• কোন্দল মেটাতে ৭২ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন অভিষেক শালবনীতে দলীয় বৈঠক
    বর্তমান | ২৯ মে ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: ‘৭২ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি, তার আগে নিজেদের কোন্দল মেটান, না হলে ব্যবস্থা নেব।’ রবিবার শালবনীতে দলের পদাধিকারীদের নিয়ে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে এমনই হুঁশিয়ারি দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কোন কোন ব্লকে দলের কোন্দল চরমে পৌঁছেছে, নাম ধরে ধরে সেইসব ব্লকের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সাবধান করে দেন তিনি। সবাই দলের কর্মী, এটা মাথায় রেখেই সকলকে কাজ করার নির্দেশ দেন। 

    শনিবার শালবনীতে ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে জেলার নেতাদের ‘রিপোর্টকার্ড’ পেশ করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের কোন্দল নিয়ে বেশকিছু নেতার উপর তীব্র অসন্তোষও প্রকাশ করেছিলেন নেত্রী। এদিন একইভাবে ব্লক ধরে ধরে ‘রিপোর্টকার্ড’ পেশ করলেন অভিষেক। তৃণমূল সূত্রে খবর, বিশেষত, মোহনপুর, নারায়ণগড়, খড়্গপুর গ্রামীণ, দাঁতন, শালবনী, চন্দ্রকোণা রোড, গড়বেতা ব্লকের কোন্দল নিয়ে ব্লক সভাপতি ও বিধায়কদের সাবধান করে দেন অভিষেক। তিনি বলেন, দলের প্রচারের থেকে আত্মপ্রচার বেশি হয়ে যাচ্ছে। নেতাদের মধ্যে ইগোর লড়াই চলছে। যেখানে গোষ্ঠীকোন্দল নেই, সেখানে নেতাদের ইগো আছে। সেই ইগো ঝেড়ে ফেলুন। কোন্দল মেটাতে মন্ত্রী মানস ভুইঁয়া, জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি, জেলা সভাপতি সুজয় হাজরাকে বাড়তি দায়িত্ব দেন অভিষেক। যেসমস্ত ব্লকে কোন্দল রয়েছে, সেইসব ব্লকের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তা মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন তিনি। মোহনপুর ব্লকের সভাপতি মানিক মাইতির সঙ্গে বিধায়ক বিক্রম প্রধানের কোন্দল রয়েছে বলে খবর। বিক্রমবাবুকে অভিষেক বলেন, আপনি সিনিয়র লোক, কেন এসব করছেন? মিটিয়ে নিন। নারায়ণগড় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিধায়ক সূর্য অট্টকে বলেন, আজ যদি ভোট হয়, তাহলে কতগুলো অঞ্চলে জিতবেন? জবাবে সূর্যবাবু বলেন, দু’টি অঞ্চল বাদে সব জায়গায় জিতব। তখন অভিষেক বলেন, আপনি মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন। কোন্দল মেটান। তবেই লোকসভায় ভালো ফল করবে দল। খড়্গপুর গ্রামীণের বিধায়ক দীনেন রায়কে বলেন, আপনি চায়ের দোকানে জনসংযোগ করেন, কিন্তু মন দিয়ে সংগঠন করেন না। মাতকাতপুরে প্রায় একশোর বেশি বাসিন্দাকে পাট্টার ব্যবস্থা করে দিলাম, কিন্তু তার একটুও প্রচার করলেন না আপনি! শালবনীতে ব্লক সভাপতি নেপাল সিংহের সঙ্গে বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতর কোন্দল রয়েছে। তাও বসে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন অভিষেক। 

    দলীয় সূত্রে খবর, গড়বেতার বিধায়ক উত্তরা সিং হাজরা কিছু বলতে চাইলেও তাঁকে বসিয়ে দেন অভিষেক। বুঝিয়ে দেন, উত্তরার কাজে অসন্তুষ্ট তিনি। সেইসঙ্গে গড়বেতা-২ ব্লকের সভাপতিকেও সাবধান করে অভিষেক বলেন, আপনি ১৯৯৮ সাল থেকে পার্টি করতে পারেন। তা বলে নব্যদের গুরুত্ব দেবেন না, তা হবে না। 

    তবে ব্লকে এই কোন্দলের জন্য জেলা সভাপতিকেই বেশি দায়ী করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ব্লকগুলোর এই অবস্থা জন্য তুমি কী করেছ? সুজয়বাবু যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করলে অভিষেক বলেন, কিছুই হয়নি। দলের সিনিয়ররা মর্যাদা পাচ্ছেন না। এগুলো মিটিয়ে ফেলো। মহিলা সভানেত্রী মামনি মান্ডির সাংগঠনিক কাজকর্ম নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন অভিষেক। প্রসঙ্গত, শনিবার মমতার কাছেও ধমক খেতে হয় সুজয়বাবুকে। তবে মানসবাবুর উপর ভরসা করেন অভিষেক। তাঁকে মাথায় রেখে একটি কমিটি করে দেন। দলের সব সমস্যা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মিটিয়ে ফেলার নির্দেশ দেন।
  • Link to this news (বর্তমান)