শনিবার টুইটে মমতা লেখেন, ‘‘২০০১ সালে এই দিনে আমরা ৩৪ বছরের দানব শাসনকে উৎখাত করে পশ্চিমবঙ্গে মা-মাটি-মানুষের সরকার গঠনের শপথ নিয়েছিলাম। সেই অঙ্গীকারের আজ পুনর্নবীকরণ করছি এবং জনগণের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করছি।’’ এর পরেই ‘অসুবিধার’ কথা বলেন মমতা। লেখেন, ‘‘কেন্দ্রে স্বৈরাচারী সরকারের এজেন্সি-রাজ আমাদের কাজকে চ্যালেঞ্জিং করে তুলেছে। কিন্তু সারা দেশে লক্ষ লক্ষ মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন। মিছিলে আছেন। দীর্ঘজীবী হোক ২০ মে।’’
অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে। বহু বার এই অভিযোগ করে আসছেন মমতা। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে কয়লা-গরু পাচার— সর্বত্র বেছে বেছে তৃণমূলের লোকেদের জড়ানো হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন। এর মধ্যে শুক্রবার নিয়োগ দুর্নীতিতে ধৃত কুন্তলের চিঠিকাণ্ডে অভিষেককে সমন পাঠায় সিবিআই। ‘তৃণমূলে নবজোয়ার’ কর্মসূচি অসমাপ্ত রেখেই কলকাতা ফেরেন অভিষেক। যা নিয়ে মমতার অভিযোগ, তৃণমূলের সঙ্গে রাজনীতিতে না পেরে উঠে এই কাজ করছে বিজেপি। তিনি বলেন, ‘‘ইডি-সিবিআই তৃণমূলকে খুব ভয় পায়। নবজোয়ার কর্মসূচিতে অভিষেক ২৫ দিন ধরে রাস্তা রয়েছে। কী করে এই কর্মসূচি বন্ধ করা যায় তার চেষ্টা করছে বিজেপি।’’ এর পর সম্প্রতি কর্নাটক বিধানসভা ভোটের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘‘শুধু কর্নাটক নয়, দেখবেন বাকি সব জায়গায় হারবে। শুধু উত্তরপ্রদেশ এবং গুজরাত নিয়ে থাকবে। কিন্তু অভিষেককে আটকে নবজোয়ার কর্মসূচি বন্ধ করা যাবে না। অভিষেককে যদি ওরা আটকে রাখে তবে জেলায় জেলায় আমি যাব।’’ মমতা এ-ও বলেন,‘‘বিজেপির কাছে মাথা নত করব না। বিজেপিকে দেশছাড়া না করা পর্যন্ত লড়াই চলবে।’’
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের জয়ের পর ওই বছর ২০ মে প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন মমতা। এর পর ২০১৬ সালে দ্বিতীয় বার এবং ২০২১ সালের ৫ মে তৃতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেন মমতা।
এর মধ্যে শুক্রবারই বাজার থেকে ২০০০ টাকার নোট তুলে নেওয়ার ঘোষণা করে আরবিআই। যা নিয়ে মোদী সরকারের উদ্দেশে কটাক্ষপূর্ণ টুইট করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। টুইটারে লেখেন, ‘‘এটা ২,০০০ টাকার নোটের ধামাকা ছিল না। বরং ১০০ কোটি ভারতীয়কে দেওয়া বিলিয়ন ডলারের ধোকা ছিল। আমার ভাই ও বোনেরা, ঘুম থেকে উঠুন। নোট বাতিলের সময় আমাদের যে কষ্ট পোহাতে হয়েছিল, তা এখনও আমরা ভুলে যাইনি। আর যারা আমাদের সেই কষ্ট দিয়েছে, তাদের ক্ষমা করা উচিত নয়।’’
অন্য দিকে, কুন্তলের চিঠি নিয়ে যদি অভিষেককে তলব করা হয়, তবে সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের চিঠির প্রেক্ষিতে শুভেন্দু অধিকারীকে কেন তলব করবে না সিবিআই, এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেন, ‘‘সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেন দু’বার চিঠি লিখেছিলেন। তৃতীয় চিঠি লিখেছেন কিছু দিন আগে। ১১ মে আদালতে এসেছে ওই চিঠি। কুন্তলের চিঠির প্রেক্ষিতে যদি অভিষেককে তলব করা হয়, তা হলে সুদীপ্ত সেনের চিঠির প্রেক্ষিতে শুভেন্দুকে কেন ডাকা হবে না?’’