• টিভি চ্যানেল উড়িয়ে দেওয়ার ছক ২ আইএস জঙ্গির খুনের টার্গেট ধর্মগুরুকেও
    বর্তমান | ০৫ জুলাই ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ইসলামিক স্টেটের (আইএস) শিবিরে যোগ দিতে আফগানিস্তানে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল হাওড়ার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া মহম্মদ সাদ্দাম ও তার ‘গুরু’ আব্দুল রাকিব কুরেশির। তাদের টার্গেট ছিল, উত্তরপ্রদেশের এক ধর্মগুরুকে খুন করা এবং সেখানকারই একটি বেসরকারি বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমের অফিস উড়িয়ে দেওয়া। টার্গেট কিলিং এবং টার্গেট ব্লাস্ট রূপায়িত করার আগে সংশ্লিষ্ট দুই জায়গায় ‘রেইকি’ সেরেছিল আইএস জঙ্গিরা। বিষয়টি নিয়ে টেলিগ্রাম মেসেজের মাধ্যমে আফগানিস্তানের আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে নিয়মিত বার্তা আদানপ্রদানও করেছে হাওড়ার দুই যুবক। তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে এমনটাই দাবি করেছে। উল্লেখ্য, গত জানুয়ারি মাসে হাওড়া থেকে সাদ্দাম ও সঈদ নামে দুই জঙ্গি ধরা পড়েছিল। সঈদ ছিল কোম্পানি সেক্রেটারিশিপ কোর্সের পড়ুয়া। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পাকড়াও করা হয় কুরেশিকে। 

    এনআইএর জমা দেওয়া চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, আফগানিস্তানের কয়েকজন জঙ্গির সঙ্গে তাদের নিয়মিত কথাবার্তার প্রমাণ মিলেছে। মিলেছে বিপুল পরিমাণ আপত্তিকর নথিও। ধৃতদের জেরা করে এসটিএফ জানতে পারে, সিরিয়ায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে আইএস। তাই সেখানকার জঙ্গিদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছিল তারা। সেই লক্ষ্যেই চলছিল তহবিল সংগ্রহের কাজ। ‘দাবিক’ সহ আইএসের বিভিন্ন অনলাইন ম্যাগাজিনের গ্রাহক ছিল সাদ্দাম এবং সঈদ। শুধু নিজেরাই গ্রাহক হয়েছে এমনটা নয়, বহু যুবককে তারা ওই সব ম্যাগাজিনের পাঠক বানিয়েছিল। এনআইএ বলেছে, আইএসের হয়ে এই কাজ করার জন্য তাদের মগজ ধোলাই করেছে মধ্যপ্রদেশের আব্দুল রাকিব কুরেশি। এরপর এসটিএফ রাকিবকেও গ্রেপ্তার করে। পরে মামলাটি যায় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ’র হাতে। ছ’মাস ধরে তদন্ত চালানোর পর রাকিব ও সাদ্দামের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়। ৪৬ পাতার এই চার্জশিটে ২৯ জন সাক্ষীর বিবরণ দিয়েছে এনআইএ। চার্জশিটে এনআইএ জানিয়েছে, কুরেশির সঙ্গে সাদ্দামের পরিচয় হয় সোশ্যাল মিডিয়া মারফত। সেখানে তাদের নিয়মিত কথাবার্তা চলত। কেন আইএসে নাম লেখানো দরকার, সে সম্পর্কে একাধিক মোটিভেশনাল ভিডিও কুরেশি পাঠিয়ে দেয় হাওড়ার এই ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের। এর বাইরে প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বেশকিছু ভিডিও এসেছিল। সাদ্দামকে একটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র পাঠানোর কথা ছিল কুরেশির। তা দিয়ে ধর্মগুরু সহ বেশ কয়েকজনকে খুনের পরিকল্পনা করেছিল হাওড়ার এই আইএস জঙ্গি। ওই ধর্মগুরু এবং ওই সংবাদমাধ্যম আইএস তথা ভারত বিরোধী বিভিন্ন সংগঠনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে সোচ্চার ছিল। আফগানিস্তানের কর্তাদের নির্দেশে তাই টার্গেট কিলিং ও ব্লাস্টের পরিকল্পনা করেছিল আইএস’এর এদেশের মডিউল। সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সাদ্দাম, সঈদ ও কুরেশির কাঁধে। এরই পাশাপাশি সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য সাদ্দাম ও কুরেশির আফগানিস্তানে যাওয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। এই বিষয়টি তাদের চ্যাট থেকে জেনেছে এনআইএ।   
  • Link to this news (বর্তমান)