• Kolkata News: অনলাইনে বিল্ডিং প্ল্যানে সায় পেতে হেনস্থা, নালিশ মেয়রকে
    এই সময় | ০২ অক্টোবর ২০২২
  • তাপস প্রামাণিক

    কলকাতা শহরে বাড়ি নির্মাণের অনুমতি পেতে সাধারণ মানুষকে যাতে হয়রানির শিকার হতে না-হয়, সেই জন্য অনলাইনে বিল্ডিং প্ল্যানের অনুমোদন দিচ্ছে পুরসভা। সেই জন্য নতুন পরিকাঠামোও তৈরি করা হয়েছে, কলকাতা পুরসভার তরফে কেনা হয়েছে নতুন সফ্‌টওয়্যার। কিন্তু তার সুফল কত টুকু পাওয়া যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই।

    নির্মাণ সংস্থাগুলোর একাংশের কর্তারা অভিযোগ করছেন, কলকাতায় বাড়ি নির্মাণের জন্য অনলাইনে বিল্ডিং প্ল্যান বা বাড়ির নকশা মঞ্জুর করাতে গিয়ে কম-বেশি আগের মতোই হয়রানির মুখে পড়ছেন তাঁরা। কলকাতা পুর এলাকায় বাড়ি তৈরি করতে গেলে পুরসভার বিভিন্ন বিভাগ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি দফতরের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। সেই জন্যই কোনও বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করাতে অনেকটা সময় লেগে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ঘুষ না-দিলে কয়েকটি দফতরে দিনের পর দিন ফাইল ফেলে রাখা হয়। এই সমস্যার নিরসনেই অনলাইনে বিল্ডিং প্ল্যান পাশ করানোর সিদ্ধান্ত নেন কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ।

    কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম ঘোষণা করেছিলেন, অনলাইন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর বাড়ি বানানোর জন্য মানুষকে আর বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে দৌড়ঝাঁপ করতে হবে না। অনলাইনেই বিল্ডিং প্ল্যান জমা করা যাবে এবং কার্যত সিঙ্গল উইন্ডো সিস্টেমে সেখানেই সরকারের অন্যান্য দপ্তরের অনুমোদন চলে আসবে। তাতে বিল্ডিং প্ল্যান পাশের জন্য সময় অনেকটা কম লাগবে।

    কিন্তু অনলাইন ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও ছবিটা বাস্তবে তেমন বদলায়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, মেয়রের আশ্বাস সত্ত্বেও বেশ কয়েকটি সরকারি দপ্তরকে এখনও পর্যন্ত পুরসভার অনলাইন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা সম্ভব হয়নি। ফলে পুরোনো নিয়মেই তাদের কাছ থেকে আলাদা করে অনুমোদন নিয়ে আসতে হচ্ছে। তাতে হয়রানি আরও বেড়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই মেয়রের কাছে নালিশ ঠুকেছে এলবিএস (লাইসেন্সড বিল্ডিং সার্ভেয়ার্স) অ্যাসোসিয়েশন। সংস্থার পক্ষ থেকে পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের কর্তাদেরও নজরে আনা হয়েছে বিষয়টি।

    এলবিএস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অনিমেষ গুড়িয়া বলেন, ''আমাদের বলা হয়েছিল, পুরসভার সব বিভাগ এবং সরকারের অন্যান্য দপ্তরের অনুমোদন অনলাইনেই হবে। কিন্তু এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার মতো কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা এবং রাজ্য সরকারের ডিএলআরও, ল্যান্ড সিলিং, ঠিকা টেন্যান্সি দপ্তর এখনও ওই অনলাইন ব্যবস্থার আওতায় আসেনি। পুরসভার অন্য কয়েকটি বিভাগেও অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছে।'' অনিমেষ বলেন, ''বিষয়টি আমরা মেয়রকেও জানিয়েছি।''

    কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক শীর্ষকর্তার বক্তব্য, বিল্ডিং, নিকাশি, সার্ভেয়ার, পিএমইউ-সহ কলকাতা পুরসভার যতগুলো বিভাগ আছে, সেগুলোকে ইতিমধ্যেই ওই অনলাইন ব্যবস্থার অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, ১৫ দিনের বেশি কেউ ফাইল ফেলে রাখতে পারে না। কেএমডিএ, পরিবেশ দপ্তর এবং দমকলের ছাড়পত্রও অনলাইনেই পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু এয়ারপোর্ট অথরিটি অফ ইন্ডিয়া এবং রাজ্যের ডিএলআরও, ল্যান্ড সিলিং, ঠিকা টেন্যান্সির ক্ষেত্রে আলাদা করে অনুমোদন নিয়ে আসতে হচ্ছে।

    কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ''কিছু দফতরকে এখনও অনলাইনের মধ্যে আনা যায়নি, এটা সত্যি। কিছু আইনি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সমস্যা কী ভাবে মেটানো যায়, তার চেষ্টা চলছে। যাতে বাড়ি বানাতে গিয়ে কোনও অসুবিধেয় নাগরিকদের না-পড়তে হয়, সেটা আমরা অবশ্যই দেখব যে কোনও মূল্যে।''
  • Link to this news (এই সময়)