• ভোররাতে ৫ জায়গায় নাশকতা, পাল্টা অভিযান
    বর্তমান | ২৯ মে ২০২৩
  • ইম্ফল: পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। তাই জাতি সংঘর্ষে জর্জরিত মণিপুর পরিদর্শনে আজ, সোমবার তিনদিনের সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর এই সফরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য কোমর বেঁধে নেমেছে এন বীরেন সিংয়ের সরকার। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শনিবার উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যে পৌঁছে গিয়েছিলেন সেনাপ্রধান জেনারেল মনোজ পান্ডে। কিন্তু রবিবার ভোরে রাজ্যের পাঁচ জায়গায় হামলা চালায় জঙ্গিরা। আর তারপরই  জঙ্গিদমনে জোরদার অভিযান শুরু করে যৌথবাহিনী। আট ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে চলে অপারেশন। সেনা ও পুলিসের সঙ্গে সংঘর্ষে খতম হয় অন্তত ৪০ কুকি জঙ্গি। পরে সাংবাদিক বৈঠকে বাহিনীর এই সফল অভিযানের খবর দেন মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং। বলেন, ‘সাধারণ মানুষের উপর হামলা চালাচ্ছিল জঙ্গিরা। বেশ কিছু গ্রামে ঘরবাড়ি পোড়ানো হয়েছে। এম-১৬ ও একে-৪৭, স্নাইপার সহ নানা আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছিল। কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। খতম করা হয়েছে প্রায় ৪০ বিচ্ছিন্নতাবাদীকে।’ 

    মেইতেই ও কুকি সম্প্রদায়ের সংঘর্ষে বিগত প্রায় ১ মাস ধরে উত্তপ্ত মণিপুর। হিংসার সেই আগুনেই ক্রমশ ঘি ঢালছে ইম্ফল উপত্যকার পাহাড়ি এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে থাকা জঙ্গিগোষ্ঠীগুলি। কুকি গোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে মেইতেইদের উপর হামলা চালাচ্ছে তারা। শুক্রবার রাতে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে কেইথেলমাংবি গ্রামে অভিযানে নামে সেনা ও অসম রাইফেলস। উদ্ধার হয় এয়ারগান, কার্তুজের ফাঁকা বাক্স, দেশি পিস্তল সহ বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক। সূত্রের খবর, রবিবার ভোরে রাজধানী ইম্ফল উপত্যকার কাছে অন্তত পাঁচ জায়গায় হামলা চালায় সন্ত্রাসবাদীরা। সেকমাই, সুগনু, কুম্বি, ফায়েং এবং সেরুং সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সেনার সঙ্গে কুকি জঙ্গিদের সংঘর্ষ হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এক পুলিসকর্মী ও তিন নিরীহ নাগরিক। জখম বহু সাধারণ মানুষ। ভাঙচুর করা হয় বিজেপি বিধায়ক খোয়াইরাকপাম রঘুমণি সিংয়ের বাড়িতেও। এরপরই অভিযানে নামে যৌথবাহিনী।

    মেইতেইদের উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত হওয়ার দাবির প্রতিবাদে ৩ মে ইম্ফলে এক বিরাট মিছিল বের করেছিল কুকিরা। সেই মিছিলকে কেন্দ্র করেই রক্তাক্ত সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। তারপর থেকেই উত্তাল সেই রাজ্য। ২৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে সেখানে বন্ধ ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা। পরিস্থিতি একটু নিয়ন্ত্রণে আসার পর সেখানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এতদিন পরে পরিদর্শন কেন, এ নিয়ে বিরোধীদের তোপের মুখেও পড়েছে মোদি সরকার। তাই অমিত শাহের সফরে যাতে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সেজন্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে শনিবার পৌঁছে যান সেনাপ্রধান। রাজ্যপাল অনুসুইয়া উইকে, মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিং ও প্রধান নিরাপত্তা উপদেষ্টা কুলদীপ সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। আর রাজ্যে সেনাপ্রধানের উপস্থিতিতেই চলে জঙ্গিদমন অভিযান।
  • Link to this news (বর্তমান)