• Murshidabad: মুর্শিদাবাদে খুন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী
    আজকাল | ১৯ এপ্রিল ২০২৩
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর বুধবার সকালে উদ্ধার হল মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থানার কান্তনগর গ্রামের এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর দেহ।

    মৃত ওই ছাত্রের নাম দীপঙ্কর মণ্ডল (১৭)। সাগরদিঘির কান্তনগর উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ওই যুবক এই বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। 

    গত রবিবার দীপঙ্কর তার বাবা অশোক মণ্ডলের কেনা নতুন টোটো নিয়ে রঘুনাথগঞ্জে ভাড়া খাটতে যায়। কিন্তু সন্ধেবেলা থেকে দীপঙ্করের পরিবার আর তার খোঁজ পায়নি এবং তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ হয়ে যায়। 

    গত ১৭ তারিখ দীপঙ্করের পরিবার সাগরদিঘি থানাতে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করে। তার ভিত্তিতে সাগরদিঘি থানার পুলিশ রঘুনাথগঞ্জ থানার নতুনগঞ্জ গ্রামের কয়েকজন যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই জানা যায় নতুন ওই টোটো চুরি করে বিক্রি করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে খুন করা হয়েছে দীপঙ্করকে। বুধবার ভোরের আলো ফুটতেই আলেরউপর গ্রামের কাছে একটি নির্জন জায়গা থেকে দীপঙ্করের ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করা হয়। 

    এই খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাগরদিঘি থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই ঝুলন ঘোষ এবং রমজান শেখ নামে নতুনগঞ্জ গ্রামে দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। খুনের সাথে যুক্ত আরও এক যুবক বর্তমানে পলাতক রয়েছে। 

    পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঝুলন জুয়া খেলার জন্য রমজান এবং অপর এক ব্যক্তির কাছ থেকে প্রচুর টাকা ধার করেছিল। সেই টাকা শোধ করার জন্য সম্প্রতি তার উপর চাপ আসছিল। ঝুলন, রমজান এবং পলাতক ওই ব্যক্তি পরিকল্পনা করে, দীপঙ্করের বাবার নতুন কেনা টোটো চুরি করে বিক্রি করে দিয়ে ঝুলন ধারের টাকা শোধ করবে। 

    সেই পরিকল্পনা মত -গত ১৬ তারিখ রঘুনাথগঞ্জের একটি গ্রামের মাঠ থেকে কুমড়ো তুলে বাজারে গিয়ে বিক্রি করে দিতে হবে এই কথা বলে দীপঙ্করকে ফোন করে ঝুলন রঘুনাথগঞ্জের আলেরউপর-চামারপাড়া কাছে একটি জায়গাতে ডাকে। 

    এরপর মাঠ থেকে কুমড়ো তুলতে হবে বলে দীপঙ্করকে রাস্তার ধারে টোটো রাখতে বলে প্রায় দেড় কিলোমিটার ভেতরে গ্রামের একটি নির্জন প্রান্তে নিয়ে যায়। সেখানে ঝুলন, রমজান এবং অপর এক ব্যক্তি দীপঙ্করকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে। 

    পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দীপঙ্করকে খুন করার পরই ঝুলন ওই টোটো এবং দীপঙ্করের মোবাইল ফোনটি দু-এক জায়গায় বিক্রি করার চেষ্টা করে। কিন্তু টোটো কেনার আগে ক্রেতারা আসল কাগজপত্র দেখতে চাওয়াতে ঝুলন বা রমজানে কেউই টোটো বা মোবাইল ফোনটি বিক্রি করতে পারেনি। 

    ইতিমধ্যে দীপঙ্করের পরিবার পুলিশের দ্বারস্থ হওয়াতে ঝুলন টোটোটি নিস্তা গ্রামের কাছে এক ব্যক্তির বাড়িতে লুকিয়ে রাখে। 

    জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, 'দীপঙ্করের মোবাইল ফোনের কল রেকর্ড ঘেঁটে আমরা জানতে পারি দীপঙ্কর যেদিন নিখোঁজ হয়ে যায়, সেদিন ঝুলন তাকে একাধিকবার ফোন করেছিল। এরপর ঝুলনকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করতেই জানা যায় নতুন টোটোটি চুরি করে বিক্রি করে দেওয়ার উদ্দেশ্যে দীপঙ্করকে খুন করেছে তারা।' 

    বুধবার ধৃত ব্যক্তিদের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করে জঙ্গিপুর আদালতে পেশ করছে সাগরদিঘি থানার পুলিশ। 
  • Link to this news (আজকাল)