• Bengal Bandh: বিরবাহার উপরে হামলা, আগামী মাসে বাংলা বনধের ডাক ১৪ আদিবাসী সংগঠনের
    ২৪ ঘন্টা | ২৯ মে ২০২৩
  • মৃত্যুঞ্জয় দাস ও সৌরভ চৌধুরী: শুক্রবার রাতে শলবনি যাওয়ার পথে মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে হামলা হয়। লোধশুলি থেকে শালবনি যাওয়ার পথে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন লোকজন। তখনই বিক্ষুব্ধদের মধ্যে থেকে ইট এসে পড়ে বিরবাহা হাঁসদার গাড়ির কাচে। জয় শ্রীরাম ও চোর চোর স্লোগান ওঠে জনতার মধ্যে থেকে। ওই ঘটনায় পেশায় শিক্ষক ও কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাত-সহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিস। পাশাপাশি রাজেশকে কোচবিহারের বদলি করে স্কুল শিক্ষা দফতর। এদিকে মন্ত্রীর উপরে হামলার প্রতিবাদ আগামী ৮ জুন জঙ্গলমহলে বনধের ডাক দিয়েছে আদিবাসীদের ১৪ সংগঠন।

    জঙ্গলমহলে জন জোয়ার কর্মসূচিতে গিয়ে বেশ কয়েকবার কুড়মি বিক্ষোভকারীদের সম্মুখীন হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অধিকাংশ জায়গায় তিনি গাড়ি থেকে নেমে তাঁদের কথা শুনেছেন, তাদের সমস্য়া মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন। তবে শালবনিতে বিরবাহা হাঁসদার উপরে হামলার পর ময়দানে নামছে আন্দোলনকারীরা। রাস্তা রুখে, রেল অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাবেন আদিবাসীরা। তাঁদের দাবি, আদিবাসীদের বহু অধিকার খর্ব হচ্ছে। হামলা হয়েছে বিরবাহা হাঁসদার উপরে।বিরবাহা আগে আদিবাসী। তারপরে তিনি মন্ত্রী। আদিবাসী এক মহিলার উপরে হামলার প্রতিবাদেই এই বনধ ।    

    অন্যদিকে, রাজেশ মাহাতকে গ্রেফতারের পর ক্ষোভে ফুঁসছেন কুড়মিরাও। গ্রেফতারের প্রতিবারে তারা পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়ায় বিক্ষোভ মিছিলও কর্মসূচি করেন কুড়মিরা। এনিয়ে কুড়মি এক নেতা বলেন, শালবনিতে সিএম বলেছেন  কুড়মি জনজাতির মানুষ হামলা করতে পারে না। বিজেপির চক্রান্তে মন্ত্রীর গাড়িতে হামলা হয়েছে। আমরা শান্তিপ্রিয় মানুষ। মুখ্যমন্ত্রী বলার পরওৃ আমাদের নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার জন্য পুলিসকে ধিক্কার জানাই। যিনি পশ্চিমবঙ্গ চালাচ্ছেন তিনি বলছেন কুড়মিরা জড়িত নয়, তারপরও জনজাতির মানুষকে  ওঁর পুলিস গ্রেফতার করছে। যতদিন আমাদের আন্দোলনের নেতাদের ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে। কুড়মিদের ঘোষণা, কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতোকে কোচবিহারের বদলির প্রতিবাদে এরাজ্যেরের জঙগ্লমহলেই শুধু নয়, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশার কুড়মি গ্রামে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। সরকার যা করছে তাতে প্রতিহিংসাই প্রকাশ পাচ্ছে।  কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাত সহ ধৃত চার জনকে আজ তোলা হয় ঝাড়গ্রাম আদালতে। এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত আটজন গ্রেফতার হয়েছেন। মোট ১৫ জনের নামে অভিযোগ করা হয়েছে। তৃণমূলের নব জোয়ার যাত্রায় হামলার অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো সহ, শিবাজি মাহাত,অনুভব মাহাত, রাকেশ মাহাত সহ চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিস। ধৃতদের রবিবার তোলা হয় ঝাড়গ্রাম আদালতে। অভিযোগ, গত শুক্রবার ঝাড়গ্রাম ব্লকের গড় শালবনি এলাকায় তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচিতে যাওয়ার সময় তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ের উপর কুড়মি সমাজের মানুষজন হামলা চালায়, সেই সঙ্গে হামলা চালানো হয় রাজ্যের মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়িতে, আহত হয় পুলিশ কর্মী সহ কয়েকজন । ওই ঘটনার পর নবান্ন থেকে ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার চারজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে আদালতে তোলা হয়। তারা বর্তমান পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।শনিবারে পশ্চিমবঙ্গ কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো , আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতো ও ঝাড়গ্রাম জেলার সভাপতি রাকেশ মাহাতো সহ চারজন কে গ্রেফতার করে পুলিস। রবিবার ঝাড়গ্রামের বিশেষ আদালতে তোলা হয়। ধৃত রাজেশ মাহাতো সহ কুড়মি নেতাদের । কুড়মি সমাজের প্রথম সারির আট জন নেতাকে গ্রেফতার করার ঘটনায় ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঝাড়গ্রাম জেলার বিভিন্ন জায়গায় কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন তারা বিক্ষোভ ও মিছিল করছেন এবং এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময় নেতা শিবাজী মাহাতো দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী যদি কুড়মি ভাইদের প্রতি এত দরদ তাহলে আমরা গ্রেফতার হতাম না, এই কেসটা হত না। আর এক নেতা দাবি করেন এটা পুরোটাই চক্রান্ত কনভয় যাওয়ার সময় ওখানে পর্যাপ্ত পুলিশ ও আলোর ব্যবস্থা ছিল না পুরোটাই চক্রান্তের শিকার। আজ অভিযুক্তদের সিজিএম কোর্ট তোলা হলে তাদের একদিনের জেলহেপাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। যেহেতু এসসি এসটি অ্যাক্ট ধারা দেওয়া হয়েছে তাই আগামি কাল এডিজে ওয়ান কোর্টে তোলা হবে। গাড়িতে ওঠার সময় কুড়মি নেতারা জানান তাদের আন্দোলন চালবে। আজ গ্রামে গ্রামে কুড়মিরা তাদের বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন।
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)