• চা শ্রমিকদের পাট্টা দিতে উদ্বৃত্ত জমির খোঁজ
    আনন্দবাজার | ১৯ জুলাই ২০২৩
  • জেলার চা বাগানগুলিতে কত পরিমাণ জমি উদ্বৃত্ত পড়ে রয়েছে, তার খোঁজ শুরু করেছে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন তথা ভূমি দফতর। উদ্দেশ্য— উদ্বৃত্ত জমিতে বাগানে বসবাসকারী চা শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়া।

    প্রশাসন সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহে খোলা চা বাগানে পাট্টা দেওয়ার বিষয়ে রাজ্যের নীতির রূপরেখা পাঠানো হতে পারে। সূত্রের দাবি, পঞ্চায়েত ভোট মিটে যাওয়ার পরে, চা শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার কাজে গতি আনা হচ্ছে। লোকসভা ভোটের আগে, ন্যূনতম ১০ শতাংশ শ্রমিকের হাতে যেন পাট্টা তুলে দেওয়া যায়, সে চেষ্টা চলছে বলে খবর।

    জেলার বন্ধ চারটি চা বাগানে ইতিমধ্যেই শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়া শুরু হয়েছে। মানাবাড়ি, ধরণিপুর, রেডব্যাঙ্ক এবং গ্রাসমোড় চা বাগানে সব মিলিয়ে ১,২২৮ জন চা শ্রমিককে পাট্টা দেওয়া হবে। এই চা বাগানগুলির জমির ‘লিজ়’ বাতিল করেছে রাজ্য সরকার। সে কারণে পাট্টা দেওয়ায় আইনত কোনও সমস্যা হয়নি। শ্রমিকদের পাট্টা দিয়ে ‘চা সুন্দরী’ প্রকল্পে ঘরও তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে বাগানগুলিতে।

    তবে সমস্যা তৈরি হয়েছে খোলা চা বাগানগুলির ক্ষেত্রে। এই বাগানগুলির জমির মালিকানা সংশ্লিষ্ট সংস্থার হাতে। রাজ্য সরকারই চা বাগান পরিচালনার জন্য জমির দীর্ঘমেয়াদি ‘লিজ়’ দেয়। সমস্যা হল, এই চা বাগানে রাজ্য সরকার শ্রমিকদের পাট্টা দিলে প্রথমে সেই জমি মালিকের হাত থেকে নিতে হবে। তাতে আইনি জটের আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যে একাধিক মালিক সংগঠনের তরফে এ নিয়ে আপত্তি জানানো হয়েছে। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বন্ধ চা বাগানে শ্রমিকদের জমির পাট্টা দেওয়া হয়েছে। খোলা চা বাগানের ক্ষেত্রে কাজ রূপরেখা এলেই শুরু হবে।”

    পঞ্চায়েত ভোটের আগে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্রান্তির সভায় ঘোষণা করেন, দ্রুত চা বাগানের জমিতে শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়া হবে। যদিও মালিক পক্ষের যুক্তি, বাগানের যে জমি উদ্বৃত্ত রয়েছে, তা বিভিন্ন প্রয়োজনে লাগে এবং ওই জমিতে পাট্টা দিলে বাগান পরিচালনায় সমস্যা হবে। ‘ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন’-এর এক কর্তার কথায়, ‘‘রাজ্য সরকার চুক্তি করে জমির ‘লিজ়’ দিয়েছে। সে জমির কোনও অংশ ফিরিয়ে নিলে চুক্তিভঙ্গ হবে। সে ক্ষেত্রে আইনি পরিসরে বিষয়টি মেটাতে হবে।’’ মালিক পক্ষ আইনি জটের প্রশ্ন তুললেও প্রশাসন কোন বাগানে, কত জমি উদ্বৃত্ত, তার হিসাব রাখছে।

  • Link to this news (আনন্দবাজার)