• চাঁদা তুলে বৃদ্ধার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ এনে দিলেন বাম নেতারা
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি শহরের নাকের ডগায় হলেও আজও যেন গাঢ় অন্ধকার ঘিরে রেখেছে খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সুকান্তনগর কলোনির সুফিনা বেওয়ার জরাজীর্ণ ঝুপড়িটিকে। আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় দীর্ঘদিন বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন ছিল তাঁর ঝুপড়িটি। এবার পঞ্চায়েত ভোটে প্রচারে গিয়ে তিস্তাপারের সেই অশীতিপর বৃদ্ধার দুরাবস্থা নজরে আসে বাম নেতাদের। ভোট মিটতেই সেই ঝুপড়িতে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করে দিলেন স্থানীয় বাম নেতারা। রীতিমতো চাঁদা তুলে বৃদ্ধার জরাজীর্ণ ঘরে পাকাপাকি বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা করে দিলেন তাঁরা। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ বিলটিও যাতে যথাসময়ে বিদ্যুৎ দপ্তরে জমা পড়ে, সেই ব্যাপারে আশ্বস্ত করলেন তাঁরা। আর এই উদ্যোগে বেজায় খুশি এলাকার বাসিন্দারা। 

    বৃদ্ধার প্রতিবেশী বাবলু মহম্মদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সুফিনা বেওয়া সহায় সম্বলহীনভাবে এখানে বসবাস করছেন। বাম আমলে পঞ্চায়েত থেকে ঘর পেয়েছিলেন। সেই ঘরও আজ প্রায় জরাজীর্ণ। বৃষ্টি হলেও ঘরে জল পড়ে। দীর্ঘদিন তাঁর ঘরে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। স্থানীয় বাম নেতারা উদ্যোগী হওয়াতেই সমস্যা মিটল। 

    সুফিনা বেওয়া বলেন, আমার এক ছেলে, সে নামমাত্র রোজগারের আশায় নন্দনপুর বোয়ালমারি এলাকায় ফেরি করে। ও আলাদা থাকে। মাঝেমধ্যে পাঁচশো-হাজার টাকা পাঠায়। তা দিয়ে সংসার চলে না। আধবেলা খেয়ে দিন কাটে। তাই নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পারিনি। বছর চারেক আগে বিল দিতে না পারায় বিদুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তারপর থেকে আর আলো জ্বলতো না। এ ব্যাপারে আগের পঞ্চায়েত সদস্যকে বলেও কোনও কাজ হয়নি। আজ করে দেব, কাল দেব বলে ঘুরিয়েছেন। 

    বৃদ্ধার প্রতিবেশী বাবলু মহম্মদ বলেন, আগে এখানে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। কিন্তু, এবার আমাদের সুকান্তনগর কলোনির বুথে সিপিএম প্রার্থী গোঁসাই সরকার জয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রচারের জন্য সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পীযূষ মিশ্র এসেছিলেন। তিনিই প্রধান উদ্যোক্তা। পীযুষবাবু  বলেন, উন্নয়নের কথা আওড়ালেও শাসকদল বৃদ্ধার বিষয়টি সেভাবে কোনওদিন গুরুত্ব দেয়নি। ভোটের আগে বিষয়টি আমাদের নজরে আসে। এরপর ভোট মিটতে চাঁদা তুলে বিদ্যুৎ দপ্তরে নির্ধারিত টাকা জমা দিয়ে আলোর ব্যবস্থা করা হল। আগামীতেও যাতে ওঁর বাড়ির বিদ্যুৎ বিল মেটাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেটা দেখা হবে। বৃদ্ধার আবাস যোজনায় ঘরের প্রয়োজন, বার্ধক্যভাতাও তিনি পান না। বিষয়টি প্রশাসন দেখলে ভালো হয়। 

    এ ব্যাপারে খড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান সুভাষ চন্দ বলেন, ওই বৃদ্ধার সমস্যার বিষয় নিয়ে আমাদের কাছে এলেই আমরা নিশ্চিতভাবে তাঁর পাশে দাঁড়াতাম। তিনি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে বিষয়গুলি আগে জানিয়েছিলেন কি না, সে ব্যাপারে সন্দেহ আছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)