• মাধ্যমিকে সাফল্যের শীর্ষে মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির প্রথম দশে ১৩ জন একই স্কুলের
    বর্তমান | ২০ মে ২০২৩
  • সংবাদদাতা, মালদহ: মাধ্যমিকে সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখল মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির। এবারের মেধা তালিকায় জেলার প্রথম দশ স্থানাধিকারী ২১ জন কৃতীর মধ্যে রয়েছে এই স্কুলের ১৩ জন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বারবার মেধা তালিকায় স্থান করে নজর কেড়েছে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে এবার নয়া মাইলস্টোন তৈরি করল রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত মালদহের এই স্কুল। মেধা তালিকায় স্কুলের একের পর এক ছাত্রের নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ছাত্র ও অভিভাবকদের পাশাপাশি শিক্ষক ও সন্ন্যাসীরাও আনন্দে উদ্বেল হয়ে ওঠেন। 

    ১৯৪৪ সালে স্বামী পরশিবানন্দজী মহারাজের হাত ধরে রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দির প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১৬ থেকে মেধা তালিকায় একটানা স্থান দখল করে আসছে এই স্কুলের পড়ুয়ারা। ২০২২ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় চতুর্থ, নবম এবং দশম স্থান দখল করেছিল বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের পড়ুয়ারা। আর ২০২০ সালে প্রথম দশে ছিল এই স্কুলের চার পড়ুয়া। 

    কিন্তু এই বছরের সাফল্য আগের খতিয়ানকেও ছাড়িয়ে গেল। দ্বিতীয়, তৃতীয়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম এবং দশম স্থানাধিকারীদের মধ্যে রয়েছে মালদহ রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের মোট ১৩ জন ছাত্র। দ্বিতীয় স্থানাধিকারী রিফাত হাসান সরকার, তৃতীয় স্থানে থাকা মহম্মদ সারওয়ার ইমতিয়াজ, মাহির হাসান, স্বরাজ পাল, অর্ঘদীপ সাহা, ষষ্ঠ স্থানে থাকা রায়হান আবেদিন, রিদ্ধিশ দাস, সপ্তম স্থানাধিকারী মহম্মদ ফাহিম আনিশ ও শেখ আয়ান রশিদ, অষ্টম স্থানে থাকা দেবকুমার মিশ্র ও অরণ্য লালা এবং দশম স্থানাধিকারী অঙ্কিত মণ্ডল ও অনুব্রত ঘোষ। সফল ছাত্ররা জানিয়েছে, এই কৃতিত্ব এসেছে প্রধান শিক্ষক মহারাজ ও অত্যন্ত সহৃদয় শিক্ষকদের  জন্য। 

    এ বছর এই স্কুল থেকে মাধ্যমিকে বসেছিল ১০৮ জন ছাত্র। সকলেই প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে। তাদের প্রাপ্ত গড় নম্বর ৯০.৬৬ শতাংশ। স্টার মার্কস পেয়েছে ১০৩ জন। ৯০ শতাংশের বেশি নম্বর পেয়েছে ৬৮ জন ছাত্র। অঙ্কে ১০০ নম্বর পেয়েছে ১৫ জন। ভৌতবিজ্ঞান ও জীবন বিজ্ঞানে ১০০ পেয়েছে যথাক্রমে ১৩ ও ১৫ জন। ভূগোলে ১৮ জন এবং ইতিহাসে একজন ছাত্র ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। 

    স্কুলের সাফল্যের কারণ ব্যাখ্যা করে রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক স্বামী তাপহরানন্দজী মহারাজ বলেন, পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই আমরা ছাত্রদের মনে স্বপ্নের বীজ বুনতে শুরু করি। নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্রদের নিয়ে চলে বিশেষ প্রশিক্ষণ। মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে অন্তত পাঁচটি সমমানের পরীক্ষা নিই আমরা। যতক্ষণ না পর্যন্ত সম্পূর্ণ ত্রুটি কাটিয়ে উঠতে পারে পড়ুয়ারা, ততক্ষণ তাদের নিরন্তর তালিম দেওয়া হয়। যারা মেধা তালিকায় স্থান পায় সেই সব ছাত্রদের টেস্টের খাতা সংরক্ষণ করে অন্যান্য শ্রেণির পড়ুয়াদের দেখাই কীভাবে আদর্শ উত্তর লেখা যায়। প্রয়োজনে রামকৃষ্ণ মিশন পরিচালিত অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কৃতী পড়ুয়াদের টেস্টের খাতাও জোগাড় করে নিয়ে আসি। এই কৃতিত্ব শিক্ষক, অভিভাবক ও পড়ুয়াদের শেখানোর চেষ্টা ও ছাত্রদের শেখার ঐকান্তিক আগ্রহকেই উৎসর্গ করেছেন প্রধানশিক্ষক। 
  • Link to this news (বর্তমান)