• শৈলশহরে চিরঘুমে কিংবদন্তী সেনা অফিসারকে দেশে ফেরাচ্ছে আমেরিকা
    এই সময় | ৩০ মে ২০২৩
  • মার্কিন সামরিক ইতিহাসে অন্যতম বড় নাম হ্যারি ক্লেইনবেক পিকেট। আমেরিকার সেনাবাহিনীতে মেজর জেনারেল পদে ছিলেন তিনি। দুই বিশ্বযুদ্ধেই অসামান্য বীরত্বের জেরে রীতিমতো কিংবদন্তীতে পরিণত হন পিকেট।

    এহেন মার্কিন সেনা অফিসারের জীবনের শেষ দিন কেটেছিল দার্জিলিঙে। মৃত্যুর পর শৈলশহরেই সমাধিস্থ করা তাঁকে। প্রয়াণের ৫৮ বছর পর সেই বীর সেনানী পিকেটকে ঘরে ফেরাতে চলেছে আমেরিকা! এই ইস্যুতে ইতিমধ্যেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন মার্কিন প্রশাসনের কর্তা-ব্যক্তিরা। মেজর জেনারেল পিকেটকে পুনঃসমাধিস্থ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। আমেরিকার আর্লিংটন জাতীয় সমাধিক্ষেত্রে শায়িত থাকবে বীর সেনানীর কফিন।

    উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হওয়ায় অন্তত দু’দশক পর বাংলায় পা রাখেন কিংবদন্তী এই মার্কিন সেনা অফিসার। সালটা ছিল ১৯৬৫। এদেশে এসেই সোজা দার্জিলিং গিয়েছিলেন তিনি। তারপর আর দেশে ফেরা হয়নি। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। কলকাতার মার্কিন কনসাল জেনারেল মেলিন্ডা পাভেক বলেন, “জনগণের সেবকদের রক্ষা করতে আমেরিকার সরকার বদ্ধপরিকর। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মেজর জেনারেল পিকেটকে, তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিয়ে দিতে পারব আমরা।” পাশাপাশি, পিকেটকে দেশে ফেরাতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সহযোগিতার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।

    মার্কিন নৌসেনায় ১৯১৩-য় কর্মজীবন শুরু করেন মেজর জেনারেল পিকেট। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন ১৯১৭-র এপ্রিলে গুয়ামে জার্মান ক্রুজার এসএমএস করমোরান দখলে বড় ভূমিকা নেন তিনি।

    পরবর্তীকালে হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জের পার্ল হারবারের নৌসেনার ব্যারাকের কমান্ডিং অফিসার নিযুক্ত হন পিকেট। ১৯৪১-র ৭ ডিসেম্বর আমেরিকার এই নৌঘাঁটিতে হামলা চালায় জাপানি বিমান বাহিনী। ধ্বংস হয়ে যায় একাধিক মার্কিন যুদ্ধজাহাজ।

    ওই সময় অল্প কয়েকজন সৈনিক নিয়ে পাল্টা প্রত্যাঘাত হানেন পিকেট। বেশ কয়েকটি বোমারু বিমানকে গুলি করে নামাতে সক্ষম হয়েছিলেন তিনি। এহেন দুঃসাহসিক মার্কিন সেনা অফিসারের সমাধি রয়েছে দার্জিলিংয়ের সিংটোমে। তাঁর সমাধি খুঁজে পেতে শৈলশহরের জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করেন কলকাতার মার্কিন কনসুলেট জেনারেলের আধিকারিকরা। এছাড়াও International Funeral Service-র জন পিন্টোর সঙ্গেও যোগাযোগ করেন তাঁরা।

    প্রসঙ্গত, পিকেটকে দেশে ফেরাতে মার্কিন কনসুলেটের অনুরোধে শেষ পর্যন্ত রাজি হয়েছে নবান্ন। তাঁর কফিন সমাধি থেকে তোলার অনুমতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। অন্যদিকে নবান্নের তরফে এই অনুমতি মিলতেই বেজায় খুশি মার্কিন কনসুলেট। “যে ভাবে এই কাজে সহযোগিতা পেয়েছি, তার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে ধন্য়বাদ। ভারত আমাদের কৌশলগত সঙ্গী। আর আমরা দুই দেশই তাঁদের নাগরিকদের খেয়াল রাখি।”

    বলেন কনসাল জেনারেল পাভেক।
  • Link to this news (এই সময়)