• Opposition Party Meeting : সংকটেও একজোট, বার্তা কংগ্রেস, তৃণমূল, আপের
    এই সময় | ০৪ জুলাই ২০২৩
  • এই সময়, নয়াদিল্লি: মহা-ক্রাইসিসে 'স্ট্রং-ম্যান' পাওয়ারের পাশে থাকার বার্তা রবিবারই দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় , সনিয়া গান্ধী, মল্লিকার্জুন খাড়গেরা। তারপরেও বেঙ্গালুরুতে ১৩-১৪ জুলাই অনুষ্ঠেয় বিজেপি-বিরোধী দলগুলির বৈঠক স্থগিত হওয়ার খবর সামনে আসায় প্রবল রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়েছিল। তবে এনসিপি-র এই টানাপড়েনের সুযোগ যাতে কোনওভাবেই বিজেপি না-নিতে পারে এবং জোট শিবিরে ফাটল ধরেছে--এমন বার্তা বাইরে না-যায়, তা নিশ্চিত করতে তৎপর বিরোধীরা। উল্টে বিরোধীরা যে এনসিপি সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের পাশেই আছে এবং ২০২৪-এ তারা ঐক্যবদ্ধ ভাবেই বিজেপির মোকাবিলা করতে চায়, তা প্রমাণ করতে দেরি না-করে সোমবারই বেঙ্গালুরুতে জোটের পরবর্তী বৈঠকের দিনক্ষণ ঘোষণা করা হলো।

    এদিন কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক(সংগঠন) কেসি বেণুগোপাল টুইটে লেখেন, 'পাটনার সামিটের সাফল্যের পরে আমরা বেঙ্গালুরুতে বৈঠক বসব ১৭-১৮ জুলাই৷ অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে পরিচালিত ফ্যাসিস্ট সরকারকে পরাজিত করার লক্ষ্যে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ৷ দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্যও আমরা ঐক্যবদ্ধ৷' বেণুগোপালের টুইটকে রিটুইট করে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও'ব্রায়েনের সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, 'সকলের তরে সকলে আমরা৷' প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের টুইট, 'মহারাষ্ট্রের এই পালাবদল আদতে বিরোধী ঐক্যকে আরও মজবুত করবে৷' মমতা, সনিয়া, খাড়গের পর এদিন পাওয়ারের সঙ্গে ফোনে কথা বলে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনও।

    সবচেয়ে বড় কথা, বিরোধী দলগুলি অনেকটা একই সুরে এই পাওয়ার ক্রাইসিসের পিছনে বিজেপি তথা নরেন্দ্র মোদীরই হাত দেখছে। এনসিপি সুপ্রিমো নিজেও রবিবার তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সোমবার মোদীকে নিশানা করে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যেপাধ্যায় বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী বলছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি গ্যারান্টার। অজিত পাওয়ার, প্রফুল প্যাটেলদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির মামলা চলছে।

    অথচ তাঁদের নিয়েই মহারাষ্ট্রে সরকার গড়ছে বিজেপি। এরপরও মোদীরা বলবেন, তাঁরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে গ্যারান্টার!' এরপর বাংলার প্রসঙ্গ টেনে তাঁর সংযোজন, 'যাঁদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তাঁদেরই বিজেপি প্রটেকশন দিয়ে দলে নিচ্ছে। এ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে কাগজে মুড়ে টাকা নিতে দেখা গিয়েছিল, তিনিও বিজেপিতে। কোনও ব্যবস্থা নেয়নি সিবিআই, ইডি।' অরবিন্দ কেজরিওয়ালের দল আম আদমি পার্টিও 'চুটকিতে দুর্নীতির দাগ মোছা'র কটাক্ষ করে নরেন্দ্র মোদীর মুখ-সহ গেরুয়া শিবিরের আস্থাভাজন এবং বিভিন্ন দুর্নীতিতে অভিযুক্ত নেতাদের ছবি পোস্ট করেছে৷

    এই ছবিতে ইয়েদুরাপ্পা, শিবরাজ সিং চৌহান, হিমন্ত বিশ্বশর্মার সঙ্গে দেখা গিয়েছে শুভেন্দু অধিকারীকেও৷ দিল্লি অর্ডিন্যান্স ইস্যুতে পাটনার বৈঠকেই আপের সঙ্গে কংগ্রেসের টানাপড়েন হলেও একই সুরে জয়রাম রমেশ একটি টুইট করেছেন যেখানে নরেন্দ্র মোদীর ছবি-সহ ওয়াশিং পাউডার দেখানো হয়েছে৷ তাঁর অভিযোগ, 'গতকাল যখন বিজেপির ওয়াশিং মেশিন আবার সক্রিয় হলো মুম্বইয়ে তাদের সঙ্গী আইসিইকে (আয়কর-সিবিআই-ইডি) সঙ্গে নিয়ে, তখন মোদী ঘনিষ্ঠরা বিরোধী ঐক্যের স্মৃতিচারণ করতে শুরু করে দিয়েছিল৷ কিন্তু তারা হতাশ হয়েছে৷ কারণ, বিরোধীরা তাঁদের অবস্থান ছেড়ে এক ইঞ্চিও নড়েননি৷'

    পাটনার বৈঠকের পরও দিল্লি অর্ডিন্যান্স ইস্যুতে কংগ্রেসের সঙ্গে আপের বরফ না-গলায় বেঙ্গালুরু বৈঠকে কেজরিওয়ালরা যোগ দেবেন কি না--তা নিয়ে সংশয় ছিল এবং তা এখনও কাটেনি। এর উপর আবার শরদ ছাড়াও যে প্রফুল প্যাটেল এনসিপির অন্যতম প্রধান মুখ ছিলেন--তিনিই রবিবার মহারাষ্ট্রে একনাথ শিন্ডে মন্ত্রিসভায় শপথ নিয়ে ফেলায় বেঙ্গালুরু বৈঠকের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছিল।

    এই পরিস্থিতিতে শুধু বৈঠকের দিনক্ষণ তড়িঘড়ি চূড়ান্ত করাই নয়, বিরোধীরা সমস্বরে বিজেপি তথা মোদীকে পাল্টা আক্রমণেরও রাস্তা নিল। নাম না-করে প্রফুলকে কটাক্ষ করেছেন জয়রাম ও ডেরেক। জয়রামের টুইট রিটুইট করে ডেরেকের কটাক্ষ, 'সমস্ত ওয়াশিং মেশিন এবং পাউডার মুম্বইয়ের ওরলি এবং গোটা মহারাষ্ট্রে বিক্রি হয়ে গিয়েছে৷' সূত্রের খবর, বেঙ্গালুরুর বৈঠকের আলোচ্যসূচিতে মহারাষ্ট্র-উত্তর পরিস্থিতির পাশাপাশি অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিষয়টিও থাকতে পারে। এনিয়ে তৃণমূল শিবিরের অভিযোগ, 'ইউসিসি বা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি হলো আনরিটেন বা অলিখিত দেওয়ানি বিধি৷ দল শুধুমাত্র সাংবিধানিক বিধিই মেনে চলবে৷'
  • Link to this news (এই সময়)