দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: ৩২ লক্ষ ৫৬ হাজার। ২ কোটি ৭৩ লক্ষ এবং ৩ কোটি ৬১ লক্ষ। ২০২০-২১ থেকে ২০২২-২৩ আর্থিক বছর। এই তিনটি অর্থবর্ষে সারা দেশে লাফিয়ে বেড়েছে বিনা টিকিটের রেলযাত্রীর সংখ্যা। আরটিআইয়ের জবাবে কার্যত চক্ষু চড়কগাছ। দেখা যাচ্ছে যে, এক বছরেই সারা দেশে বিনা টিকিটের রেলযাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৮৮ লক্ষ। দূরপাল্লার মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনের টিকিটের হাহাকারের মধ্যেই উল্লিখিত পরিসংখ্যানে আরও উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে সরকারিভাবে কোনও মন্তব্য করেনি রেলমন্ত্রক। তবে রেল বোর্ড সূত্রে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে যে, এক্ষেত্রে কড়া নজরদারিও চলছে। যে কারণে জরিমানা আদায়ের পরিমাণও বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরটিআইয়ের জবাবে তিন বছরে জরিমানা আদায়ের পরিমাণও উল্লেখ করেছে রেল। প্রসঙ্গত, তথ্য জানার অধিকার আইনে মধ্যপ্রদেশের আরটিআই অ্যাক্টিভিস্ট চন্দ্রশেখর গৌরকে রেল যে বিনা টিকিটের যাত্রী নিয়ে যে জবাব দিয়েছে, তার মধ্যে বিনা টিকিট এবং ভুল/অবৈধ টিকিটের রেলযাত্রী উভয়েরই উল্লেখ করা হয়েছে। সম্প্রতি এই চন্দ্রশেখর গৌরেরই করা আর এক আরটিআইয়ের জবাবে রেলমন্ত্রক জানিয়েছিল যে, ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ট্রেনের টিকিট কনফার্মড না হওয়ায় ওয়েট-লিস্টে থাকা প্রায় ২ কোটি ৭০ লক্ষ যাত্রী ট্রেনে চড়তেই পারেননি। ফলে প্রত্যাশিতভাবেই প্রশ্ন উঠছে, সারা দেশে দূরপাল্লার ট্রেনগুলিতে যেভাবে ঠাঁই নাই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, তারই অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হিসেবে কি এভাবে বিনা টিকিটেই যেনতেনপ্রকারেণ ট্রেনে উঠে পড়ার প্রবণতা সৃষ্টি হয়েছে? যার ফলে বহু ক্ষেত্রেই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে প্রকৃত টিকিটধারীদের? এ নিয়েও রেলের কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।
তবে বিনা টিকিট অথবা ভুল/অবৈধ টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে জরিমানা বাবদ যে টাকা আদায় হয়েছে, আরটিআই জবাবে সেই পরিসংখ্যানের উল্লেখ করা হয়েছে। এক্ষেত্রেও সমানতালে বৃদ্ধি পেয়েছে জরিমানা আদায়ের পরিমাণ। জরিমানা বাবদ ২০২০-২১ আর্থিক বছরে ১৫২ কোটি ২৪ লক্ষ, ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ১ হাজার ৫৭৪ কোটি ৭৩ লক্ষ এবং ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে প্রায় ২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা আদায় করেছে রেল।