯টি স্টেশন পরে। এতজন স্টেশন মাস্টারকে যোগাযোগ করা সম্ভব নয়। ব্যাগের আশা ছেড়ে দিতে বলেন তিনি।" এরপর কী করলেন দেবজিৎ?

    কার্যত অসহায় হয়ে দেবজিৎ ফেসবুকের দ্বারস্থ হন। সোশ্যাল মিডিয়ার একটি গ্রুপে পোস্ট করেন এই গোটা ঘটনার কথা। তারপরই চমৎকার। দেবজিৎ বলেন, "অবিশ্বাস্য! আমি ফেসবুকের একটি গ্রুপে বিষয়টি জানানোর পরই আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন সুজিত দাদা বলে জনৈক গ্রুপ সদস্য। তিনি জানান, ওই ট্রেনেই রয়েছেন। গোটা ট্রেন তন্নতন্ন করে খোঁজা শুরু করেন সুজিতদা। এরপর চাকদা স্টেশনের কাছে পৌঁছে আমায় আচমকাই ভিডিয়ো কল করেন। আমায় একটি ব্যাগ দেখান। আমি সঙ্গে সঙ্গে সেটি চিহ্নিত করি। সহৃদয় ওই ব্যক্তি আমার ব্যাগ খুঁজে দিয়ে আমার পরম উপকার করেছেন। পরদিন চাকদা স্টেশনে গিয়ে ব্যাগ তাঁর থেকে ফেরত নিয়ে আসি। বিয়ের পর প্রথম পুজো। পরিবারের জন্য অনেক টাকার জামাকাপড় কিনেছিলাম। ব্যাগটা ফেরত না পেলে অনেক ক্ষতি হয়ে যেন। দুর্গাপুজোর সময় সুজিতদা যেন ভগবানের মতো আমার জীবনে এলেন।"
  • Link to this news (এই সময়)