অয়ন ঘোষাল: শুক্রবার সকালে ইকোপার্কে আসেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। সেখানেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সরাসরি আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এবার নোটবন্দী নয়, মোদিকে ভোট বন্দী করে দেওয়ার জন্য লাইনে দাঁড়াতে হবে: অভিষেক
এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এরকম ডায়লগ গত বারও দিয়েছিল। এবারেও এত লোক এসে মমতার হাতে পায়ে ধরছে। বলছে আপনি আসুন, মোদীর বিরুদ্ধে দাঁড়ান। উনি সাহস পাচ্ছেন না। কারণ উনি জানেন, মোদীজি যা করছেন, দেশের স্বার্থে করছেন। সাধারণ মানুষ খুব খুশি ২০০০ টাকার নোট বাতিলে। এই নোট বাজারে দেখা যায়না। কারুর কারুর বাড়িতে দেখা যায়। কোথাও কোথাও লুকানো আছে। এবার সেগুলো বেরোবে। তাই মানুষ খুশি। যাদের ভয় আছে, ইলেকশনের টাকাটা জলে চলে গেল, তারাই প্রতিবাদ করছে’।
অভিষেকের নব জোয়ারে কাল শালবনিতে যোগ দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। জঙ্গলমহল কি অভিষেক একা সামলাতে পারছেন না?দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘কতদিন ওকে কোলে কোলে নিয়ে ঘুরে বেড়াবেন মমতা ব্যানার্জি? ওকে একটু রাস্তায় ছাড়ুন। উনি ওকে পাঠিয়েই বুঝে গিয়েছেন কতটা দম আছে। পুলিস, এনভিএফ, সিভিক পুলিস এইসব দিয়ে ভীড় করাতে হচ্ছে। পার্টির লোক কিছু নেই। কিছু কাটমানি খোর গুন্ডা বদমাইশ আছে। তাও কেউ রাস্তা আটকাচ্ছে, কেউ চোর বলছে। এরকম জননেতা বাড়িতে তৈরি। এদের সমাজে আর কিস্যু হবে না’।মালদায় শুভেন্দুর সভার অনুমতি খারিজ হাইকোর্টেরতিনি বলেন, ‘এর আগেও ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে আবেদন করে আমরা সভা করেছি। কোর্টে গিয়েছি। আমাদের বারবার কোর্টে যেতে হচ্ছে। কোর্ট যা মনে করেছেন, আদেশ দিয়েছেন। আমরা আগেও কোর্টের আদেশ মেনেছি। এখনও মানব।‘শীতলকুচিতে পুলিসকে লক্ষ্য করে গুলিদিলীপ বলেন, ‘যখন বিএসএফ গরু পাচারকারীকে গুলি চালিয়েছিল, তখন অভিষেক গিয়ে চোখের জল মুছিয়ে দিয়ে এসেছিলেন। মানুষ যখন পুলিসকে তাড়া করছে, যখন জনরোষ পুলিসের উপর গিয়ে পড়ছে, যখন পুলিসে মানুষ আস্থা হারাচ্ছে, তার মানে প্রশাসন, সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর ওপর মানুষের আস্থা নেই। অপরাধীদের যদি পুলিস ধরতে না পারে, তাহলে এটাই ঘটে’।