জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: 'কুন্তল ঘোষ (Kunal Ghosh) নামে নিয়োগ মামলার এক বন্দি অভিযুক্ত কী লিখেছে, এর উপর দাঁড়িয়ে তড়িঘড়ি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) তলব করল সিবিআই। কী তাড়া, কী তাড়া!' কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই-এর (CBI) বিরুদ্ধে এমনই তোপ দাগলেন কুণাল ঘোষ। শনিবার অর্থাৎ ২০ মে সিবিআই-এর তলবে নিজাম প্যালেসে হাজির হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের হাজিরার কিছুক্ষণ পরেই কেন্দ্রকে নিশানা করে টুইট করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী (Chief Minister Of West Bengal) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। চৌত্রিশ বছরের বাম শাসনের অবসান করে ২০১১ সালের ২০ মে মা-মাটি-মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। সেটাও উল্লেখ করে টুইট করেন মমতা। সেখানেই তিনি উল্লেখ করেন যে, বিজেপি সরকারের অঙ্গুলিহেলনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির 'এজেন্সিরাজ' চলছে।এদিকে নিজাম প্যালেসে অভিষেকের হাজিরা প্রসঙ্গ নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন তুলে ধরেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। সেগুলো জি ২৪ ঘণ্টার পাঠকদের কাছে তুলে ধরা হল...
(১) কুন্তল ঘোষের চিঠির উপর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য যদি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করতে হয়, তাহলে সুদীপ্ত সেনের কোর্টে লেখা চিঠির উপর শুভেন্দু অধিকারী গ্রেফতার হবে না কেন? সিবিআই আর কত পক্ষপাত দেখাবে?
(২) কুন্তলের চিঠিতে অভিষেকের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। শুধু কথার জাগলারিতে কায়দা করে নাম জড়িয়ে অভিষেককে ডাকার মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। অন্যদিকে, সারদাকর্তার চিঠিতে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে। কুন্তল, সুদীপ্ত সেন দু’জনেই জেলবন্দি এবং একই পদ্ধতিতে কোর্টকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। সুদীপ্ত সেন যে অভিযোগ করেছেন, সেটি নতুন নয়। শুভেন্দু বিজেপিতে যোগদানের পরেও নয়। এই অভিযোগ ২০১৩ সাল থেকেই সামনে আছে। কেন সিবিআই শুভেন্দুকে গ্রেফতার করছে না? এই গ্রেপ্তারি এড়াতেই দলবদল, সেটা প্রমাণিত।(৩) যে বিষয়ে তলব, তার এতটা তাড়াহুড়ো সত্যিই দরকার ছিল? এতে কি আরও বেশি করে স্পষ্ট হচ্ছে না যে অভিষেকের জনজোয়ারের চাপেই এখন তাতে বিঘ্ন ঘটাতে এই কাণ্ড হচ্ছে?(৪) জিজ্ঞাসাবাদে বাধা নেই, এই কথা যদি আদালত বলেও থাকেন; এজেন্সিকে তো ঠিক করতে হবে, আদৌ এই মামলায় অভিষেককে প্রশ্ন করা দরকার কি না। নথিতে ঠিক কীভাবে নামটা রেখে কোর্টের সামনে পেশ করা হচ্ছে, সেটাও দেখার।(৫) যে মামলায় একজন নেই, স্রেফ আর একটি চিঠির কোনও কারণে জিজ্ঞাসাবাদ কি এজেন্সির সময় নষ্ট হিসেবে পরবর্তীকালে গণ্য হবে না? যদি হয়, আদালত কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন?(৬) কুন্তলের চিঠির কারণে অভিষেককে তড়িঘড়ি ডাকা হয়। কিন্তু নিয়োগ দুর্নীতির কিংপিন প্রসন্ন রায়ের বাড়ি থেকে দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিলের কপি মিললেও তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় না। কেন্দ্রীয় এজেন্সি কি চক্ষুলজ্জাও হারিয়েছে? কুণাল ফের বলেছেন, "আমি জানি, বিশ্বাস করি, সিবিআই, ইডিতে বহু দক্ষ, যোগ্য অফিসার আছেন। কিন্তু, কেন্দ্রের বিজেপি এই রাজ্যে তাদের সাংগঠনিক ঘাটতিপূরণ ও পরাজয়ের প্রতিহিংসায় যেভাবে ব্যবহার করছে, তাতে সেই অফিসারদের কিছু করার থাকছে না। সংস্থার নিরপেক্ষতাই প্রশ্নের মুখে পড়ে যাচ্ছে। আপাতত, গোটা বাংলা, গোটা দেশ এটা দেখছে যে তরুণ তুর্কি অভিষেকের কর্মসূচিতে জনজোয়ার চলছিল। তাতে ভয় পেয়ে বিজেপি কৌশলে এই নবজোয়ার যাত্রা মাঝপথে থামাতে চাইছে এসব চক্রান্ত করে। এবং, সবাই এটাও দেখবেন যে সব চক্রান্ত জলে যাবে। শেষ কথা বলবে নবজোয়ারই।"