• চড়ক-নীল পুজোয় বাড়বে চাহিদা, বিপদের ঝুঁকি নিয়েই আকন্দ ফুলের চাষ গাইঘাটায়
    এই সময় | ১২ এপ্রিল ২০২৩
  • West Bengal News : আকন্দ ফুল ছাড়া শিব পুজো অসম্পূর্ণ। সামনেই নীল ষষ্ঠী। ফলত, বাজারে চাহিদা বাড়বে আকন্দ ফুলের মালার। অথচ, আকন্দ ফুলের চাষে রয়েছে চর্মরোগ হওয়ার ঝুঁকি। ফুলের বিষাক্ত আঠা গায়ে লাগলেই বিপদ! বিপদ মাথায় নিয়েই বাড়তি কিছু লাভের আশায় ফুল চাষে ঝুঁকছেন গাইঘাটার চাষিরা।

    আর কয়েকদিন পরেই চড়ক ও নীলপূজো। আর এই পুজোকে কেন্দ্র করেই আশায় বুক বাঁধছেন জেলার আকন্দ চাষিরা। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার গাইঘাটা ব্লকের পাঁচপোতা এলাকায় শতাধিক কৃষক তাই এই সময়ে আকন্দ ফুলের চাষ করেন। সারা বছর আকন্দ ফুল কম বেশি বেচাকেনা হলেও চৈত্র ও বৈশাখ মাসে ব্যাপক চাহিদা থাকে।

    এক সময়ে আকন্দ ফুল রাস্তার ধারে বা রেললাইনের ধারে দেখা যেত কিন্তু বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এই ফুলের। যদিও ফুল চাষে কিন্তু রয়েছে জীবনের ঝুঁকিও। একেই প্রখর গরম, তার মধ্যে নিজেদেরকে ঢেকে এই ফুল তুলে থাকেন মহিলা চাষিরা। কারণ এই ফুলের বিষাক্ত আঠা লাগলে ত্বকে ঘা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি চোখে গেলে দৃষ্টিশক্তি হারানোরও আশঙ্কা থাকে।

    তাই এই ফুলতোলার কাজে নিযুক্ত মহিলারা হাতে গ্লাভস এবং মুখে কাপড় জড়িয়ে এমনকি চোখে রোদ চশমা পরে তবে তোলেন এই আকন্দ ফুল। যাঁরা ফুল তোলেন, তাঁরা কুড়ি টাকা প্রতি বালতি হিসাবে পান। সকাল ছ'টা থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত পাঁচ থেকে সাত বালতি ফুল তোলেন প্রত্যেকে। দৈনিক দেড়শ থেকে ২০০ টাকা রোজগার হয়। সারা বছর এই চাষ হলেও এই সময়ে বাড়ে কাজের চাপ।

    , ফলে কাজেরও গতি আসে। তবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই চাষ করলেও তেমনভাবে আর্থিক উপার্জন হয় না বলেই জানালেন চাষিরা। তবু গুরুত্বহীন ভাবে পড়ে থাকা রাস্তার ধারের এই ফুলই এখন বহু মানুষের অন্য সংস্থান জোগাচ্ছে।

    ফুল সংগ্রহকারী এক মহিলা বলেন, "দশ বছর ধরে এই কাজ করছি। মুখে চোখে ঢেকে, হাতে প্লাস্টিক বেধে এই কাজ করতে হয়। সকাল সাতটা নাগাদ কাজে আসি, বারোটার মধ্যে কাজ হয়ে যায়। বালতি পিছু ২০ টাকা করে আয় হয়।" ফুল চাষি অমর ঘোষ বলেন, "এই চড়ক পুজোর দিকে তাকিয়ে থাকি, যাতে দুটো পয়সা হয়। এ বছর বাজার তেমন ভালো না। চড়ক, নীল পুজোয় চাহিদা বাড়লে কিছুটা লাভের মুখ দেখব।"
  • Link to this news (এই সময়)