নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: শুধু ভালো নয়, এবার মাধ্যমিকে তাক লাগানো ফল করল রামকৃষ্ণ মিশনের একাধিক স্কুল। ১১৮ জনের মেধা তালিকায় প্রথম দশে জায়গা করে নিয়েছে রামকৃষ্ণ মিশনের ৩৪ জন পড়ুয়া। বিশেষভাবে নজর কেড়েছে মালদহ এবং নরেন্দ্রপুর। এই দুই স্কুল থেকে সব থেকে বেশি পরীক্ষার্থী মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে। কড়া অনুশাসন, নিয়মানুবর্তিতা এবং পরিশ্রমের কারণে এই সাফল্য এসেছে বলে দাবি শিক্ষকদের।
এবার মাধ্যমিকে উল্লেখযোগ্য সাফল্য পেয়েছে পুরুলিয়া রামকৃষ্ণ মিশন স্কুল। মেধা তালিকায় স্থান পেয়েছে সেখানকার মোট ছ’জন ছাত্র। স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বামী জ্ঞানরূপানন্দ মহারাজ বলেন, এবার ৯৮ জন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল। স্কুলের ফলাফল বরাবরই ভালো হয়। এই স্কুলের অরিজিৎ মণ্ডল এবং শুভজিৎ দে ৬৮৮ নম্বর পেয়ে যুগ্মভাবে পঞ্চম হয়েছে। ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে সৌম্যদীপ দাস এবং সৌম্যদীপ নায়েক। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৭। সপ্তম স্থানে থাকা শুভ্রম হাজরা পেয়েছে ৬৮৬ এবং অষ্টম স্থানাধিকারী অর্পণ সেন বর্মনের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৫ নম্বর।
অন্যদিকে, নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যামন্দির এবার চতুর্থ, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম এবং দশম স্থান অর্জন করেছে। সব মিলিয়ে মোট ১২ জন র্যাঙ্ক করেছে। এই স্কুল থেকে ১২৮ জন পরীক্ষা দিয়েছিল। তার মধ্যে ১২২ জনই ৯০ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর নিয়ে পাশ করেছে। অনীশ বারুই রাজ্যে চতুর্থ হয়েছে। যুগ্ম ষষ্ঠ হয়েছে অনীক বারুই ও সুতীর্থ পাল। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৭। অদ্রিজ গুপ্ত রাজ্যে সপ্তম হয়েছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৬। এছাড়াও এই স্কুল থেকে দু’জন করে অষ্টম ও নবম এবং তিনজন দশম স্থান অধিকার করেছে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক স্বামী ইশতেশানন্দ মহারাজ বলেন, টেস্টের পর আমরা কোনও পড়ুয়াকে বাড়ি যেতে দেইনি। তাই এবার ফল ভালো হয়েছে।
মেধা তালিকায় সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখেছে মালদহের রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরের। দ্বিতীয়, তৃতীয়, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম এবং দশম স্থানে রয়েছে এই স্কুলের ১৩ জন। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রিফাত হাসান সরকার, তৃতীয় স্থানে মহম্মদ সারওয়ার ইমতিয়াজ, মাহির হাসান, স্বরাজ পাল ও অর্ঘদীপ সাহা, ষষ্ঠ স্থানে রায়হান আবেদিন ও ঋদ্ধিশ দাস, সপ্তম স্থানে মহম্মদ ফাহিম আনিশ ও শেখ আয়ান রশিদ, অষ্টম স্থানে দেবকুমার মিশ্র ও অরণ্য লালা এবং দশম স্থানে রয়েছে অঙ্কিত মণ্ডল ও অনুব্রত ঘোষ। পাশাপাশি, টাকি রামকৃষ্ণ মিশনের অর্ক মণ্ডল ৬৯০ নম্বর পেয়ে তৃতীয় এবং তন্ময় ঘোষ ৬৮৩ নম্বর পেয়ে দশম হয়েছে।
তবে মেধা তালিকায় কেউ জায়গা না পাওয়ায় হতাশ রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন। এর জন্য প্রধান শিক্ষক স্বামী মুরলীধরানন্দজি মহারাজ ছাত্রদেরই উপরই দায় চাপিয়েছেন। তিনি বলেন, লটারিতে স্থান পাওয়া ব্যাচের ছেলেরা এবার প্রথম মাধ্যমিক পরীক্ষা দিল। এবার মিশনের ফল সত্যি হতাশাজনক। কেউই মেধা তালিকায় স্থান পায়নি। বরানগর রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান শিক্ষক স্বামী মহামৃতানন্দজি মহারাজ তাঁদের স্কুলের ফলাফল প্রসঙ্গে বলেছেন, সব কিছুর জন্য করোনা পরিস্থিতিই দায়ী। দু’বছর ক্লাস হয়নি। অনলাইনে যেটুকু পড়াশোনা হয়, তা যথেষ্ট নয়।
কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মিশন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের রাজদীপ শাসমল মেধা তালিকায় অষ্টম স্থান অধিকার করেছে। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৫।