বালতি উল্টানোর ক্ষমতা নেই, ওরা বাংলায় সরকার ফেলবে! ৫ মাসের সময়সীমা নিয়ে বঙ্গ বিজেপিকে কটাক্ষ মমতার
বর্তমান | ২০ জুলাই ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বেশ কিছুদিন ধরে বিজেপি বাংলার নির্বাচিত সরকার ফেলে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে দিয়ে শুরু হয়েছিল এই হুঁশিয়ারির পালা। বীরভূমে এক সভা থেকে তিনি দাবি করেছিলেন, আগামী লোকসভায় এ রাজ্য থেকে বিজেপি ৩৫টি আসন পেলে সরকার পড়ে যাবে। সম্প্রতি একই কথা ফের শোনা যায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের গলায়। পঞ্চায়েত ভোটে হিংসার বিরুদ্ধে বুধবার কলেজ স্কোয়ারে প্রতিবাদসভা করে বিজেপি। সেখান থেকে দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অমিত শাহের ‘স্বপ্ন’ পূরণের ডাক দেন দলের কর্মী-সমর্থকদের। এই বক্তব্যে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তীব্র কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শ্লেষ মিশিয়ে তাঁর জবাব, ‘একটা বালতি উল্টানোর ক্ষমতা নেই যাদের, তারা আবার সরকার ফেলে দেওয়ার কথা বলছে!’
বেঙ্গালুরুতে মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠক সেরে বুধবারই কলকাতা ফিরেছেন মমতা। বৃহস্পতিবার তিনি পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হকিমকে নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে যান নন্দীগ্রাম-খেজুরিতে ভোট পরবর্তী হিংসায় জখম দলীয় কর্মীদের দেখতে। সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। ২০২৬-এ বিধানসভা ভোটের আগেই বিজেপি এখানে সরকার ফেলে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে শুনে তীব্র ক্ষোভ উগরে দেন। বলেন, ‘কী আর করবে! সত্যি সত্যিই ওদের খেয়েদেয়ে কোনও কাজকর্ম নেই। আগে নিজেদের সরকারটা সামলাক। ওদের সরকার (কেন্দ্রীয় সরকার) তো উল্টে গিয়েছে। কাল (বেঙ্গালুরুর বৈঠকের পর) থেকে তো ভয়ে থরথর করে কাঁপছে।’
তিনি এদিন ফের দাবি করেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন কেন্দ্রিক হিংসায় তাঁর দলের লোকজনই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আক্রান্ত হয়েছেন। বলেন, ‘ওরা মেরেছে, পুড়িয়ে দিয়েছে, বাড়িগুলো জ্বালিয়ে দিয়েছে। মেয়েদের শারীরিক নির্যাতন করতে গিয়েছে। বউ-ছেলে-মেয়ে সমেত বাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। ...ওদের শুধু কুৎসা আর হিংসা ছড়ানোই কাজ। আর মানুষে মানুষে বিভেদ তৈরি করো। মানুষের রক্ত নাও।’ প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার একটি সরকারি অনুষ্ঠান থেকে বাংলায় যাবতীয় হিংসার জন্য রাজ্য সরকার এবং তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বিজেপিকে পাল্টা অভিযুক্ত করলেন তিনি। মমতার এই আক্রমণাত্মক মেজাজ কাল, ২১ জুলাই তৃণমূলের সমাবেশের মূল সুর বেঁধে দিল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এদিন হাসপাতালে গিয়ে নির্বাচনী হিংসায় আহতদের হাতে রাজ্য সরকারের তরফে ৫০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন তিনি। জানিয়ে যান, বাকিদেরও আগামী তিন থেকে চারদিনের মধ্যে টাকা দেওয়া হবে। প্রতিশ্রুতি মতো মিলবে চাকরিও।