• 'চোখের আলো'য় সব জেলার জন্য টার্গেট
    এই সময় | ২০ মে ২০২৩
  • এই সময়: ছানি অপারেশন-সহ চোখের চিকিৎসা, অন্ধত্ব নিবারণ ও পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে তৈরি 'চোখের আলো' মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প। কিন্তু গত বছর এই প্রকল্পে অনেক জেলার পারফরম্যান্সই সন্তোষজনক ছিল না। কোথাও ৫০% তো কোথাও ২০% লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ করতে পারেনি ৬ থেকে ৮টি জেলা। তাই চলতি অর্থবর্ষে জেলাভিত্তিক টার্গেট বেঁধে দিল স্বাস্থ্য দপ্তর। বৃহস্পতিবার জারি আদেশনামায় ছানি অপারেশনের পাশাপাশি চোখের পাওয়ার নির্ণয় ও চশমা প্রদানের খুঁটিনাটি বিষয়ে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।

    স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, চোখের আলো-তে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ছানি অপারেশন ও চশমা প্রদানে। জেলাগুলিকে স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশ, চলতি অর্থবর্ষে রাজ্যজুড়ে অন্তত ৭.২৫ লক্ষ ছানি অপারেশন করতেই হবে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি টার্গেট উত্তর ২৪ পরগনার (৩৭ হাজার)। তার পরেই রয়েছে মুর্শিদাবাদ (৩৪ হাজার) ও নদিয়া (২৫ হাজার)। স্কুলপড়ুয়া এবং ৪৫-ঊর্ধ্বদের জন্যে যথাক্রমে ১.২৫ লক্ষ ও ৭.৭০ লক্ষ চশমা প্রদানের লক্ষ্যমাত্রাও ঠিক হয়েছে। এতেও সর্বোচ্চ টার্গেট উত্তর ২৪ পরগনার। ৬-১৮ বছর বয়সিদের জন্যে ১০ হাজার এবং ৪৫-ঊর্ধ্বদের জন্য ৯৫ হাজার।

    এই অর্থবর্ষে রাজ্যের মোট ১৫টি আই ব্যাঙ্ককে অন্তত ৫ হাজার মরণোত্তর কর্নিয়া সংগ্রহ ও ৩৫০০ কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করতেও টার্গেট দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের অধীন রিজিয়োনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজি (আরআইও) এবং ব্যারাকপুরের প্রভা আই ব্যাঙ্ক তথা দিশা আই হাসপাতালকে দেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ টার্গেট। দুই প্রতিষ্ঠানকেই ৮০০ করে কর্নিয়া সংগ্রহ করতে হবে। আর প্রতিস্থাপন করতে হবে আরআইও এবং দিশাকে যথাক্রমে ৫৬০ ও ৫০০টি করে। প্রতিস্থাপনের দায়িত্ব রাজ্যের সরকারি-বেসরকারি ২৭টি হাসপাতালের।

    স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, শুধু টার্গেট বেঁধে দেওয়াই নয়, চোখের নির্দিষ্ট রোগ নির্ণয় এবং তার যথাযথ চিকিৎসা কিংবা পুনর্বাসনের মধ্যে যে 'গ্যাপ', সেটাও কমানোর লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে জেলা ধরে ধরে। আদেশনামায় বলা হয়েছে, ছানি চিহ্নিতকরণ ও অপারেশনের মধ্যে গত বছর ১৯% ব্যবধান ছিল। সেই ব্যবধান চলতি অর্থবর্ষে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ১৫% এবং ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১০% বা তার কমে নামাতে হবে। স্কুলপড়ুয়াদের চোখের পাওয়ার নির্ণয় ও চশমা প্রদানের মধ্যে গত বছর যে ২৪% ব্যবধান ছিল, সেটাকে জুলাই ও সেপ্টেম্বেরের মধ্যে যথাক্রমে ১৮% ও ১০% বা তার কম করতে হবে।

    স্বাস্থ্য দপ্তরের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, 'শুধু লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া এবং ব্যবধান কমানোই নয়, পরিকাঠামো সম্প্রসারণের ক্ষেত্রেও টার্গেট ঠিক করে দেওয়া হয়েছে।' তিনি জানান, বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ, বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজ, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজকে আগামী ৩০ জুনের মধ্যে একটি করে আই ব্যাঙ্ক চালু করতে হবে। রাজ্যের সব নির্মীয়মাণ চক্ষু অস্ত্রোপচারের ওটি-কে প্রথম পর্যায়ে জুন ও দ্বিতীয় পর্যায়ে অগস্টের মধ্যে চালু করতে হবে। এবং সময় নষ্ট না করে এখন থেকেই প্রত্যেকটি মেডিক্যাল কলেজকে মরণোত্তর কর্নিয়া সংগ্রহে নির্দিষ্ট কর্মসূচি নিতে হবে।
  • Link to this news (এই সময়)