• ISRO Mission : শুধু চাঁদই নয়, ইসরোর টার্গেটে এবার সূর্য-মঙ্গল-শুক্র, জোরকদমে প্রস্তুতি
    এই সময় | ২০ জুলাই ২০২৩
  • এখনও পর্যন্ত ঠিকঠাকই চলছে চন্দ্রযান-৩। প্রতিটি পর্যায়ে টপকাচ্ছে একেবারেই মসৃণভাবেই। সবকিছু ঠিক থাকলে আশা করা হচ্ছে অগাস্টের শেষের দিকে চাঁদে পৌঁছবে চন্দ্রযান-৩।

    মঙ্গলবার পৃথিবীর কক্ষপথে তৃতীয় পর্যায়ে সফলভাবে উঠে গিয়েছে চন্দ্রযান-৩। পরবর্তী পর্যায়ে সেটিকে পাঠানো হবে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টো থেকে ৩-টের মধ্যে। জানানো হয়েছে ইসরোর তরফে।

    আগামী দুই সপ্তাহ ঠিক একইরকম ভাবে কক্ষপথের ধাপগুলিকে একএক করে বাড়াতে থাকবেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। যতক্ষণ না পর্যন্ত মহাকাশযানটি পৃথিবীর অভিকর্ষজ বল কাটিয়ে বেরিয়ে যেতে পারছে ততক্ষণ পর্যন্ত এটির গতি বাড়ানো হবে। এইভাবে একসময় পুরোপুরি পৃথিবীর অভিকর্ষজ বল কাটিয়ে বেরিয়ে যেতে সক্ষম হবে চন্দ্রযান-৩। ধরে নেবে চাঁদে পৌঁছনোর পথ। চাঁদে চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণের সময় ধরা হয়েছে ২৩ অগাস্ট। এর আগে চাঁদে সফলভাবে মহাকাশযান অবতরণ করাতে পেরেছে রাশিয়া, আমেরিকা ও চিন। চন্দ্রযান-৩ মিশন সফল হলে ভারতই হবে চতুর্থ দেশ যারা সফলভাবে চাঁদে মহাকাশযান অবতরণ করাতে পারবে।

    তবে চাঁদ ধরার চেষ্টাতেই শুধু ক্ষান্ত থাকতে চান না ইসরোর বিজ্ঞানীরা। চাঁদের পর এবার নেক্সট টার্গেট সূর্য। শুধু সূর্যই নয় মহাকাশে মানুষও পাঠাতে চান ইসরোর বিজ্ঞানী। আর সেই মিশনের নাম 'গগনযান' মিশন। আর তার জন্য এখন জোরকদমে চলছে প্রস্তুতিও। ২০২৫-এ এই মিশন চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে মানুষ পাঠানোর আগে একাধিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে। প্রথমে মানুষবিহীন মহাকাশযান পাঠিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হবে সেটিতে কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি থাকছে কি না, কোনও গোলমাল করছে কি না, আদৌ কতটা মানুষকে বইতে সক্ষম সেই মহাকাশযানটি ইত্যাদি। চলতি বছরের অগাস্টের শেষে 'গগনযান' সিরিজের প্রথম অ্যাবর্ট মিশন সংঘটিত হবে। মানুষ পাঠানোর সময় যাতে কোনও অঘটন না হয় তা নিশ্চিত করতেই এই পরীক্ষাগুলো চালানো হবে প্রথমে। আগামী বছর প্রথমে মনুষ্যহীন সম্পূর্ণ মিশন পরিচালনা করা হবে। সেটিই হবে ফাইনাল ট্রায়াল। সেটি সফল হলেই তবেই মহাকাশে মানুষ পাঠাবে ভারত।

    গগনযান প্রকল্পের লক্ষ্য ৫ থেকে ৭ দিন স্থায়ী একটি মিশনের জন্য ৪০০ কিলোমিটার কক্ষপথে ভারতের মানব স্পেসফ্লাইটের ক্ষমতাকে তুলে ধরা। ইসরো গগনযান প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যেই বেশকিছু মাইলফলক পেয়েছে । এর মধ্য়ে রয়েছে ক্রাইও স্টেজ (C25), ইঞ্জিন যোগ্যতা পরীক্ষা, ক্রু এক্সেপ সিস্টেমের স্যাস্টিক পরীক্ষা ও প্রধান প্যারাসুট এয়ারড্রপ পরীক্ষা। সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারে ক্রু এস্কেপ সিস্টেমের বৈশিষ্ট্যের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে পরীক্ষামূলক যানটিও।

