• করমণ্ডল দুর্ঘটনা ইস্যুতে সংসদে প্রশ্ন এড়াবেন মন্ত্রী তদন্ত প্রভাবিত হবে যুক্তি তুলে ধরবেন
    বর্তমান | ০৫ জুলাই ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সিবিআই তদন্ত চলছে। প্রধানত এই কারণ দেখিয়েই সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা নিয়ে যাবতীয় প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে চাইছে রেলমন্ত্রক। প্রকাশ্যে এ নিয়ে কিছু বললে তা সরাসরি সিবিআই তদন্তে প্রভাব ফেলতে পারে—সাংসদদের প্রশ্নের উত্তরে মূলত এই জবাবই দিতে চলেছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। যার অর্থ, কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির রিপোর্টের মতোই সংসদে এই সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করতে রীতিমতো গররাজি বোর্ড। রেলমন্ত্রকের শীর্ষ সূত্রে এ খবর জানা যাচ্ছে। 

    মাসখানেক আগে ওড়িশার বালেশ্বরের কাছে বাহানাগা বাজার স্টেশনে করমণ্ডল এক্সপ্রেস সহ তিনটি ট্রেনের ভয়াবহ দুর্ঘটনায় ২৯৩ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও বেশি। এদিকে আগামী ২০ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। স্বাভাবিকভাবেই ওড়িশার এই মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে সংসদে মোদি সরকারকে চেপে ধরতে চাইছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাংসদরা।

    রেল সূত্রের খবর, মৌখিক কিংবা লিখিত এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে বিস্তারিত তথ্য সম্ভবত দেবেন না মন্ত্রী। দুর্ঘটনার পরের দিন ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে যে কথাগুলো কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছিলেন, সামনে আনা হবে প্রধানত সেগুলোই। বরং এই সংক্রান্ত প্রশ্নবাণের সামনে অনেক বেশি তুলে ধরা হবে রেলযাত্রীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিগত ন’বছরে মোদি সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, তার সবিস্তার খতিয়ান। কিন্তু কেন এই লুকোচুরি? রেলমন্ত্রক সূত্রের ব্যাখ্যা, যেহেতু বর্তমানে ওই দুর্ঘটনার সিবিআই তদন্ত চলছে, তাই এই সংক্রান্ত অন্য কোনও রিপোর্ট বা তথ্য প্রকাশ করে দিলে তা তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারে। এই কারণেই গত ২৮ জুন সিআরএস রিপোর্ট রেল বোর্ডে জমা পড়লেও তা এখনও পর্যন্ত প্রকাশই করেনি রেলমন্ত্রক।

    এক্ষেত্রে সিবিআই তদন্ত শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলা হচ্ছে রেল আধিকারিকদের। প্রসঙ্গত, রেল বোর্ডের কাছে যে রিপোর্ট পেশ করেছে সিআরএস, সেখানে কার্যত রেলের ঘাড়েই দুর্ঘটনার দায় চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট রিপোর্টে কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটি স্পষ্টই জানিয়েছে যে, সিগন্যালিং অ্যান্ড টেলিকম বিভাগের বিভিন্ন স্তরে একাধিক গাফিলতির জন্যই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, চেন্নাইগামী আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের জন্য ভুল সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। একদিকে ‘রান-থ্রু’ মুভমেন্টের জন্য করমণ্ডল এক্সপ্রেসের হোম সিগন্যাল সবুজ ছিল, আবার অন্যদিকে আপ মেন লাইন থেকে আপ লুপ লাইনে ওঠার ‘ক্রসওভার’ লুপ লাইনে যাওয়ার দিকনির্দেশ ছিল। যার ফলে করমণ্ডল এক্সপ্রেস লুপ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িতে সজোরে ধাক্কা মারে এবং তার বেলাইন বগিতে ডাউন মেন লাইনের বেঙ্গালুরু-হাওড়া এক্সপ্রেসের শেষের দুটো কোচ ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। 
  • Link to this news (বর্তমান)