• Explained: আবগারি নীতি মামলায় কেন কেজরিওয়ালকে তলব করল সিবিআই?
    ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস | ১৭ এপ্রিল ২০২৩
  • দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস শুক্রবারই (১৪ এপ্রিল) জানিয়েছিল, দিল্লির আবগারি নীতি মামলায় ১৬ এপ্রিল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই) তলব করেছে। একই মামলায় দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে গ্রেফতার করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তার ঠিক একমাসেরও বেশি সময় পরে আপ প্রধানের কাছে সিবিআই সমন পাঠায়। সিসোদিয়া বর্তমানে তিহার জেলে আছেন।

    কেজরিওয়াল যা জানিয়েছেন

    এই সমনের প্রতিক্রিয়ায় কেজরিওয়ালও আগেই জানিয়েছেন, তিনি নির্দেশমতো সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দেবেন। একইসঙ্গে অবশ্য তিনি অভিযোগ করেছেন যে আম আদমি পার্টির বিরুদ্ধে এক ষড়যন্ত্র চলছে। এই অভিযোগ করার পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে, ‘মাথা থেকে পা পর্যন্ত দুর্নীতিতে নিমজ্জিত’ বলেও অভিযোগ করেছেন কেজরিওয়াল।

    আবগারি নীতি কেলেঙ্কারি কী?

    আবগারি নীতি কেলেঙ্কারি হল, দিল্লি সরকারের এমন এক আবগারি নীতি, যাতে আপের শীর্ষ নেতৃত্বের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। ২০২০ সালে দিল্লি সরকার একটি নতুন আবগারি নীতির প্রস্তাব করেছিল। যা ২০২১ সালের নভেম্বরে কার্যকর হয়েছে। এই আবগারি নীতিতে মদ বিক্রির ব্যবসা থেকে সরকার কার্যত সরে গিয়েছিল। দিল্লি শহরকে ৩২টি জোনে বিভক্ত করা হয়েছিল। প্রত্যেক জোনে ২৭টি ব্যক্তিগত মদের দোকান চালু করা হয়েছিল। আবগারি নীতির লক্ষ্য ছিল মদের দোকানের সুষম বণ্টন নিশ্চিত করা, কালোবাজারি বন্ধ করা, মদ বিক্রি থেকে রাজস্ব বৃদ্ধি করা, ডিসকাউন্ট, হোম ডেলিভারি এবং অন্যান্য অফারের ব্যবস্থার মাধ্যমে ভোক্তাদের আরও বেশি সুবিধা দেওয়া।

    মুখ্যসচিবের ভূমিকা

    তবে আবগারি নীতি বাস্তবায়নের আগেই তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে সেই নীতি বাতিল করতে বাধ্য করানো হয়। সেই প্রস্তাবে ২০২২ সালের জুলাইয়ে, দিল্লির মুখ্যসচিব নরেশ কুমার উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসোদিয়ার কাছে একটি রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন। যাতে নতুন নীতিতে তিনি ‘প্রক্রিয়াগত ত্রুটি’ এবং অনিয়মগুলো চিহ্নিত করেন। এই রিপোর্টের একটি প্রতিলিপি মুখ্যসচিব মুখ্যমন্ত্রী, লেফটেন্যান্ট গভর্নর এবং দিল্লি পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ শাখা (ইওডব্লিউ)-কেও পাঠান।

    মুখ্যসচিবের বক্তব্য

    মুখ্যসচিবের রিপোর্ট অনুসারে, সিসোদিয়া লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অনুমোদন ছাড়াই আবগারি নীতির পরিবর্তন করেছেন বলে অভিযোগ। উদাহরণস্বরূপ, ‘আবগারি বিভাগ, সিসোদিয়ার সরাসরি নির্দেশে, কোভিড মহামারীর অজুহাতে, টেন্ডারকৃত লাইসেন্স ফিতে মদের কার্টেলকে এককভাবে ১৪৪.৩৬ কোটি টাকা মকুবের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।’ এমনটাই বলা হয়েছে মুখ্যসচিবের রিপোর্টে। তাতে আরও অভিযোগ করা হয়েছে যে সিসোদিয়া বিদেশি মদের মূল্যের হার সংশোধন করে এবং প্রতিটি বিয়ারের ক্ষেত্রে ৫০ টাকা আমদানি পাস ফি শুল্ক অপসারণ করে মদের লাইসেন্সধারীদের অযাচিত সুবিধা করে দিয়েছিলেন। যা খুচরো বিক্রেতাদের জন্য বিদেশি মদের বেচাকেনা সস্তা করে দেয়। আর তাতে রাষ্ট্রীয় কোষাগারের রাজস্বে ক্ষতি হয়।

    কেন কেজরিওয়ালকে তলব

    রিপোর্টে এই সব অভিযোগ, দিল্লি সরকারের আবগারি নীতিকে অর্থনৈতিক শাখার তদন্তের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। এই রিপোর্টের সঙ্গে ২০২২ সালের ১১-১২ জুলাই রাত-সহ ১৫ দিনের বেশি সময় ধরে চলা আবগারি বিভাগের মিটিংগুলোর ডিজিটাল ভিডিও রেকর্ডিং (ডিভিআরস) জুড়ে দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে ১১-১২ জুলাইয়ের মিটিং চলেছিল সকাল ৫টা পর্যন্ত। সংগৃহীত এই ডিভিআরগুলো এখন দিল্লি সরকারের আবগারি নীতি ইস্যুতে সিসোদিয়া এবং অন্য আপ নেতাদের বিরুদ্ধে অন্যায়ের প্রমাণ হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
  • Link to this news (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)