• মোখার আতঙ্কে ধান কেটে বিপাকে চাষিরা অপুষ্ট শস্য কিনতে নারাজ আড়তদাররা
    বর্তমান | ১৩ মে ২০২৩
  • সংবাদদাতা, বহরমপুর: মোখার আতঙ্কে তাড়াহুড়ো করে বোরো ধান কেটে চরম বিপাকে পড়েছেন মুর্শিদাবাদের চাষিরা। ধানের গুণমান কম হওয়ায় আড়তে বিক্রি হচ্ছে না সেই ধান। পাশাপাশি কুইন্টাল প্রতি ধানের দাম নেমে এসেছে তলানিতে। হারভেস্টিং মেশিনে কাটা ধানের চাহিদা আরও কম। চাহিদা কম আর দাম এই দুই জোড়া গেরোয় চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে। চাষিদের দাবি, এবার ফলন ভালো হয়েছে ঠিকই। কিন্তু যে হারে খরচ হয়েছে, তাতে ধানের দাম না উঠলে সেভাবে লাভের মুখ দেখা সম্ভব হবে না। 

    কৃষিদপ্তর সূত্রে খবর, ভূগর্ভস্থ জলস্তর নীচের দিকে নামায় জলের জোগানের অভাবে এবার প্রায় ২০ শতাংশ কম জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। শুরু থেকেই রোগ পোকার আক্রমণ কম থাকায় চাষিরা অনেকটা নিশ্চিন্ত ছিল। মাঝে একবার শিলাবৃষ্টি হলেও ধানের সেভাবে ক্ষতি করতে পারেনি। ফলে এবার মোটা লাভের আশায় ছিলেন চাষিরা। কিন্তু ধান ওঠার মুখে মোখা আতঙ্কে চাষিদের মুখ শুকাতে শুরু করে। কৃষিদপ্তর সূত্রে চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল ৬০-৭০ শতাংশ ধান পাকলেই ঘরে তুলতে। চাষিরা আরও তাড়াহুড়ো করে ঘরে ধান তুলতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। যার জেরে বহু চাষি কার্যত অপুষ্ট ধান ঘরে তুলে ফেলেছেন। সেই ধান কিনতে চাইছেন না আড়তদাররা।  আড়তদার পীযূষ ঘোষ বলেন, প্রায় কুড়ি শতাংশ ধান কাঁচা। ওই ধানের চাল কালো হয়ে যাবে। ধান রাইস মিল নিতে চাইছে না। মাঠ থেকে আনা ঝাড়ানো ধান এখন রোদে শুকোচ্ছেন চাষিরা। অন্যদিকে হারভেস্টিং মেশিনে ঝাড়ানো ধানের থেকেও কার্যত মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন আড়তদার। ধান চাষি জীবন পাল বলেন, মোখার ভয়ে খড়ের আশা ছেড়ে হারভেস্টিং মেশিনে ধান ঝাড়িয়েছি। কিন্তু সেই ধান বিক্রি হচ্ছে না। ধান বিক্রি না হওয়ায় খরচের টাকাও কাউকে দিতে পারছি না। ধানের দাম নিয়েও চরম অস্বস্তিতে রয়েছেন বোরো চাষিরা। খোলা বাজারে চালের দাম কমেনি। কিন্তু মাত্র দু’মাসে ধানের দাম কুইন্টাল প্রতি প্রায় পাঁচশো টাকা নীচে নেমেছে। ধান চাষি নিরঞ্জন ঘোষ বলেন, দু’মাস আগে সহায়ক মূল্যে কুইন্টাল প্রতি দু’হাজার টাকার উপরে ধান বিক্রি করেছি মাণ্ডিতে। 
  • Link to this news (বর্তমান)