আজ মহারাষ্ট্রে দুই পাওয়ারের পৃথক বৈঠক, বোঝা যাবে কার পাল্লা ভারী অজিতরা সরকারে না বিরোধী, ঠিক করেননি স্পিকার
বর্তমান | ০৫ জুলাই ২০২৩
মুম্বই: কাকা শারদের হাত ছেড়ে মহারাষ্ট্র সরকারে যোগ দেওয়ার সময় থেকেই ভাইপো অজিত পাওয়ার দাবি করে আসছেন, বিধানসভায় মোট ৫৩ জন এনসিপি বিধায়কের মধ্যে ৪০ জনের সমর্থন রয়েছে তাঁর সঙ্গে। কিন্তু, ৮ জন বিধায়ক নিয়ে তাঁর উপমুখ্যমন্ত্রী পদে শপথগ্রহণের পর দু’দিন কাটলেও, আসলে কার পাল্লা ভারী তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। অজিত বা শারদ শিবিরের কেউই তাঁদের অনুগত বিধায়কদের নিয়ে প্রকাশ্যে আসেননি। শুধু অনিল দেশমুখ, জিতেন্দ্র আওয়াধ, জয়ন্ত পাতিল, রোহিত পাওয়ারের মতো হাতেগোনা কয়েকজন বিধায়ক ‘সিনিয়র পাওয়ার’ শিবিরেই থাকার কথা টুইটারে ঘোষণা করেছেন। এরই মধ্যে তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন মহারাষ্ট্র বিধানসভার অধ্যক্ষ রাহুল নারওয়েকর। তিনি জানান, এনসিপিতে ‘বিভাজন’ নিয়ে এখনও কোনও পিটিশন তাঁর কাছে জমা পড়েনি। শুধু অজিত পাওয়ার সহ শপথ নেওয়া ন’জন বিধায়কের পদ খারিজের আর্জি জানিয়ে জয়ন্ত পাতিলের একটি পিটিশন পেয়েছেন তিনি। স্পিকারের কথায়, ‘এনসিপি বর্তমানে রাজ্য সরকারের সঙ্গে রয়েছে নাকি বিরোধী শিবিরে রয়েছে, তা দেখতে হবে। আমি এখনও এবিষয়ে কোনও সিদ্ধান্তে আসতে পারিনি।’ অজিতের সঙ্গে কতজন বিধায়কের সমর্থন রয়েছে জানতে চাওয়ার হলে স্পিকার সাফ বলেন, ‘এব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই। কারণ, ওঁর তরফে লিখিত কোনও বয়ান আমি পাইনি। তবে বিধানসভার ২৮৮ আসনের মধ্যে এনসিপির ৫৩টি আসন অপরিবর্তিতই রয়েছে।’এরই মধ্যে শারদ পাওয়ারকে অবিলম্বে ‘শক্তি প্রদর্শনের’ চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন বিজেপি নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুধীর মুঙ্গাতিওয়ার। তাঁর কথায়, ‘অজিত পাওয়ারের সঙ্গে ৪০ জন বিধায়ক রয়েছেন। ক্ষমতা থাকলে শারদ পাওয়ার তাঁর বিধায়কদের সামনে আনুন।’ তবে আজ, বুধবারই সম্ভবত বোঝা যাবে কোন শিবিরের পাল্লা ভারী। কারণ বান্দ্রায় এনসিপি বিধায়ক, সাংসদ, জেলা সভাপতি ও প্রদেশ নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন অজিত পাওয়ার। আবার একই সময়ে ওয়াই বি চব্যন অডিটরিয়ামে বৈঠক ডেকেছেন শারদ পাওয়ার।
সূত্রের খবর, রাজ্যপালকে ৪০ জন বিধায়কের সই সহ চিঠি দিয়েছেন অজিত পাওয়ার। যদিও, সেই তালিকায় থাকা একাধিক বিধায়ক পরে দাবি করেছেন, তাঁরা কিছু না জেনেই ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। আবার অজিতের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত দুই এনসিপি বিধায়ক মকরন্দ পাতিল এবং বালাসাহেব পাতিল পরে শারদ শিবিরে ফিরে আসেন। আরও এক সাংসদ অমল কোলহেও একই পথে হাঁটার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।
এরই মধ্যে সোমবার সকালে অজিত পাওয়ারের নতুন দলীয় কার্যালয় উদ্বোধন নিয়ে আর এক প্রস্থ নাটক দেখল মুম্বইবাসী। রাজ্য সচিবালয়ের পাশেই ওই নতুন কার্যালয় উদ্বোধন করতে গিয়ে অজিতরা দেখেন, দরজায় তালা বন্ধ। চাবিও নাকি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কোনওক্রমে সদর দরজার তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকেও লাভ হয়নি। ভিতরের ঘরের দরজাগুলিও একই ভাবে বন্ধ ছিল। জানা গিয়েছে, যে বাংলোটিকে কার্যালয়ের জন্য বেছে নিয়েছেন অজিত, সেখানে থাকতেন বিধান পরিষদের বিরোধী দলনেতা, উদ্ধব ঘনিষ্ঠ নেতা অম্বাদাস দানভে। তাঁর আপ্ত সহায়কই রাতে বাংলোয় তালা-চাবি দিয়ে চলে গিয়েছিলেন। পরে অবশ্য সেই চাবি ফিরিয়েও দেন তিনি। যদিও, অজিত শিবিরের দাবি গোটা ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে।