• নেতাজির অনুপ্রেরণা সাভারকর! পর্দায় ইতিহাস বিকৃতির অভিযোগ বসু পরিবারের
    ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস | ২৯ মে ২০২৩
  • ‘সাভারকারের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু’। রনদীপ হুডা পরিচালিত সাভারকার সিনেমার টিজারে আরও লেখা হয়েছে সাভারকরের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন শহিদ ক্ষুদিরাম ও শহিদ ভগৎ সিংও। এই বিষয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছে নেতাজির পরিবার। নেতাজির পরিবারের সদস্য চন্দ্র বসু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ‘নেতাজি ও সাভারকরের আদর্শ ডায়ামেট্রিক্যাল বিপরীত। ইতিহাসকে বিকৃত করার অপচেষ্টা। বাক স্বাধীনতা মানে ইতিহাসকে বিকৃত করা নয়। আজকের প্রজন্মকে ভুল শেখানো হবে। সেন্সর বোর্ড কীভাবে পাশ করছে? সাভারকরকে অন্যভাবে দেখানোর চেষ্টা করছে। এটা সাংঘাতিক ক্ষতি করছে ভুল ইতিহাস প্রচার করে।’ নেতাজির আদর্শের সঙ্গে সাভারকারের আদর্শের কোনও মিল নেই তা একটা বাচ্চা ছেলেও জানে, বলছেন চন্দ্র বসু।

    রনদীপ হুডার সিনেমার ওই টিজার নিয়ে তীব্র বিতর্ক শুরু হয়েছে। হিন্দু মহাসভার বিনায়ক দামোদর সাভারকরের সঙ্গে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর আদর্শের কোনও মিল নেই বলেই চন্দ্র বসুর দাবি। সিনেমায় টিজারে ওই লেখা নিয়ে চন্দ্র বসু বলেন, ‘জানি না কোথা থেকে তিনি এই ইতিহাস পাচ্ছেন। নেতাজি সম্পর্কে আমি যা শুনেছি আমার পিতা অমিয়নাথ বসু খুব কাছের মানুষ ছিলেন। একইঘরে ৬ বছর ধরে বাস করেছেন আমাদের উডবার্ন পার্কের বাড়িতে। এমন কথা কোনও দিন শুনিনি।’

    তিনি আরও বলেন, ‘নেতাজির নিজস্ব লেখা রয়েছে তাঁর অসম্পূর্ণ জীবনী ইন্ডিয়ানস স্ট্রাগল-এ। সেখানে স্পষ্ট লেখা আছে nothing can be expected from mr savarkar and md. ali jinnah. আমি যদি বলতেও চাই নেতাজি ও সাভারকরের ভাল বন্ধুত্ব ছিল আমি সেটা কি করে বলব। নেতাজির তো নিজের লেখা রয়েছে। আর একটা জায়গায় নেতাজি বলেছেন, nothing can be expected from hindu mahasabha or muslin leagr. এটাতো পুরো বোঝা যাচ্ছে।’

    শুধু নেতাজি সুভাষ নয়, শহিদ ভগৎ সিং ও শহিদ ক্ষুদিরাম বসুও সাভারকরের আদর্শে অনুপ্রাণিত একথা মানতে নারাজ চন্দ্র বসু। তিনি বলেন, ‘শহিদ ভগৎ সিং ও শহিদ ক্ষুদিরাম বসু একেবারে চরম বাম নেতৃত্ব দিয়েছে। সাভারকর সম্পূর্ণ দক্ষিণপন্থী। একবার নেতাজির সঙ্গে সাভারকারের সাক্ষাৎ হয়েছিল বলেও তিনি মেনে নিয়েছেন। তাঁর দাবি, নেতাজি তো অনেকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। তার মানে এই নয় যে তাঁকে সমর্থন করবেন। একেবারে বাজে কথা। নেতাজির আধ্যাত্মিক গুরু ছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ ও রাজনৈতিক গুরু ছিলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস। এই দুই মহাপুরুষ নেতাজিকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বরং নেতাজি সাভারকরের বিরোধিতা করেছিলেন। বরং চন্দ্র বসু প্রশ্ন তুলেছেন, সাভারকর নিজের জায়গায় থাক। ক্র্যাচ দেওয়ার দরকার নেই। ১১ বছর সেলুলার জেলে ছিলেন। ওখানে বহু বাঙালি ও পঞ্জাবি ফাঁসির মঞ্চে ঝুলেছেন। কিন্তু সাভারকার ছাড়াও পেয়েছেন। ব্রিটিশকে কাউকে সহজে ছেড়ে দেয়? কেন ছাড়ল?’
  • Link to this news (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)