• Wiener Zeitung: একটি খবরের কাগজের মৃত্যু! ছাপা বন্ধ হল বিশ্বের প্রাচীনতম সংবাদপত্র...
    ২৪ ঘন্টা | ০৪ জুলাই ২০২৩
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: একটি খবরের কাগজ। যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৭০৩ সালে। তখন অবশ্য অন্য নাম ছিল-- 'ভিইনারিসেস ডায়ারিয়াম'। ১৭৮০ সালে নাম বদলে রাখা হল 'ভিইনার জেইটুং'। ১৮৫৭ সালে অস্ট্রিয়ার তৎকালীন সম্রাট প্রথম ফ্রাঞ্জ জোসেফ বেসরকারি পাক্ষিক এই পত্রিকাটিকে সরকারি মালিকানায় নিয়ে আসেন। সংবাদপত্রটির প্রথম সংস্করণের সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছিল-- কথার ফুলঝুরি নয়, কাব্যিকতাও নয়, আমরা সংবাদের সরল বিবরণ দিতে চাই! কিন্তু সেই সারল্য, সেই দীপ্তযাত্রা, সেই নিখাদ তথ্যনিষ্ঠার জার্নি অবশেষে থমকে গেল। মৃত্যু হল একটি খবরের কাগজের!

    বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো অস্ট্রিয়ার এই খবরের কাগজ 'ভিইনার জেইটুং' তাদের সর্বশেষ দৈনিক সংস্করণটি ছেপে ফেলল। আর এর মধ্য দিয়েই ৩২০ বছরের পুরনো এই পত্রিকাটির মুদ্রণ পাকাপাকি বন্ধ হয়ে গেল! গত এপ্রিলে আইন পাস করে শতাব্দীপ্রাচীন পত্রিকাটির ছাপানো বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যার প্রতিবাদে সে সময় অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনার রাস্তায় শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেছিলেন। এপ্রিলে নতুন ওই আইন প্রণয়নের সময় জানা যায়, উইক ডেজে সংবাদপত্রটির প্রচারসংখ্যা ছিল প্রায় ২০ হাজার, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলিতে প্রায় ৪০ হাজার!

    দীর্ঘ তিনশো বছরেরও বেশি সময়ব্যাপী মুদ্রণের ইতিহাসে 'ভিইনার জেইটুং'-এর প্রকাশনা বন্ধ হয়েছিল মাত্র একবার। ১৯৩৯ সালে হিটলার বাহিনী অস্ট্রিয়া দখলের পর নাৎসিরা সংবাদপত্রটির প্রকাশনা বন্ধ করে দেয়। ৬ বছরের বিরতির পরে ১৯৪৫ সালে ফের কাগজটির ছাপা শুরু হয়েছিল।'ভিইনার জেইটুং' কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুদ্রণ বন্ধ হয়ে গেলেও তাদের কাগজটির অনলাইন সংস্করণ থাকবে। শুধু তাই নয়, এক মাস পর পর একটি করে মুদ্রিত সংস্করণও প্রকাশ করার চেষ্টা করা হবে সংস্থার তরফে।এপ্রিলের শেষে অস্ট্রিয়ার পার্লামেন্টে একটি আইন পাস করে ভিয়েনাভিত্তিক এই সংবাদপত্রটির মুদ্রণ বন্ধ করে অনলাইনে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে পত্রিকাটির মুদ্রিত সংস্করণ প্রকাশ অলাভজনক হয়ে পড়ে। পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তের ফলে 'ভিইনার জেইটুং'-এর মুদ্রিত সংস্করণে অর্থের বিনিময়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম ঘোষণার বাধ্যবাধকতাও উঠে যায়। এতে সরকারি প্রকাশনার মার্যাদা হারায় এটি। পার্লামেন্টে মুদ্রিত সংস্করণ বন্ধের আইন পাসের পর পত্রিকাটি ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়ে। এক ধাক্কায় আয় প্রায় দু'কোটি মার্কিন ডলার কমে যায়। আয় কমে যাওয়ায় কাগজটি তাদের ৬৩ জন কর্মী ছাঁটাই করে, সম্পাদকীয় বিভাগের কর্মী ৫৫ থেকে কমে হয় ২০।২০০৪ সালে 'ওয়ার্ল্ড অ্যাসোসিয়েশন অব নিউজ পাবলিশার্স' সংবাদপত্র সম্পর্কিত একটি সমীক্ষা করেছিল। সেই সমীক্ষায় 'ভিইনার জেইটুং'কে বিশ্বে চালু থাকা পত্রিকাগুলির মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। 
  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)