• Kolkata Municipal Corporation : বেআইনি নির্মাণে সাসপেন্ড হবেন পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার
    এই সময় | ১৯ মে ২০২৩
  • তাপস প্রামাণিক কলকাতা শহরে কোথাও কোনও বেআইনি নির্মাণ হলে সেই এলাকার দায়িত্বে থাকা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারকে সাসপেন্ড করা হবে। তাঁর বিরুদ্ধে শুরু হবে বিভাগীয় তদন্তও। মহানগরে বেআইনি নির্মাণ ঠেকাতে এমনই কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ। দিন কয়েক আগে পুর কমিশনারের অফিস থেকে এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। স্বভাবতই ওই নির্দেশিকা নিয়ে পুর প্রশাসনের অন্দরে শোরগোল।

    কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বেআইনি নির্মাণ হওয়ায় পুর কর্তৃপক্ষের উপর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসন্তুষ্ট। নবান্নের নির্দেশে সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক উচ্চপদস্থ ইঞ্জিনিয়ারকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, এই বেআইনি প্রোমোটারিকে কেন্দ্র করেই গন্ডগোলের জেরে কিছু দিন আগে গ্রেপ্তার হয়েছেন বেলেঘাটার রাজু নস্কর, যিনি শাসক দলের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। রাজু ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে বেলেঘাটা এলাকায় কয়েকশো বেআইনি বাড়ি নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।

    গত ১২ মে পুর কমিশনার বিনোদ কুমারের জারি করা নির্দেশকায় বলা হয়েছে, কলকাতার মেয়র বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করার জন্য এর আগে বারবার নির্দেশ দিয়েছেন। তা সত্ত্বেও বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করা যায়নি। পুর কমিশনারের নির্দেশ, বেআইনি নির্মাণ যখন শুরু হবে, তখনই ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না-হলে, একবার কোনও বাড়িতে লোক ঢুকে গেলে সেটা ভাঙা পুরসভার পক্ষে খুব কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

    কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের যে সব অ্যাসিস্ট্যান্ট ও সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার রয়েছেন, নতুন নীতি কার্যকর করার জন্য তাঁদের প্রত্যেককে এক-একটা ওয়ার্ডের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হবে। সেখানে কোনও বেআইনি নির্মাণ হলে তিনি দায়বদ্ধ থাকবেন। যদি বেআইনি ভাবে বাড়ি তৈরি হয় এবং সেখানে লোক ঢুকে যায়, সে ক্ষেত্রে কড়া শাস্তির মুখে পড়বেন ওই ইঞ্জিনিয়ার- এমনটা বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়।

    পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের ইঞ্জিনিয়ারদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, কলকাতা শহরে যত বেআইনি নির্মাণ হয়, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেগুলোর পিছনে কোনও না-কোনও রাজনৈতিক নেতার মদত থাকে এবং পুলিশের একাংশও এতে জড়িত। তা হলে বেআইনি নির্মাণের জন্য শুধু ইঞ্জিনিয়ারদের কেন বলির পাঁঠা করা হবে?

    কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, 'বেআইনি নির্মাণের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে গেলেই প্রথমে স্থানীয় নেতারা আমাদের বাধা দেন।' তাঁর বক্তব্য, 'বেআইনি নির্মাণ ভাঙতে গেলে পুলিশের সাহায্য অবশ্যই দরকার। তা না-হলে প্রোমোটারের লোকদের হাতে আমাদের মার খেয়ে আসতে হবে। আবার আমরা চাইলেই পুলিশ ফোর্স পাব, তার কোনও মানে নেই। অথচ বেআইনি নির্মাণ হলে আমাদের সাসপেন্ড করা হবে, এমনটা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে। আমাদের অবস্থা শাঁখের করাতের মতো।'
  • Link to this news (এই সময়)