• Trending News: লাঠি ছাড়াই হাঁটেন, চশমা ছাড়াই দেখেন! সেঞ্চুরি পার 'তরুণী' ঠাকুমার জন্মদিন পালন নাতি নাতনিদের
    এই সময় | ১২ এপ্রিল ২০২৩
  • West Bengal Local News: 'সত্যিই কে বলে ঠাকুমা তোমার বয়স পেরিয়েছে একশো...'। জনপ্রিয় গানের কথায় বয়সের নম্বরটা একটু বদলে নিলেই তা একদম মাইতি ঠাকুমার জন্যই তৈরি। বয়সের অঙ্ক পায়ে পায়ে শতরানের কোঠা পেরিয়ে গিয়েছে, তবু অন্নপূর্ণা মাইতিকে দেখে তা বোঝার উপায় নয়। সময়ের আঁকিবুকি তাঁর শরীরে বড় ধীরে ফেলেছে ছাপ। তাই একশো পেরিয়ে ফিট অ্যান্ড ফাইন ঠাকুমা লাঠি ছাড়া হেঁটেই কম্পিটিশন দিতে পারেন তরুণ নাতি-নাতনিকে।

    বয়স একশো পেরিয়ে ১০১ ছুঁতেই উৎসবে মেতে উঠলেন অন্নপূর্ণা মাইতির আদরের নাতি নাতনিরা। ১০১ বছর বয়সে কেক কেটে ঠাকুমার জন্মদিন পালন করলো নাতি নাতনীরা। সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে মনের জোরকে সঙ্গে করে এখন তরতাজা ১০১ বছর বয়সী অন্নপূর্ণা মাইতি। চোখে মুখে বার্ধক্যর ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু, তাতে কি ! ১০১ বছরেও তাকে কেউ বৃদ্ধা বললে, তার শরীরের ভাষা বুঝিয়ে দেন তিনি ঠিক আছেন এবং সুস্থ আছেন। কাপড় কাচা, বাসন মাজা, রান্না করা- এবয়সেও সমস্ত সামলান দক্ষতার সঙ্গে। তার মনের জোর আর ইচ্ছা শক্তি যৌবনকেও ফুটন্ত রক্তকেও যেন হার মানায়।

    এ কোনও রূপকথার গল্প নয়, এ গল্প জীবন যুদ্ধে হার না মানার গল্প। এ গল্প দিঘার অদূরে রামনগর থানার গোবরা গ্রামের। গোবরা গ্রামের বাসিন্দা অন্নপূর্ণা মাইতি এ বার ১০১ বছরে পা দিলেন। তাই বাড়িতে বেলুন সাজিয়ে কেক কেটে তাঁর জন্মদিন পালন করলেন নাতি নাতনীরা। বয়স হয়ে গেলেও তিনি পরিবারের একজন। সেই বার্তা দিতেই এই আয়োজন। তা ছাড়া ঠাকুমাকে আনন্দ দিতেও চেয়েছিলেন তারা। চারিদিক নানা রঙের বেলুনে সাজানো। আত্মীয়ে স্বজনে ভরা বাড়ি। টেবিলের ওপর রাখা কেক। তাতে লেখা ১০১‌। প্রিয়জনদের উচ্ছ্বাসে ভাসতে ভাসতে কেক কাটলেন অন্নপূর্ণা দেবী।

    অন্নপূর্ণা দেবীর ছেলে অরুন মাইতি বলেন, “এখন দেখছি অনেকে বৃদ্ধ মা বাবাকে বাড়ি থেকে বের করে দিচ্ছে। যা একেবারেই উচিত নয়। সমাজে তাঁদের মূল্যই বেশি। সমাজ যাতে এই বার্তা বোঝে, তার জন্য এই আয়োজন করেছি।”

    বৃদ্ধার পাঁচ মেয়ে তিন ছেলে। ভরা সংসারের এখনও মাথা অন্নপূর্ণা দেবী। লাঠি ছাড়াই হাঁটতে পারেন তিনি। চোখেও পরিষ্কার দেখতে পান। শুধু তাই নয়, বাড়িতে কাপড় কাচা, বাসন মাজা, রান্না করা, জল তোলা সবই একা হাতে করতে পারেন তিনি। তবে অন্নপূর্ণা দেবী কোনওদিনই মাংস মুখে তোলেননি। স্রেফ নিরামিশ খেয়েই কাটিয়ে দিয়েছেন এতগুলো বছর। তবে তাঁর ১০১ তম জন্মদিনে আয়োজনের কোনও ত্রুটি রাখেননি তাঁর ছেলেমেয়ে নাতি নাতনিরা।

    জন্মদিনের কথা জিজ্ঞাসা করতেই জীবনের রঙে মজে থাকা তরুণী ঠাম্মা বলে উঠলেন, ''খুব ভালো লাগছে নাতি-নাতনিদের জন্য এত সুন্দর একটা দিন দেখলাম।''
  • Link to this news (এই সময়)