• বেলাগাম মদন! মমতাকেই চ্যালেঞ্জ তৃণমূল বিধায়কের, পদত্যাগের হুঁশিয়ারি
    ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস | ২১ মে ২০২৩
  • শুক্রবার রাতের ঘটনার পর শনিবার দুপুরে তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্সের নীতি মেনে পদক্ষেপের হুঁশিারি দিয়েছিলেন এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। তারপরই গ্রেফতার হতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। রাজ্যের নামজাদা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে গন্ডগোল নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে একতরফা সিদ্ধান্ত হচ্ছে বলেও দাবি করেছেন তৃণমূলের পোড়খাওয়া এই বিধায়ক। এমনকী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যোকেও চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন তিনি। পাশাপাশি তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধেও তোপ দেগেছেন তিনি।

    কী বলেছেন মদন মিত্র?

    এসএসকেএম বয়কটের ডাক, হাসপাতালে ঢুকে গন্ডগোল, ডাক্তার নার্সদের বিরুদ্ধে দলীয় বিধায়কের পদক্ষেপকে শাসক দল যে মোটেই ভাল নজরে দেখছেন না তা স্পষ্ট। এসএসকেএমের ডিরেক্টর ডাঃ মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ বলেছিলেন যে, ‘বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছে। আমি তাঁকে ঘটনার কথা বিস্তারিত জানিয়েছি। তিনি এ ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতির কথা বলেছেন। সিটিটিভি ফুটেজ দেখে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।’

    এরপরই কামারহাটির স্থানীয় ক্লাবঘরে বসে সাংবাদিক বৈঠক করেন কামারহাটির বিধায়ক মদনমিত্র। তিনি বলেন, ‘আমি বাড়ি থেকে বেরোচ্ছিলাম। তখন স্ত্রী এসে বললেন তোমাকে গ্রেফতার করতে পারে। কয়েকটা পাঞ্জাবি নিয়ে যাও। আমি দুটো, চারটে পাঞ্জাবি ব্যাগে নিয়ে নিয়েছি। অ্যারেস্ট হতে পারি, তুলে নিতে পারে। কুণাল সাড়ে চারশোটা কেস খেয়েছিল। ও আমার মুখপাত্র।’

    প্রাক্তন মন্ত্রীর সংযোজন, ‘আমি স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের অনুমতি নিয়েই রোগী এসএসকেএমে পাঠিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে দেখি গুন্ডাদের মতো দেখতে সব ডাক্তার।’ হাসপাতালের ডিরেক্টরের কথা উঠতেই সুর চড়িয়ে মদন মিত্র বলেছেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর চাকর। তাই বলে এসব চাকর বাকরের কথা আমাকে বলবেন না। এই ডিরেক্টরের আমলে সবথেকে বেশি পিজিতে দালালি চলছে। ৫০ হাজার ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে।’

    কিন্তু খোদ মুখ্যমন্ত্রীরই তো তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপে সায় দিয়েছেন বলে দাবি হাসপাতালের ডিরেক্টরের। এ নিয়ে মদন মিত্রের দাবি, ‘অনেকে বলছিলেন আপনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলতে পারেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ ফুটে বলবেন গত ৫ বছরে তিনি ৫ মিনিট কথা বলেছেন কি না? উনি তো নিশ্চয়ই আমাকে সে জায়গায় রাখেননি, যেখানে ওনার সঙ্গে আলোচনা করব। দরকারে রাজনীতি ছেড়ে দেব। কিন্তু তার এক মাসের মধ্যে ফের ভোট করতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিনীতভাবে বলছি, তারপর আমি যে বই লিখব, সেটা বেস্ট সেলার হবে। এমন লিখব যে মদন মিত্রর বই আমেরিকাতেও পড়বে।’

    এরপরই মদন মিত্রের আর্জি, ‘আমি ২৩ মাস কাস্টডিতে থেকেছি। তবে বলব দয়া করে আমার পরিবারের উপর কিছু করবেন না। আমি বলব যা করার আমার উপর করুন। পরিবারকে করবেন না। আমি তো আপনারই কেন্দ্রের ভোটার। প্রথম দিন থেকে তৃণমূল করছি। খালি আমার পরিবারের উপর যেন কিছু না নয়।’

    তাহলে কী দল ছাড়বেন বিধায়ক? উত্তরে মদন বলেন, ‘এ দলটা কার? এ দলটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল নাকি? এই দলটা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল নাকি? এ দলটা আমাদের সবার দল। এটা বাংলার মা মাটি মানুষের দল। নাহলে তো লেখা থাকত ওয়েস্ট বেঙ্গল তৃণমূল কংগ্রেস প্রাইভেট লিমিটেড। লেখা তো নেই। এটা আমারও পার্টি। আমি ছাড়তে যাব কেন? এই দলে অন্যদের যা অবদান আছে, তার কম অবদান আমারও নেই।’
  • Link to this news (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)