• জেলাজুড়ে অবাধ ভোট লুটের অভিযোগ মাত্র ৪৪টি বুথে ছাপ্পার রিপোর্ট জমা বিজেপির
    বর্তমান | ১৭ জুলাই ২০২৩
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কৃষ্ণনগর: নির্বাচনের দিন থেকেই অবাধ ভোট লুটের অভিযোগ তুলেছিল বিজেপি। কিন্তু জেলা নেতৃত্বের পাঠানো তালিকায় নদীয়া জেলার মাত্র ৪৪টি বুথে ছাপ্পা ভোট হয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। বিজেপির অন্তর্বর্তী তদন্তেই এই তথ্য নাকি উঠে এসেছে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, ভোট লুট, ছাপ্পা পঞ্চায়েত নির্বাচনের এই ধরনের অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়ার নয়। কিন্তু তাই বলে সব বুথেই যে ভোট লুট হয়েছে তা পাগলের প্রলাপ ছাড়া কিছু না।

    প্রসঙ্গত, নির্বাচনের দিন নদীয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বুথ জ্যাম, ছাপ্পা, ভোটারদের ভয় দেখানো, বুথে বিরোধী এজেন্টদের বসতে না দেওয়া সহ একগুচ্ছ অভিযোগ আসছিল। অনেক ক্ষেত্রেই সেই অভিযোগ ফেলে দেওয়ার ছিল না। এমনকী ভোটের দিন দফার দফায় শাসক ও বিরোধী তরজায় জেলার বিভিন্ন প্রান্ত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।‌ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে চাপড়া ও নাকাশিপাড়ার শূন্যে গুলিও চালাতে হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে। ভোটের হিংসায় বলি হন এক তৃণমূল কর্মী। এমনকী চাপড়ায় ব্যালট বাক্স জলে ফেলে দেওয়া, কালীগঞ্জে ব্যালট বাক্স নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্যও দেখা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, কালীগঞ্জের দেবগ্রামে তৃণমূল বনাম কংগ্রেসের লড়াইয়ে বিদায়ী বোর্ডের তৃণমূল প্রধান মহিরুদ্দিন শেখ ছুরিকাঘাতে জখম হন। জখম হয়েছিলেন কংগ্রেস কর্মীরাও।‌ নাকাশিপাড়ার ধনঞ্জয়পুর, বিলকুমারি এলাকায় বুথ কেন্দ্রে বোমবাজির হওয়ার অভিযোগও তুলেছে বিরোধীরা শিবির। যার জেরে নদীয়া জেলার ৮৯টি বুথে পুননির্বাচন হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে নির্বাচন হয়। তবে নতুন করে অশান্তি ঘটেনি পুনর্নির্বাচনের দিন।‌

    যদিও ভোট মিটলেও স্বস্তি নেই জয়ী প্রার্থীদের। হাইকোর্টের নির্দেশে ফলাফল এখনও নিশ্চিত নয়। কারণ বিজেপির তরফ থেকে রাজ্যের ৬ হাজার বিতর্কিত বুথে পুনর্নির্বাচনের দাবি রাখা হয়েছে। হাইকোর্টের তরফ থেকে কমিশনকে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপর কমিশন বিজেপির তরফ থেকে জমা দেওয়া সেই তালিকা জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়েছে। পূর্ণাঙ্গ তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।‌

    তাতেই দেখা গিয়েছে সেই তালিকায় নদীয়া জেলার মাত্র ৪৪টি বুথ রয়েছে। জানা গিয়েছে, নদীয়া জেলার কালীগঞ্জ ব্লকের দু’টি বুথ, চাপড়া ব্লকের পনেরোটি বুথ, করিমপুর-১ নম্বর ব্লকের দু’টি বুথ, নাকাশিপাড়া ব্লকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বারোটি বুথ, হাঁসখালি ব্লকের সাতটি বুথ, রানাঘাট উত্তর পূর্ব বিধানসভার চারটি বুথ, রানাঘাট-১ নম্বর ব্লকের দু’টি বুথে ছাপ্পার অভিযোগ তুলেছে বিজেপি।‌ 

    বিজেপির সাংসদ জগন্নাথ সরকার বলেন, সমস্ত জেলা পরিষদ আসনগুলোতেই লুটতরাজ হয়েছে। এমনকী পঞ্চায়েত সমিতির আসনগুলোতে শেষ মুহূর্তে বিজেপি প্রার্থীদের জোর করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।‌ অধিকাংশ বুথেই ছাপ্পা হয়েছে।‌ যে কারণে নদীয়া জেলায় অপ্রত্যাশিত ফল হয়েছে। বহু বুথে পুনর্নির্বাচনের আবেদন করা হয়েছিল। 

    কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূলের চেয়ারম্যান নাসিরুদ্দিন আহমেদ বলেন, হেরে গিয়ে বিজেপি এখন পাগলের প্রলাপ বকছে। মানুষ উন্নয়নের পক্ষেই ছিল। পঞ্চায়েত নির্বাচনেও মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছে।‌
  • Link to this news (বর্তমান)