• ‘অগ্নিমূল্য বাজার, মানুষকে ভাতে মারার তোড়জোড়’ দায়ী মেহেঙ্গাই ম্যান মোদিই: কংগ্রেস
    বর্তমান | ০৫ জুলাই ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি,  নয়াদিল্লি: চাল, ডাল, আটা, আদা, রসুন, আলু, পেঁয়াজ, টম্যাটো, জিরে, লঙ্কা... বেড়েই চলেছে দাম। বলছে খোদ মোদি সরকার। বর্ধিত দামের আগুনে মানুষের অবস্থা নাজেহাল। বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানির দাম কমলেও ভারতে আম আদমির সুরাহা নেই। প্রধানমন্ত্রীর সাধের ‘অমৃতকাল’ আদতে ‘গরলকালে’র সমান বলেই সাধারণ গৃহস্থের অভিযোগ। গোটা পরিস্থিতির জন্য প্রধানমন্ত্রীর দিকেই আঙুল তুলেছে বিরোধীরা। কংগ্রেস তো মঙ্গলবার আরও একধাপ এগিয়ে নতুন নাম দিয়েছে নরেন্দ্র মোদির—মেহেঙ্গাই ম্যান। তাদের অভিযোগ, মানুষকে ভাতে মারার তোড়জোড়ের জন্য দায়ী প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁর নীতি।

    কংগ্রেসের সদর দপ্তরে এদিন আলু, টম্যাটো, লঙ্কার ডালি সাজিয়ে অভিনব আঙ্গিকে সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই প্রধানমন্ত্রীকে নতুন নামে সম্বোধন করেন দলের সোশ্যাল মিডিয়ার প্রধান সুপ্রিয়া শ্রীনাতে। তঁার কটাক্ষ, ‘সুপারম্যান, স্পাইডারম্যানের নাম তো লোকে অনেক শুনেছে। কিন্তু মেহেঙ্গাই ম্যানের কথা কেউ জানেন কি? নরেন্দ্র মোদিই হলেন সেই মেহেঙ্গাই ম্যান। তাঁর জমানায় দাম বেড়েই চলেছে। কোনও সুরাহা নেই।’

    এই পরিস্থিতিতে ডিজেলের দাম আর খাদ্যপণ্যের জিএসটি কমালেই সুরাহা মিলতে পারে বলে মনে করেন কংগ্রেসের এই নেত্রী। তাঁর কথায়, এতে আনাজপাতির দাম কমে যাবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা করবেন না। কারণ, সাধারণ মানুষ নয়, তাঁর লক্ষ্য পুঁজিপতিদের পাশে দাঁড়ানো। বিষয়টি নিয়ে উপহাসও করেন সুপ্রিয়া। বলেন, ‘নিমন্ত্রণ পেলে এখন আর অন্য কোনও উপহার নিয়ে যাবেন না। সব্জির ডালি তুলে দিন। সকলে খুশি হবেন।’ এখানেই শেষ নয়, অগ্নিমূল্য বাজারদরের ফর্দ তুলে ধরে কংগ্রেস মুখপাত্র বলেন, ‘জিরে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কিলো দরে। আদা, লঙ্কা ৪০০ টাকা। পটল ৮০ টাকা। ঢ্যাঁড়স ৭০। প্যাকেটে যেসব ছোলা, বাদাম, মটর, বিস্কুট বিক্রি হয়, সেখানেও চলছে কৌশল। দাম এক রেখে কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে ওজন। সাধারণ ক্রেতার যা নজরেই আসছে না।’

    কংগ্রেসের এই অভিযোগকে প্রকাশ্যে উড়িয়ে দেওয়ার সাহসও পাচ্ছে না বিজেপি। কারণ, খোদ মোদি সরকারের তথ্যই তো বলছে দাম বাড়ছে। উপভোক্তা মন্ত্রকের হিসেব, এক মাসে খুচরো বাজারে আলুর দাম বেড়েছে ১৩.৮৮ শতাংশ। পেঁয়াজ ২১.৭৮ শতাংশ। টম্যাটো? উপভোক্তা মন্ত্রকের প্রাইস মনিটরিং বিভাগ বলছে, এক মাসে এর দাম বেড়েছে ২৪৯.৫২ শতাংশ। অর্থাৎ আড়াই গুণ। মঙ্গলবার কোথাও কোথাও টম্যাটো বিক্রি হয়েছে ১৫৫ টাকা কেজি দরে। 

    একইভাবে চাল, গম, আটা, চিনি, সব কিছুর দাম বেড়েছে। সরকারি তথ্য মোতাবেক, চালের দাম গত এক বছরে ১০.৭ শতাংশ বেড়েছে। গম ৫.৯৩, আটা ৮.৬৩ এবং চিনি ২.৮৭ শতাংশ। সাধারণ মানুষ খাবে কী? উঠছে প্রশ্ন। সাধারণ মানুষের নিরামিষ প্রোটিন ডালও এখন দামি। কেন্দ্রই বলছে, গত এক বছরে অড়হরের দাম বেড়েছে ২৭.২৯ শতাংশ। বিউলি ডাল ৮.৩৩ শতাংশ। বাঙালির পছন্দের মুগ ডাল ১১০ টাকা কিলো। এক বছরে দাম বেড়েছে ৮.১৬ শতাংশ। সেই হিসেবে স্রেফ সামান্য কমেছে ভোজ্যতেলের দাম। কিন্তু তা দিয়ে গৃহস্থ করবে কী? ভাজার সবজিই যে অগ্নিমূল্য! কবে কমবে? মৌন মোদি!
  • Link to this news (বর্তমান)