নিজস্ব প্রতিনিধি, সিউড়ি: সিপিএম ও কংগ্রেসকে মাঠে নামিয়ে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করার ছক কষেছে বিজেপি। যে কোনও উপায়ে লোকসভার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দুর্বল করার জন্য চক্রান্ত করছে। সিপিএম-কংগ্রেসকে সামনে রেখে কলকাঠি নাড়ছে বিজেপি। সোমবার দুবরাজপুরের তৃণমূলের জনসভা থেকে কর্মী-সমর্থকদের একথা বলে সতর্ক করেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
এদিন দুবরাজপুরের সারদা ময়দানে দুপুর ২টো থেকে কর্মিসভা শুরু হয়। সেখানে প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী ফোনের মাধ্যমে উপস্থিত কর্মীদের সামনে বক্তব্য রাখেন। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হওয়ার পর ফিরহাদ ভাষণ দেন। পুরমন্ত্রীর গলায় উঠে আসে ‘অপারেশন লোটাস’-এর কথা। মহারাষ্ট্রের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, একুশের বিধানসভা ভোটে বিজেপি বাংলায় একশোর বেশি আসন পেলেই ‘অপারেশন লোটাস’ শুরু করত। কিন্তু বাংলার মানুষ বিজেপিকে সেই সুযোগ দেয়নি।
এদিন বিজেপি পাশাপাশি সিপিএম ও কংগ্রেসকে একযোগে নিশানা করেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী। ফিরহাদ বলেন, ১২ বছর পর সিপিএমের ঘুম ভেঙেছে। এখন একটু উঁকি দিয়ে বলছে, আমাদেরও ভোট দাও। কয়েকজন টুপিওয়ালাকে দলে ভিড়িয়ে নিয়েছে। ভাবছে, এসব করে মমতাকে দুর্বল করবে। আগের দিন এখানে এক বাচ্চা মেয়ে এসেছিল। বলি, তুমি এখন পড়াশোনা করো। তোমাদের গুরু বিমানদা, সেলিমদার থেকে একটু শুনে নিও। আর একজন আছেন। তিনি কংগ্রেসের মুর্শিদাবাদের ডন। তিনি আবার করোনার সময় মুর্শিদাবাদের মানুষের পাশে না থেকে দিল্লিতে বসেছিলেন। শুধু টিভিতে ভাষণ দিতেন। মানুষ এঁদের কোনওদিন বিশ্বাস করবে না।
এবার যাঁরা টিকিট পাননি তাঁদেরও আশ্বস্ত করেন পুরমন্ত্রী। তিনি বলেন, যদি কেউ সময় দিয়ে দল করে থাকেন, সৎ হয়ে থাকেন, তাহলে তাঁরজন্য মুখ্যমন্ত্রী অবশ্যই বড় কোনও পদ ভেবে রেখেছেন। তাই পঞ্চায়েত ভোটে টিকিট না পাওয়ার জন্য অভিমান করে কেউ বসে থাকবেন না। বিরোধীদের চক্রান্তের বিরুদ্ধে সবাই একযোগে লড়াই করুন।
এদিন বিকেলে ফিরহাদ খয়রাশোল ব্লকের লোকপুর, মহম্মদবাজারের ভাড়কাটা উদয়ন মাঠে জনসভা করেন। প্রার্থীদের সঙ্গেও কথা বলেন। ভোটের দিন সুষ্ঠুভাবে ভোট পরিচালনা করতে কর্মীদের নির্দেশ দেন। এদিন মন্ত্রী ফিরহাদ ছাড়াও জেলার কোর কমিটির সদস্যরা জনসভাগুলিতে উপস্থিত ছিলেন। যদিও ফিরহাদের বার্তা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, মনোনয়ন জমা করার আগে গ্রামে গ্রামে সন্ত্রাস চালিয়ে এখন বাহবা কুড়নো হচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে ভোট করানোর ইচ্ছা ওদের নেই। বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি দীপক দাস বলেন, জেলার নেতা যে পথে গিয়েছে, ভাইয়েরাও সেই পথে যাবে। পাহাড়প্রমাণ দুর্নীতি হয়েছে। সে সবের প্রমাণও হবে। আর ক’দিন এই দলটা থাকে, সেটাই দেখার!