• SSKM: মদন মিত্রের বক্তব্য অস্বীকার করে থানায় অভিযোগ পিজি'র...
    ২৪ ঘন্টা | ২০ মে ২০২৩
  • মৈত্রেয়ী ভট্টাচার্য: শুক্রবার রাতে মদন মিত্র (Madan Mitra) ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পিজি কর্তৃপক্ষ (SSKM) সাংবাদিক সম্মেলন করলেন। তাঁরা জানালেন, হাসপাতালের ট্রমাকেয়ারে গতকাল রাত ১২টা নাগাদ একটা অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে। এক রোগীকে ভেন্টিলেটরে থাকা অবস্থায় আনা হয় ট্রমাকেয়ারে। তখন কর্তব্যরত মহিলা মেডিক্যাল অফিসার রোগীর পরিজনকে বলেন, এভাবে রোগীভর্তি করা হয় না। সেই সময়ে ট্রমাকেয়ারে কোনও ভেন্টিলেশন-বেডও ছিল না বলে তাঁরা জানান। পরে তাঁরা চিৎকার চেঁচামেচি করেন। পিজি কর্তৃপক্ষ জানান, প্রায় ৫০০ রোগীকে গতকাল ভর্তি করা হয়েছে। প্রায় ৯০০ রোগী জরুরি বিভাগে এসেছিলেন।

    এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন। তাঁদের দাবি, এসব ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে জিরো টলারেন্স নেওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রী দ্বর্থ্যহীন ভাষায় বলে দিয়েছেন। এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের উপর আক্রমণ নিয়ে সরকারের যা দৃষ্টিভঙ্গি তার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত পিজি!

    এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছেন, পিজির চিকিৎসকেরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছেন। চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে কোনও দুর্বব্যহার কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবে না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা পরিষ্কার ভাষায় বলে দিচ্ছেন, রোগীকে ভর্তি করতে না পারলেই হাসপাতালে দালালরাজের কথা বলা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বরদাস্ত করা হবে না হুলিগ্যানিজমও। তাঁরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছেন। তাঁরা থানায় অভিযোগ করছেন। কী ঘটেছিল? গতকাল মধ্যরাতে পিজি হাসপাতালে বিস্ফোরক মদন মিত্র। এসকেএম-এ এসেও রোগী ভর্তি করতে পারলেন না মদন মিত্র। তার পরেই তৃণমূলনেতার অভিযোগ করেন, এখানে টাকার বিনিময়ে রুগী ভর্তি করা হয়। এখানে দালালরাজ চলছে। রোগী ভর্তি করতে না পেরে সরব তৃণমূল বিধায়ক। তুললেন SAY NO TO PG স্লোগান-ও! মদন মিত্র বলেন, SSKM আর জনগণের হাসপাতাল নয়, এখানে গরিব মানুষ আর চিকিত্‍সা পাচ্ছেন না। বাম আমলে এখানে অনায়াসেই রোগী ভর্তি করা যেত। তিনি স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন। বাইক দুর্ঘটনায় শুভদীপ পাল নামে এক যুবক জখম হন। তিনি এসএসকেএম হাসপাতালেরই ল্যাব টেকনিশিয়ান। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে যান খোদ মদন মিত্র। এসএসকেএম-এর ট্রমা সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হলে নাকি তাঁকে ভর্তি নেওয়া হয়নি। প্রাথমিক চিকিৎসাও দেওয়া হয়নি। গত ১৮ মে রাতে বাইপাসে বাইক দুর্ঘটনায় আহত হন তিনি। প্রথমে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা হয় পরে বেসরকারি হাসপাতাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সে ভর্তি হন। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসা ব্যায়বহুল। তাই পরিবারের লোক মদন মিত্রের দ্বারস্থ হন।তার পরেই তাঁকে এসএসকেএমে ট্রান্সফার করার চেষ্টা করে তাঁর পরিবার। কিন্তু সেখানে ৬ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও রোগীর ভর্তি তো দূরের কথা, প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও হয়নি বলে তাঁদের অভিযোগ। এর পরেই সেখানে বিস্ফোরক মদন মিত্র। তিনি বলে দেন--'বাম আমলে অনায়াসে ভর্তি করতে পারতাম ১ মিনিটে। দালালচক্র সক্রিয়। ৫০-২০ হাজার টাকা দিলে চিকিৎসা হয়। সে নো টু পিজি। এটা আর জনগণের হাসপাতাল নয়। আমাদের এরকম অবস্থা তাহলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা।' মদন মিত্রের আরও অভিযোগ, 'জরুরি অবস্থায় চিকিৎসককে স্টেথোস্কোপ নিয়ে বাইরে এসে প্রাথমিক চিকিৎসাটা করতে হয়। এখন সেটা হচ্ছে না। তারা এসি রুমে থেকে চা সিগারেট খাচ্ছে। সব ফুর্তি করছে। আর পরিবারে কাছে সেখানে রাইফেল নিয়ে পুলিস আসছে। এই হসপিটালে গরিব মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে না। ভিখারির মতন পড়ে রয়েছে। এটা হসপিটাল না অডিটোরিয়াম?'তৃণমূল নেতার দাবি, রোগী যদি মরে যায় হসপিটালকে ১০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তার জন্য মদন মিত্র লড়বে। দীর্ঘদিন ধরেই হসপিটালে এরকম ঘটনা ঘটছে। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস মিথ্যা কথা বলেছে। পেশেন্টের কোনও রকম চিকিৎসা হয়নি হাসপাতালে। অক্সিজেন বা ইনজেকশনও করা হয়নি হসপিটালের তরফ থেকে। এই রোগীকে চিকিৎসার জন্য যা টাকা লাগে মদন মিত্র দেবে। হাতের ঘড়ি, সোনার হার বিক্রি করে। আর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই বার্তা পৌঁছক। মদন মিত্র রাত ১ টার সময় হাসপাতলে এসে এরকম করছে!
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)