    সূর্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় আদিত্য এল-১ সূর্যের তথ্য অন্বেষণে এবার ইসরো প্রস্তুতি নিচ্ছে আদিত্য এল-১ অভিযানের। এই বছরের অগাস্টে নির্ধারিত হয়েছে সময়। ২০১৫ সালে চালু হওয়া অ্যাস্ট্রোনাট-এর পর ইসরোর দ্বিতীয় দ্বিতীয় মহাকাশ-ভিত্তিক জ্যোতির্বিদ্যা মিশন হবে এই আদিত্য এল-১। মহাকাশযানটি স্থাপন করা হবে পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে সূর্য-পৃথিবী সিস্টেমের ল্যাগ্রেঞ্জ পয়েন্ট-১ (L1)-এর চারদিকে হ্যালো কক্ষপথে। L1-এর চারপাশে হ্যালো কক্ষপথে থাকার ফলে কোনও গ্রহণ ছাড়া সূর্যের নিরবচ্ছিন্ন পর্যবেক্ষণ সম্ভব হবে। চন্দ্রযান মিশনের মতো, মহাকাশযানটিকে প্রাথমিকভাবে স্থাপন করা হবে পৃথিবীর একটি নিম্ন কক্ষপথে। পরে অনবোর্ড প্রোপালশান ব্যবহার করে চালু করা হবে L1-এর দিকে। লঞ্চ থেকে L1 পর্যন্ত মোট ভ্রমণের সময় হতে পারে প্রায় ৪ মাস।

    আমেরিকার সঙ্গে ইসরোর যৌথ মিশান নিসার NASA_ISRO SAR (NISAR) মিশনের লক্ষ্য হল সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার (SAR) বিশ্লেষণের মাধ্যমে পৃথিবীর পরিবর্তনশীল বাস্তুতন্ত্র, গতিশীল পৃষ্ঠ ও বরফের ভর মাপজোক করা। যৌথ এই মিশনের মাধ্য়মে নজরে আসবে পৃথিবী পৃষ্ঠের সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলো । আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত, ভৃগর্ভস্থ জল সরবরাহ, বরফ গলার হার, বনাঞ্চলের পরিবর্তনগুলো পর্যবেক্ষণ করা যাবে। ১২ দিন অন্তর স্যাটেলাইটটি রিপোর্ট পাঠাবে গ্রাউন্ড স্টেশনে।

    Chandrayaan 3 Launch : পৃথিবীর টান কাটিয়ে চাঁদের বুকে চন্দ্রযান ৩ মঙ্গলযান-২ মঙ্গলযান-২ ভারতের দ্বিতীয় আন্তঃগ্রহ মিশন। মঙ্গল গ্রহের দ্বিতীয় মিশন। এই মহাকাশযানে থাকবে হইপারস্পেকট্রাল ক্যামেরা এবং একটি রাডার। এই মিশনের জন্য বাতিল করা হয়েছে পরিকল্পিত ল্যান্ডার। মঙ্গলের তথ্য অন্বেষণে প্রথম মিশন ছিল মঙ্গলযান-১। এটি একটি অরবিটার মিশন। সফলভাবে মঙ্গলগ্রহের গ্রহের কক্ষপথে পৌঁছেছে। মহাকাশযান এবং গ্রাউন্ড সেগমেন্টের জন্য ৪৫০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে ।

    শুক্র গ্রহের দিকে নজর মঙ্গল গ্রহের অরবিটার মিশনের সাফল্যের পর ভারতও শুক্র গ্রহের তথ্য অন্বেষণের দিকে ঝুঁকেছে। যদিও আমেরিকায়, ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সি ও চিন শুক্র গ্রহে মিশনের পরিকল্পনা করেছে। ভারতও শুক্র অভিযান প্রাথমিকভাবে পরিকল্পনা করেছিল ২০২৪ সালের জন্য। তবে ২০৩১ সালে সেটি পিছিয়ে দেওয়া হতে পারে।
  • Link to this news (এই সময়)