• টানা ন’বার জয়ী দীপকেই আস্থা তৃণমূলের
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১৯৮৩ সাল থেকে টানা ৯ বার জিতলেন জেলা পরিষদের প্রাক্তন সহ সভাধিপতি তথা প্রবীণ তৃণমূল নেতা দীপক বসু। এ বছরও জিতেছেন জেলা পরিষদ আসনে। সত্যজিৎ বিশ্বাসের মৃত্যুর পর থেকে কোনও নির্বাচনে দাগ কাটতে না পারা হাঁসখালির তৃণমূল নেতৃত্ব এবার ভরসা করছিল পোড়খাওয়া নেতার উপর। 

    রানাঘাটের পায়রাডাঙ্গার বাসিন্দা দীপক বসুর বয়স ৬৮। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে বরাবরই দক্ষিণপন্থী আদর্শে বিশ্বাসী তিনি। ১৯৮৩ সালে প্রথমবার সিপিএমের হাঁসখালি ব্লক সভাপতি নরেন্দ্রনাথ সরকারকে হারিয়ে পঞ্চায়েতে জয়লাভ করেন। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত অপরাজিত তিনি। তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকেই জেলায় দলীয় সংগঠন মজবুত করতে বড় ভূমিকা রেখেছেন। ২০০৮ সালে পায়রাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রথমবার প্রধান হন। এরপর ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ। সেবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সভাধিপতির আসনটি ছেড়ে দিয়েছিলেন বাণীকুমার রায়কে। ২০১৮ সালে জেলা পরিষদের সহ সভাপতির আসনে বসেন দীপক। এবারও পরিষদের ৩৮ নম্বর হাঁসখালি আসনে তাঁর ওপরেই ভরসা রেখেছিল দল। জয় পাওয়ার পরই হাঁসখালির দলীয় সংগঠনকে মজবুত করতে তৎপর হয়েছেন তিনি। এই ব্লকে মজবুত নেতৃত্বের অভাবে বিজেপি যে বিভিন্ন নির্বাচনে তৃণমূলের ভোটবাক্সে থাবা বসিয়েছে, তা স্বীকার করে নেন দীপক। তিনি বলেন, হাঁসখালিতে তৃণমূলের বিপুল জনসমর্থন রয়েছে। আমাদের লড়াকু কর্মীরাও রয়েছেন। কিন্তু সংগঠনের সেই অর্থে কোনও অভিভাবক ছিল না এতদিন। আগামী লোকসভার আগে এই শূন্যস্থান আমাদের পূরণ করতেই হবে।

    এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে হাঁসখালি ব্লকের ১৩টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ময়ূরহাট ১ ও ২, বগুলা-২, বাদকুল্লা ২, বেতনা এবং গোবিন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েত তৃণমূলের হাতছাড়া হয়েছে। জেলা পরিষদের দু’টি আসনেও থাবা বসিয়েছে পদ্মশিবির। এর মূল কারণ হিসেবে নিচুতলার কর্মীরা দায়ী করছেন নেতৃত্বের অভাবকে। অনেকেই বলছেন, অভ্যন্তরীণ মান অভিমান তো ছিলই, এবার পঞ্চায়েতের টিকিট না পেয়ে নির্দলে না গেলেও দলের হয়ে প্রচারে দেখা যায়নি বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান ও উপ প্রধানদের। তাঁদের সংগঠিত করার মতো কেউ ছিল না। আগামী লোকসভা নির্বাচনে হারানো জমি ফিরে পেতে তৃণমূল নেতৃত্ব তাই অভিভাবক হিসেবে ভরসা রাখছে দীপকের ওপর। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে হাঁসখালিতে প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাস খুন হন। সে বছর উপনির্বাচনে কৃষ্ণগঞ্জ আসনে বিজেপির আশিস বিশ্বাসের কাছে হেরে যান তৃণমূলের প্রমথরঞ্জন বসু। এরপর একুশের বিধানসভা নির্বাচনেও ফের আশিসের কাছে হারেন তৃণমূলের তাপস মণ্ডল। তৃণমূল সূত্রে খবর, ব্লকের দাপুটে সংগঠক হিসেবে পরিচিত সত্যজিতের বিকল্প হিসেবে এবার দীপককেই বেছে নিয়েছে দল।
  • Link to this news (বর্তমান)