জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: পঞ্চায়েত ভোটে দল প্রার্থী করলে অনেকেই হয়তো ভোট দিয়ে দেবেন কিন্তু গ্রামের মানুষদের প্রার্থী বাছাইয়ের সুযোগ দিচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে কোচবিহার থেকে পাথরপ্রতিম পর্যন্ত জনসংযোগ যাত্রায় নামছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই এলাকার মানুষের সঙ্গে জনসংযোগ, তাদের অভাব অভিযোগ শোনার পাশাপাশি তাদের কাছ থেকে পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী বেছে নেবেন অভিষেক। এটাই হল তৃণমূলে নবজোয়ার।
বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে নাম না করে বিজেপিকে নিশানা করেন অভিষেক। বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে ভোট, ছাপান্ন ইঞ্চির ছাতির পক্ষে ভোট, এসব করবেন না। এলাকার স্বার্থ, পরিবারের স্বার্থ, মানুষের জন্য, আপনার এলাকা, রাস্তা, জলের দাবিতে ভোট দিন। সেইসব জিনিস মাথা রেখে ভোট দিন। যাকে চাইবেন তাকেই তৃণমূল কংগ্রেস জিতিয়ে এনে পঞ্চায়েত বসাবে। এটা হল তৃণমূল নবজোয়ার। বাংলার মানুষের স্বার্থে আগামী ২ মাস আমরা রাস্তায় পড়ে থাকব। এটা আগে কেউ করেনি। বাংলার মানুষের কাছে আমাদের আবেদন আপনাদের আশীর্বাদ যেন আমরা পাই। আমরা যা বলেছি সেটাই করার চেষ্টা করেছি। আমরা কথা দিয়ে কথা রাখার দল। তৃণমূল কংগ্রসে যদি প্রার্থী দেয় তাহলে হয়তো আপনারা তাকে জেতাবেন। কিন্তু এবার প্রার্থী আপনারা নির্বাচিত করবেন। তবে তা হবে আপনাদের পঞ্চায়েত। ভোট যখন দিতে যান তখন ৫-৭টা বেছে নেওয়ার সুযোগ থাকে। এবার প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রেও আপনাদের সুযোগ থাকবে। সবাইকে বলব তৃণমূলে জোয়ারে অংশ নিন। গ্রাম বাংলার মানুষের মতামত নেওয়া হবে। এই সুযোগটা আপনাকে দিচ্ছে তৃণমূল। দলের তরফে যে সুপারিশ এসেছে তার উপরে গুরুত্ব পাবে সাধারণ মানুষের মতামত।
কোচবিহার থেকে পাথরপ্রতিমা। টানা ২ মাসের জনসংযোগ যাত্রা শুরু করছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। লক্ষ্য হল, পঞ্চায়েত ভোটের আগে মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন। তবে এই কর্মসূতি সম্পর্কেই কথা বলছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আগামী ২৫ তারিখ থেকে বাংলার কোচবিহার থেকে কর্মসূচি শুরু করে তা শেষ হবে পাথরপ্রতিমায়। ২৪ তারিখ দিনহাটা যাব। ২ মাস কলকাতা ফিরব না। কিছু যদি বদল আনতে হয় তাহলে কষ্ট করতে হবে। প্রতিদিন দশটায় বেরিয়ে ১টা থেকে জনসভা করা হবে। ৬ টার সময় ক্যম্পে ফিরব। সেই জেলার প্রেসিডেন্ট থেকে শুরু করে বুথ প্রেসিডেন্টকে ডাকা হবে। গোপন ব্যালটে ভোট নেওয়া হবে। কাকে প্রার্থী চান সেটা তারা ঠিক করবেন। আপনাকে পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের উপরে আর নির্ভর করতে হবে না। আমাদের লক্ষ্য ৬০ দিন মাঠেঘাটে থাকব। মানুষ যাদের সমর্থন করবে তাদেরকেই আমরা প্রার্থী করব।আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে জনসংযোগ কর্মসূচি শুরু করছে তৃণমূল কংগ্রসে। এনিয়ে বিস্তারিত জানানোর ফাঁকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি শুভেন্দু অধিকারীকেও একহাত নেন অভিষেক। তিনি বলেন, শুনুন উনি প্রত্যেকবার একটা করে ট্যুইট করে বলেন বোমা ফাটাব। ওই কথা শুনে আপনারা একদিন ধরে নাচেন। দেখেন কিছু নেই। ফাঁপা বেলুন। উনি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন আড়াই বছর হল। ওইসব দিন কমপক্ষে ১ হাজার প্রেসকন্ফারেন্স করেছেন, সভা করেছেন। একটা সভা দেখান যেখানে উনি আমাকে আক্রমণ করেননি। এক হাজার অভিযোগ করেছেন। একটা অভিযোগ প্রমাণ করে দেখান। আপনি বলছেন এই মুখ্যমন্ত্রীকে প্রাক্তন করে ছাড়ব। আরে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন অভিযোগ প্রমাণ হলে তিনি ইস্তফা দেবেন। আপনি তাহলে প্রমাণ করুন। আপনি কাল বললেন, কাল আমি ফাঁস করব। আজ বলছেন, আমি চাইছি হাইকোর্টে মামলা হোক। আরে হাইকোর্টে তো মামলা হবেই। আপনাকে ল্যাজে গোবরে করব। কোনও বেঞ্চ আপনাকে বাঁচাবে না। আপনি ভাষার মাধুর্য নিয়ে কথা বলছেন। আপনি মুখ্যমন্ত্রীকে ফুফু, খালা বলেন। আপনার কাছে ভাষা শিখতে হবে! ব্যক্তিগত স্তরে এমনটাই নেমে গিয়েছেন। উনি আমার নাম নিয়ে বলুন ওকে কোর্টে নিয়ে গিয়ে ল্যাজেগোবরে করব। আমার বিরুদ্ধে উনি ভাববাচ্যে কথা বলেন। উনি ট্যুইটার নেতা।