• এবার বাড়িতে বসেই রেশন পাবেন সবাই বাঘমুণ্ডিতে জনসভায় অভিষেক
    বর্তমান | ০৪ জুলাই ২০২৩
  • সুকান্ত মাহাত, বাঘমুণ্ডি: এবার বাড়িতে বসেই রেশন পাবেন রাজ্যবাসী। সরকারের প্রতিনিধিরা বাড়িতে গিয়ে রেশন সামগ্রী পৌঁছে দেবেন। পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে এসে সোমবার বাঘমুণ্ডির কালিমাটির জনসভায় এমনটাই জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি একথা শোনা মাত্রই সভাস্থল উল্লাসে ফেটে পড়ে। করতালি দিয়ে এই সিদ্ধান্তে স্বাগত জানায় উপস্থিত জনতা। দুয়ারে রেশন প্রকল্প ইতিমধ্যেই জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। এবার বাড়িতে বসেই রেশন পাওয়ার আশ্বাসে বেজায় খুশি সকলে।

    সোমবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ অভিষেক হেলিকপ্টারে বাঘমুণ্ডিতে আসেন। তবে তার অনেক আগেই ভরে গিয়েছিল সভাস্থল। অভিষেক বলেন, আগে দুয়ারে রেশন শুরু হয়েছিল। তা নিয়ে অনেকে বাধা দিয়েছিল। কিন্তু তাদের কোনও লাভ হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের রায় আমাদের পক্ষেই এসেছে। তাই দুয়ারে রেশন চালু রাখা সম্ভব হয়েছে। এবার বাড়িতে বসেই রেশন পাবেন বাসিন্দারা।

    কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। অভিষেক বলেন, বাংলার মানুষের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে মোদি সরকার। ১০০দিনের কাজ থেকে আবাস যোজনার টাকা, সব আটকে রেখেছে। পঞ্চায়েত ভোট মিটে যাওয়ার দেড় মাসের মধ্যে দিল্লিতে গিয়ে বাংলার মানুষের টাকা ছিনিয়ে আনব। তারজন্য কোর্টের করিডরে যাব। জনতার দরবারেও যাব। এবার আন্দোলন আর বাংলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। 

    তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলছেন তিনি নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে গ্যারেন্টার। কিন্তু, ইডি, সিবিআই যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে, তাদের নিয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ছে বিজেপি। যারা আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ডুবে আছে তাদেরই দলে নিচ্ছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় সরকার সবার কাছে দু’টো রাস্তা খুলে রেখেছে। হয় বিজেপি কর, তা না হলে জেলে যাও। তৃণমূলের নেতারা আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেননি। তাঁরা মাথা উঁচু করে ছিলেন। তাই তাঁরা এখন জেলে আছেন। ২০১৯সালের নির্বাচনে পুরুলিয়া থেকে বিজেপি জিতেছিল। ওদের অহঙ্কার ভাঙতে হবে। দু’লক্ষ ভোটে আগে জিতেছিল। এবার দু’লক্ষ ভোটে হারাতে হবে।

    অভিষেক বলেন, সৌজন্যের রাজনীতি অনেক হয়েছে। এবার ওদের চোখের সামনে বাংলার টাকা ছিনিয়ে আনব। পাঁচ হাজার কোটি টাকা দিয়ে নিজের প্রচার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। আট হাজার টাকা দিয়ে নিজস্ব বিমান কিনেছেন। এই সব টাকা বাংলার টাকা। বাংলার টাকা নিয়ে বিজেপি শাসিত রাজ্যে টাকা দেওয়া হচ্ছে। ওই টাকা কারও পৈতৃক সম্পত্তি নয়। 

    পুরুলিয়ায় রাজ্য সরকারের উন্নয়নের পরিসংখ্যান তুলে ধরে তিনি বলেন, শুধুমাত্র পূর্ত, সেচ, পঞ্চায়েত ও পিএইচই দপ্তর মিলিয়ে এই জেলায় প্রায় পাঁচহাজার কোটি টাকার কাজ হয়েছে। জেলার প্রায় ছ’লক্ষ মহিলা লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাচ্ছেন। নিজের অধিকারের স্বার্থেই এবার লড়াই করতে হবে। আগে বারবার বলত, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার নাকি ভিক্ষা। এখন তা নিয়ে বিরোধী দলনেতা ও বিজেপির রাজ্য সভাপতি প্রতিযোগিতা শুরু করেছেন। ক্ষমতায় এলে ওরা দু’হাজার টাকা দেবে বলছে। গোটা দেশে বিজেপি ১২টি রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে। তার মধ্যে যদি একটি রাজ্যেও সব মহিলাকে এক হাজার টাকা করে দিতে পারে তো রাজনীতি ছেড়ে বিদায় নেব। কথা দিয়ে পালিয়ে যাওয়াই হচ্ছে বিজেপির কালচার।
  • Link to this news (বর্তমান)