• ‘BJP-র গায়ে হাত দিলে জ্বলে যাবে!’ হুঁশিয়ারি দিলীপের
    এই সময় | ২৯ মে ২০২৩
  • Uttar 24 Parganas : অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলা ও কুড়মি আন্দোলন ইস্যুতে এবার রাজ্য সরকারকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিলেন BJP-র সর্বভারতীয় সহ সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ। সোমবার সকালে নিউটাউন ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমনে আসেন তিনি। সেখানেই তিনি রাজেশ মাহাতোকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে বলেন, “কি রকম দ্বিচারিতা! বলছে কুড়মিরা আক্রমণ করেনি। BJP আক্রমণ করেছে। এই সুযোগে BJP-কে পিষে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। আমরা বলছি খুব সাবধান। BJP-র গায়ে হাত দেবেন না। হাত জ্বলে যাবে। আমি এখানে দাঁড়িয়ে বলে যাচ্ছি, জঙ্গলমহলে যদি একজন BJP কর্মীর গায়ে হাত দেওয়া হয়, তাহলে তৃণমূলের কাউকে ঢুকতে দেব না।

    থাকতে দেব না। বসতে দেব না। এর জের কালীঘাট পর্যন্ত যাবে। বলছে BJP করেছে। আর গ্রেফতার করেছে কুড়মি নেতাকে”। দিলীপ উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, “কি প্রতিহিংসা! প্রমাণ হয়নি তিনি আন্দোলনে ছিলেন। তাতেও রাতারাতি তাঁকে ট্রান্সফার করে দিচ্ছে? জেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। বীরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভেঙেছে? কে দেখেছে? কারা ভেঙেছে?

    এত মিডিয়া। কারও ক্যামেরায় গাড়ি ভাঙার ছবি দেখা গেল না। সব নাটক। অভিষেককে নেতা করার জন্য ইচ্ছা করে গাড়ি ভেঙে এইসব নাটক করা হচ্ছে”। দিলীপ আরও বলেন, “দ্রৌপদী মুর্মু যখন রাষ্ট্রপতি ভোটে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তখন কেন ভোট বয়কট করেছিলেন? তখন উনি আদিবাসী ছিলেন না”?

    এদিন দিলীপ কথা বলেন নতুন পার্লামেন্ট ভবনের উদ্বোধনের অভিজ্ঞতা নিয়েও। বলেন, “ঐতিহাসিক দিন। ভগবান এবং সাধারণ মানুষ যাদের সুযোগ দিলেন এই মুহূর্তের সাক্ষী থাকার, তাঁদের দুর্ভাগ্য, এমন দল থেকে তারা নির্বাচিত, দল তাঁদের এই সুযোগ নিতে দিল না। আমাদের সৌভাগ্য, আমরা এই অমৃতকালে সাংসদ হয়েছি, এবং এই সৌভাগ্য পেয়েছি।

    সৌগত রায় বলছেন, ইচ্ছা নেই। পুরনো ভবন ভালো ছিল। ইচ্ছা নেই না। আসলে ভাগ্যে নেই। আপনারা এমন পার্টি করেন, যে পার্টি দেশের গৌরবের সাক্ষী থাকতে চায় না। এমন পার্টিকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া উচিৎ। অনেক আগেই পরিবর্তন দরকার ছিল। কংগ্রেস আমলে স্পিকার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেস নতুন কিছু করে না।

    সত্যিকারের দেশ স্বাধীন হল গতকাল। আমরা বৃটিশ দের তৈরি ভবন থেকে দেশের তৈরি ভবনে পা রাখলাম”। দিলীপ কথা বলেছেন সিলেবাস থেকে মহম্মদ ইকবাল বাদ যাওয়া নিয়েও। চাঁছাছোলা ভাষায় তিনি বলেন, “উনি পাকিস্তানের দাবি প্রথম তুলেছিলেন। দেশে বিভাজন রেখা তিনিই প্রথম টেনেছিলেন।

    ওকে বয়কট করা উচিৎ। ওর জন্য ভারত পাকিস্তান যুদ্ধ হয়েছে। দেশ ভাগ হয়েছে। লাখ লাখ মানুষের প্রাণ গিয়েছে। পাকিস্তান যে অনুন্নত দেশ, তার এটা একটা বড় কারণ। এই বিভাজনের জন্যই আজ পাকিস্তান দেউলিয়া হয়ে গিয়েছে”। ১২ই জুন পাটনায় বিরোধীদের যে মেগা বৈঠক রয়েছে তা নিয়ে তিনি বলেন, “মনে আছে ২০১৯ সালে ব্রিগেডে একটা সভা হয়েছিল?

    সব দল এসে মাছ ভাত আর রসগোল্লা খেয়ে গিয়েছিল। ফল কি হয়েছিল? মোদীজি ৩০০ পেরিয়ে গিয়েছিলেন। আর ওই বৈঠকের যে মূল হোতা ছিলেন তাঁর ১২ টা আসন কমে গিয়েছিল। তারা যেন সতর্ক থাকেন। আমি বলে দিচ্ছি, যারা এইভাবে দেশের গরিমাকে মোদী বিরোধিতার নাম করে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করছেন, তারা যেন মনে রাখেন যে যে মোদীর পিছনে লেগেছে, তারা ডুবেছে, সেই নেতা ডুবেছে, সেই দেশ ডুবেছে। ইমরান খানকে দেখুন”।

    অর্জুন সিংয়ের বেসুরো হওয়া নিয়ে দিলীপ বলেন, “উনি ভুক্তভোগী। উনি নিজে ক্রিমিনালদের শিকার। পুলিশের অত্যাচারের শিকার। উনি ৩ বছর আমাদের সঙ্গে ছিলেন। অত্যাচারের মাত্রা এতো বেড়ে গিয়েছিল, যে উনি বাধ্য হয়ে দল বদলেছেন। তিনি বেঁচে গিয়েছেন। কিন্তু সাধারণ মানুষের কোনও নিরাপত্তা নেই”।

    মুর্শিদাবাদে ফের বোমাবাজি নিয়েও কটাক্ষ করেন তিনি। বলেন, “বোমাবাজি পশ্চিমবঙ্গে কোনও খবর না। যেদিন বোমা ফাটবে না, সেটাই খবর। তৃণমূল অবৈধ কারখানা খুলেছে। পুলিশ টাকা নিচ্ছে। এই বোমা নানা জায়গায় সাপ্লাই হয়। কিভাবে সেই বোমা ব্যবহার হচ্ছে, সেটা এখন তৃণমূল হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। সেই বোমার আঘাতে তাদের লোকেরাই মারা যাচ্ছে”।

    নব জোয়ারের পালটা নাকি BJP-র জন সংযোগ অভিযান শুরু হচ্ছে। এই নিয়ে দিলীপ বলেন, “ওটা নব জোয়ার নয়। বিক্ষোভ জোয়ার। ধরনা জোয়ার। আমরা মোদী সরকারের ৯ বছরের সাফল্যের খতিয়ান নিয়ে মানুষের কাছে যাব। আগামী দিনে আমরা কেমন ভারত গড়তে চাই, সেটাও মানুষকে বলব”।
  • Link to this news (এই সময়)