১৯ টি রাজনৈতিক দল রবিবার সেন্ট্রাল ভিস্তা উদ্বোধন বয়কট করছেএই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘অভিষেক ব্যানার্জি কী রাষ্ট্রপতি ভোটে অংশ নিয়েছিলেন? কোন মুখে দ্বিচারিতা করেন? তৃণমূল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বয়কট করেছিল। তখন মনে পড়েনি, এই রাষ্ট্রপতি আদিবাসী সমাজের? এই দোখলাদের মা বাপের ঠিক নেই। এদের যেন সমাজ মনে রাখে। আদিবাসীদের পাশে বিজেপি আছে। তাই সারা দেশে এসসি, এসটি সিট সবথেকে বেশি বিজেপি জিতেছে। মোদী তাদের বাড়িতে লকডাউনে চাল দিয়েছেন। পাকা বাড়ি দিয়েছেন। কর্মসংস্থান দিয়েছেন, কৃষি অর্থ দিয়েছেন। তৃণমূল এতদিন আদিবাসী খেপিয়ে ভোট নিয়েছে। আজ কুড়মি ওদের বিরুদ্ধে। আদিবাসী ওদের বিরুদ্ধে। মতুয়া ওদের বিরুদ্ধে। রাজবংশি ওদের বিরুদ্ধে। ১৯টা রাজনৈতিক দলের কি শক্তি আছে? কটা সাংসদ আছে? অনেকের সাংসদ নেই। যে দলগুলি সঙ্কটে ভুগছে, পার্লামেন্টে ঢোকার লোক থাকবে না আগামি দিনে, তারা ওদের সঙ্গে নিয়ে বলছে ১৯ টা দল। সাধারণ মানুষ গর্বিত। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরে দেশ নতুন পার্লামেন্ট ভবন পাচ্ছে। যেটা অনেক আগেই হওয়া উচিৎ ছিল। আর রাষ্ট্রপতিকে কংগ্রেস কোনওদিনই সম্মান দেয়নি’।অবশেষে খাদিকুল যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। দেড় সপ্তাহ পরেদিলীপ বলেন, ‘উনি দেখে নিচ্ছেন, বিক্ষোভ হবে কিনা। ওনাকে কেউ চোর চোর বলবে কিনা। উনি তো চোরের রানী। হয়তো কাল পুলিস দিয়ে ছেয়ে দেবেন। কাউকে কাছে আসতে দেবেন না। হেলিকপ্টার থেকে নেমে স্পটে চলে যাবেন। যেমন বন্যা দেখতে যান। কিন্তু গ্রামে ঢোকেন না। এই ধরনের একটা হাওয়াই সফর করবেন’।অরূপ রায় বনাম মনোজ তিওয়ারিএই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কার লাগেনি? পার্টির মধ্যে ঘামাসান লড়াই চলছে। যদুবংশ ধংস হয়ে যাচ্ছে। মুশল পর্ব শুরু হয়ে গেছে। এসব নিয়ে মমতা ব্যানার্জির কোনও বক্তব্য থাকেনা। উনি এখন ভাইপোকে বাঁচাতে ব্যস্ত। আমার মনে হয় সেটাও পারবেন না। আজ যদি মন্ত্রীদের মধ্যে এরকম চুলোচুলি হয়, তাহলে সাধারণ কর্মী, যারা পাড়ার গুন্ডা বা কাটমানিখোর, তারা তো মারামারি করবেই। এর ফল সাধারণ মানুষ ভুগছে’।পশ্চিমবঙ্গ যদি আফগানিস্তান হয়, তাহলে উত্তরপ্রদেশ সিরিয়া: ববিদিলীপ বলেন, ‘ববি কে বলব, খিদিরপুর টু কালীঘাট না করে, একটু বাংলাটা ঘুরে দেখুন। কেন আপনার খোকাবাবুকে চোর চোর শুনতে হচ্ছে? ঘেরাটোপে বসে গল্প বলবেন না। বাংলা আজ সিরিয়া এবং আফগানিস্তান হয়ে গেছে। আপনি বাঁচাতে পারবেন না। সেই হিম্মত নেই’।হাঁসখালিতে বিজেপি নেতার রহস্য মৃত্যুদিলীপ বলেন, ‘আমরা বললেই বলে সুইসাইড। ওদের পার্টির লোক মরলে সুইসাইড বলে না। কারণ পার্টির লোকেরাই বলে, পার্টির লোক মেরেছে। তাই বিজেপির যেখানে শক্তি বেশি, সেখানে বিজেপি নেতাকে খুন করে দাও। সিবিআই লাগিয়ে আমাদের এফআইআর করতে হয়’।