• এবার যাযাবরের বেশে আস্তানা গেড়ে অপরাধের ছক ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতীদের
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: যাযাবরের বেশে শিলিগুড়িতে ঘাঁটি গেড়ে অপরাধ সংগঠিত করছে ভিনরাজ্যের দুষ্কৃতীরা। মাটিগাড়ায় গাড়ির শোরুমে ডাকাতির ঘটনায় মধ্যপ্রদেশের দু’জনকে গ্রেপ্তার করার পর এমন তথ্য পেয়েছে পুলিস। তারা এজন্য যাযাবরদের উপর নজরদারি শুরু করেছে। শহরের বিভিন্ন এলাকার লজেও যোগাযোগ বাড়িয়েছে পুলিস। 

    শিলিগুড়ির অতিরিক্ত ডেপুটি পুলিস কমিশনার শুভেন্দর কুমার বলেন, গাড়ির শোরুমের ডাকাতির ঘটনায় মধ্যপ্রদেশের গ্যাংয়ের দু’জনকে গ্রেপ্তার করে কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি চুরি, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের ঘটনা রুখতে শহরে নজরদারি ব্যবস্থা আরও চাঙ্গা করা হয়েছে। যাযাবরদের সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজখবর রাখা হচ্ছে। 

    দু’সপ্তাহ আগে মাটিগাড়ায় গাড়ির শোরুমে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সেই ঘনটরা তদন্তে নেমে পুলিস মধ্যপ্রদেশের গ্যাংয়ের হদিশ পায়। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, ডাকাতির অপারেশন চালানোর আগে প্রায় দু’সপ্তাহ এনজেপির একটি লজে ঘাঁটি গাড়ে সংশ্লিষ্ট গ্যাং। স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে সহ পরিবারের সকল সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে আসাটাই সংশ্লিষ্ট গ্যাংয়ের বিশেষত্ব। তাদের পরিবারের সদস্যদের কেউ খেলনা সামগ্রী আবার কেউ কান পরিষ্কারের নাম করে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে বেড়ায়। তারা গোটা শহর নিখুঁতভাবে রেইকি করে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে ডাকাতির ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করে গ্যাংয়ের মাতব্বররা। অপারেশনের দু’দিন আগে পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। পাশাপাশি অপারেশনের জন্য নিজের এলাকা থেকেই গাড়ি নিয়ে আসে এখানে। মধ্যপ্রদেশের গ্যাংয়ের কাছ থেকে এমন তথ্য পাওয়ার পরই যাযাবরদের নিয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করেছে শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিস। তারা গোয়েন্দা শাখাকে এ ব্যাপারে সক্রিয় করেছে। পুলিস অফিসাররা জানান, ভৌগোলিক দিক থেকে শিলিগুড়ি শহরের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য এখানে ভিনরাজ্যের প্রচুর মানুষ আসে। মাঝেমধ্যেই মাটিগাড়া, এনজেপি, প্রধাননগর সহ বিভিন্ন এলাকায়, বাসস্ট্যান্ড ও রেলস্টেশন চত্বরে যাযাবরদের ঘাঁটি দেখা যায়। দিনভর তারা ফেরিওয়ালার কাজ করে। ওদের আসল মতলব বোঝা মুশকিল। তাই চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি সহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ রুখতে ওদের গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে। 

    এনজেপির একটি লজে আশ্রয় নিয়েছিল ওই গ্যাং। তারা লজে থাকলেও সেখানকার খাবার খেত না। লজের সামনে নিজেরা রান্না করেই খেত। গ্যাংয়ের হদিশ মেলার পর এনজেপি সহ শহরের বিভিন্ন এলাকার লজগুলিতেও পুলিস নজরদারি বাড়িয়েছে। পুলিস অফিসাররা বলেন, হোটেল, লজ ও রেস্তরাঁয় নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়। তবে ওই গ্যাংয়ের খোঁজ মেলার পর লজগুলির সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়ানো হয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)