• El Nino And Positive IOD : এল নিনোকে বধিবে যে ভারত মহাসাগরে বাড়িছে সে! জুলাই-অগাস্ট মাসে বর্ষার ডবল ডোজ?
    এই সময় | ০৪ জুলাই ২০২৩
  • চলতি বর্ষার মরশুমে ভিলেন এল নিনো। স্বাভাবিক বৃষ্টিতে ঘাটতি। তবে এই পরিস্থিতিতে একমাত্র আশার আলো ভারত মহাসাগরের ডাইপোল। এল নিনোর মোকাবিলা করতে পারে একমাত্র এই ডাইপোলই। এটি ভারত মহাসাগরের বায়ুমণ্ডলের একটি মিথস্ক্রিয়া।

    ভারত মহাসাগরের উপর একটি বায়ুমণ্ডলের মিথস্ক্রিয়া এল নিনোর প্রভাবকে দুর্বল করে দিতে সক্ষম। ১৯৯৭ সালে এই ঘটনাই ঘটিয়েছিল ভারত মহাসাগরীয় এই ডাইপোল। ফের একবার কি খেল দেখাতে পারবে এটি?

    ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপোল গবেষকরা জানাচ্ছেন, এল নিনো ইতিমধ্যেই ভারত মহাসাগরে শক্তিশালী রূপ ধারণ করে ফেলেছে। তবে ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপোল এখনও সেভাবে ছাপ তৈরি করতে পারেনি। এ প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, বিশ্বের অধিকাংশ আবহাওয়া গবেষণা সংস্থার অনুমান, আগামী কয়েকমাসের মধ্যেই ভারত মহাসাগরের এই ডাইপোল সক্রিয় ভূমিকা নেবে।

    IMD-র তরফে জুলাই মাসের শুরুতেই এই নিয়ে সুখবর দেওয়া হয়েছে । জানানো হয়েছে, চলতি মরশুমে এল নিনোর মোকাবিলায় হাজির হবে ইন্ডিয়ান ওশান ডাউপোল। এর সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ। জুলাই-অগাস্ট মাসে এই ডাইপোল হাজির হতে চলেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

    কী ভাবে এল নিনোকে খতম করবে ডাইপোল? দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর পশ্চিম উপকূলে ভারত মহাসাগরের পূর্ব অংশ, ফিলিপিন্স এবং ইন্দোনেশিয়ার কাছে পশ্চিমাংশের থেকে অপেক্ষাকৃত কম উষ্ণ। এর কারণ হাওয়া পূর্ব থেকে পশ্চিমে বয়ে চলে। যা ইন্দোনেশিয়া উপকূলের দিকে উষ্ণ হাওয়া নিয়ে যায়। এর জায়গা নিয়ে নেয় সমুদ্রের তলভাগ থেকে আসা ঠান্ডা বায়ু। কিন্তু, এল নিনো তৈরি হলে এর ঠিক বিপরীত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঠান্ডা বায়ুর বদলে উষ্ণ হাওয়ার পরিমাণ বাড়তে থাকে। এর ফলে ভারত মহাসাগরের পূর্বভাগ অপেক্ষাকৃত বেশি উষ্ণ হতে শুরু করে।

    আবার এল নিনোর বিপরীত পরিস্থিতি তৈরি হয় লা নিনার সময়। ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপোলকে সাধারণত ইন্ডিয়ান নিনো বলা হয়ে থাকে। ইন্দোনেশিয়া এবং মালয়শিয়ার উপকূলের মাঝামাঝি অংশে এই ডাইপোল তৈরি হয়। যা আফ্রিকান উপকূল এবং সোমালিয়ার দক্ষিণ অংশ পর্যন্ত বিস্তৃত হয়। সোমালিয়ার উপকূল অংশে ভারত মহাসাগরের পূর্বভাগ উষ্ণ হতে শুরু করলে এই ডাইপোলের প্রভাব ইতিবাচক হিসেবে ধরা হয়। ভারত মহাসাগরের দক্ষিণভাগে ঠান্ডা হলে সেটিকে ডাইপোলের নেতিবাচক প্রভাব হিসেবে ধরা হয়।

    এল নিনোর সময়ই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপোলের ইতিবাচক প্রভাব তৈরির সম্ভাবনা বাড়ে। দেশে বৃষ্টির ঘাটতি কমবে? ডাইপোলের ইতিবাচক প্রভাবের জেরে বর্ষার মরশুমে বৃষ্টির ঘাটতি কমে আসে। ভারতে বৃষ্টি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই বৃষ্টি কমতে শুরু করে ইন্দোনেশিয়া এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিতে। প্রশান্ত মহাসাগরে যখন শক্তিশালী এল নিনো প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করেছে। ঠিক তখনই ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপোলের ইতিবাচক প্রভাব তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে। ফলে আশার আলো দেখছেন গবেষকরা।

    ২০১৯ সালেও এই ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপোলের জেরে বর্ষার ঘাটতি কিছুটা হলেও কমেছিল। জুন মাসে সে বছর ৩০ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি ছিল। তৈরি হয়েছিল শক্তিশালী এল নিনো। কিন্তু, পরবর্তীকালে ইন্ডিয়ান ওশান ডাইপোলের জেরে তার প্রভাব কেটে যায়।
  • Link to this news (এই সময়)