• পুজোর আগেই পর্যটকদের জন্য সুখবর দীঘায় এবার সমুদ্র অভিযানে প্রমোদতরী
    বর্তমান | ১৫ মে ২০২৩
  • সৌমিত্র দাস, কাঁথি: এবার গোয়ার মতো দীঘার সমুদ্রেও নামতে চলেছে সুসজ্জিত প্রমোদতরী। পুজোর আগে পর্যটকদের কাছে যা একটি নতুন আকর্ষণ হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। ‘এমভি নিবেদিতা’ নামে এই প্রমোদতরীটি হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থা তুলে দিয়েছে দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার হাতে। এতদিন পর্যটকরা সৈকত থেকেই সমুদ্রের রূপ উপভোগ করেছেন। এবার প্রমোদতরীতে চেপে সমুদ্রযাত্রার আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন তাঁরা। সমুদ্রের তীর বরাবর চলেছে দীঘা থেকে শৌলা পর্যন্ত দীর্ঘ ২৯ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভ। মাঝখানে রয়েছে ঝাউবন। সব মিলিয়ে এক অপূর্ব এবং মনোরম পরিবেশের মধ্য দিয়ে ভেসে চলবেন পর্যটকরা। ইতিপূর্বে কলকাতায় গঙ্গাবক্ষে প্রমোদতরী নামতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে সমুদ্রবক্ষে প্রমোদতরী এই প্রথম। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী পুজোর মরশুমে সমুদ্রবক্ষে প্রমোদতরীতে ভ্রমণের স্বাদ উপভোগের সুযোগ পাবেন পর্যটকরা। এই পরিকল্পনা রূপায়ণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে।  

    প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৯ সালে রাজ্য ভূতল পরিবহণ নিগমের তরফ থেকে ‘এমভি নিবেদিতা’ নামে ওই ভেসেলটি হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল, সেই ভেসেল নদীর মোহনায় ঘুরবে। ভেসেল অর্থাৎ প্রমোদতরীতে পর্যটকদের মনোরঞ্জন ও বিনোদনের ব্যবস্থা থাকবে। তা থেকে আয়ও হবে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি সহ অন্যান্য কারণে সেই উদ্যোগ শুরু হতে দেরি হয়। ফলে জলযানটি দীর্ঘদিন ধরে পড়েছিল। তার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বছরে লক্ষাধিক টাকা খরচ হচ্ছিল হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থার। এই পরিস্থিতিতে হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থাকে ভেসেলটি দিয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেয় দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থা। সেই প্রস্তাব অনুমোদনের পর ভেসেলটি হস্তান্তর করা হয়েছে।

    জানা গিয়েছে, ওই জলযানটি দীঘার অদূরে শঙ্করপুরের ন্যায়কালী মন্দির সংলগ্ন সমুদ্র থেকে ছাড়বে। দীঘা, শঙ্করপুর, মন্দারমণির পাশাপাশি খাঁড়ি এলাকাগুলিতেও ভ্রমণ করবে জলযানটি। অত্যাধুনিক সুবিধাযুক্ত এই জলযানে  রেস্তরাঁর পাশাপাশি থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা। আবার সন্ধ্যার সময় আলোকোজ্জল পরিবেশে নাচগানের ব্যবস্থাও থাকবে। সেখানে বাউল সহ বিভিন্ন লোকসঙ্গীত এবং আধুনিক গান পরিবেশিত হবে। পর্যটকরা সমুদ্রের শোভা দেখতে দেখতে আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। যাত্রাপথে সমুদ্রতীরবর্তী মৎস্যজীবীদের গ্রাম এবং তাঁদের কর্মকাণ্ড দেখার সুযোগ রয়েছে। যাত্রা শেষে ফের ন্যায়কালী মন্দির সংলগ্ন এলাকায় ফিরে আসবে প্রমোদতরীটি। প্রয়োজনে ছোটখাট অনুষ্ঠান, পার্টি প্রভৃতির জন্য ভাড়া করা যাবে এমভি নিবেদিতা। এই প্রমোদতরণী চালিয়ে যা আয় হবে, তার একটি অংশ পাবে হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থা এবং আর একটি অংশ পাবে দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থা। এমনটাই জানা গিয়েছে। 

    হলদিয়া উন্নয়ন সংস্থার চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর বলেন, হলদিয়াতে পর্যটকদের মনোরঞ্জনের জন্য এই ভেসেলটি আনা হয়েছিল। তবে সেই উদ্যোগ সাফল্য লাভ করেনি। এই পরিস্থিতিতে দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার পক্ষ থেকে ভেসেলটি দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেইমতো একটি চুক্তি করে ভেসেলটি দীঘায় পাঠানো হয়েছে। দীঘা যেহেতু জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র, সেখানে প্রমোদতরীটি চালিয়ে লাভ হবে বলেই আমাদের ধারণা। দীঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন সংস্থার মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক মানসকুমার মণ্ডল বলেন, পুজোর ঠিক আগে যাতে প্রমোদতরীটি চালু করে দেওয়া যায় তার চেষ্টা চলছে। আশা করছি, এই পরিকল্পনা সফল হবে।   
  • Link to this news (বর্তমান)