• এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ভানুর মৃত্যু, অশান্তির ভয়ে দেহ সৎকার কটকেই
    বর্তমান | ২০ মে ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, এগরা: এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ বাগ ওরফে ভানু মারা গেলেন। প্রায় ৮০ শতাংশ অগ্নিদগ্ধ হয়ে কটকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাত দু’টো নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি হওয়ার কারণে ওই হাসপাতালেও পৌঁছেও সিআইডি ভানুর বয়ান লিপিবদ্ধ করতে পারেনি। তাঁর মৃত্যুতে তদন্তের গতি খানিক শ্লথ হতে পারে বলে আশঙ্কা আইনজ্ঞদের। এগরার ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় এই নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০। বিস্ফোরণ পরবর্তী জনবিক্ষোভ এবং অশান্তির আশঙ্কায় ভানুর বাগের দেহ কটকেই সৎকার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার। এই পর্বেই এগরা থানার আইসি মৌসম চক্রবর্তীকে সরিয়ে দেওয়া হল শুক্রবার। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নিয়েছেন হুগলি গ্রামীণ পুলিস জেলার সাইবার ক্রাইম থানার ইন্সপেক্টর স্বপন গোস্বামী।     

    এগরার খাদিকুল গ্রামের একটি বেআইনি বাজি কারখানার মালিক ছিলেন ভানু। ১৬ মে, মঙ্গলবার ভয়াবহ বিস্ফোরণে ধূলিসাৎ হয়ে যায় সেই কারখানা। ছিন্নভিন্ন হয়ে যান ন’জন কারিগর। ভানুও গুরুতর জখম হন। ছেলে ও ভাইপোর সাহায্য নিয়ে বাইকে চেপে ওড়িশায় পালিয়েছিলেন তিনি। ভুয়ো পরিচয়ে কটকের ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। ঘটনার দু’দিন পর সিআইডি তাঁর নাগাল পায়। ধরা পড়ে ছেলে ও ভাইপো। কিন্তু ভানুর মৃত্যুর পর যে প্রশ্নগুলি উঠে আসছে, তা হল, ১) বারবার বিস্ফোরণ ও মৃত্যুর পরও কোন যাদুবলে বাজি কারখানা চালু রেখেছিলেন ভানু? ২) কারখানায় বোমা কিংবা বিস্ফোরক বানানো বা মজুত ছিল কি না? ৩) ভানুর সঙ্গে কাদের ওঠাবসা ছিল? এখন ভানুর মৃত্যুতে এইসব প্রশ্নের উত্তর পেতে বেশ হিমশিম খেতে হবে তদন্তকারীদের। তাঁদের কাছে ভরসা কেবল ভানুর ছেলে ও ভাইপো। 

    এদিন, মৃত্যুর খবর পেয়েই পুলিসের পক্ষ থেকে ভানুর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বাড়িতে ছিলেন তাঁর মেজো ভাই কালীপদ বাগের পুত্রবধূ মামনি বাগ। তাঁকে নিয়ে সাহাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে যায় পুলিস। সেখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করে মামনিকে নিয়ে কটকে পৌঁছয় তারা। হাসপাতাল থেকে দেহ নিয়ে তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। গ্রামে অশান্তির আশঙ্কায় দেহ আনা হচ্ছে না। সম্ভবত সেখানেই সৎকার হবে বলে পুলিস সূত্রে খবর। 

    এগরা কাণ্ডে রাজ্য সরকারের জবাব তলব করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। শুক্রবার নবান্নে এই সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, মুখ্যসচিব এবং রাজ্যের ডিজিকে নোটিস দেওয়া হয়েছে। চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। 
  • Link to this news (বর্তমান)