• Kuno Cheetah Death : মরে যেত রকস্টাররাও! পরীক্ষার মুখে সব চিতা
    এই সময় | ২০ জুলাই ২০২৩
  • শিলাদিত্য সাহা 'সব মৃত্যু স্বাভাবিক' হলে সব চরিত্রই কাল্পনিক!কারণ মধ্যপ্রদেশের কুনোর জঙ্গলে আফ্রিকান চিতাদের পর পর মৃত্যু যে 'স্বাভাবিক' নয়, সেটা দেরিতে হলেও মানতে কার্যত বাধ্য হলো কেন্দ্র। গত রবিবারই এনটিসিএ বিবৃতি জারি করে দাবি করেছিল, গত চার মাসে ৮টি চিতার মৃত্যু একেবারেই অস্বাভাবিক নয়। প্রবল বৃষ্টি ও আর্দ্রতার জেরে চিতার ঘাড়ে বসানো রেডিয়ো কলারের আশপাশে ফাংগাল ইনফেকশন এবং তা থেকে সেপ্টিসিমিয়ায় মৃত্যুকে 'উড়ো খবর'ও বলেছিল তারা।

    তবে দেশ-বিদেশে বিশেষজ্ঞদের প্রশ্নের মুখে পড়ে চিতা রিইন্ট্রোডাকশন প্রজেক্টের কর্তারা মেনে নিয়েছেন, গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই পুরুষ চিতা তেজস ও সূরজের মৃত্যুর আসল কারণ, ঘাড়ের সংক্রমণ থেকে সেপ্টিসিমিয়াই। সূত্রের দাবি, আফ্রিকান চিতা বিশেষজ্ঞদের দেওয়া সেই তথ্য মঙ্গলবারই জরুরি ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব এবং এনটিসিএ-র ডিজি। তেজস ও সূরজের মৃত্যুর পরে কুনোর জঙ্গলের পরিস্থিতি বিচার করতে গিয়ে গত শনিবারই দেখা যায়, আরও ৩টি চিতার কলারের তলায় ক্ষত!

    সেই তথ্য প্রথমে স্বীকার করেনি মধ্যপ্রদেশ সরকার। যদিও একটি মৃত চিতার ঘাড়ের ক্ষতের একাধিক ছবি ও ভিডিয়ো সামনে আসতেই অসুস্থ সন্দেহে ৩টি চিতাকে ঘুমপাড়ানি গুলিতে কাবু করে এনে রাখা হয় কোয়ারান্টিনে। সোমবার আচমকা সরিয়ে দেওয়া হয় মধ্যপ্রদেশের প্রধান মুখ্য বনপালকে। এর মধ্যেই মঙ্গলবার কুনো পৌঁছন দক্ষিণ আফ্রিকার চিতা বিশেষজ্ঞ মাইক টফ্‌ট। জরুরি বৈঠক হয় টাস্ক ফোর্স ও স্টিয়ারিং কমিটির সঙ্গে। বুধবার সকালে কুনোর পশু চিকিৎসকদের সাহায্যে মাইক রেডিয়ো কলার খুলিয়ে চিকিৎসা করেন তিনটি চিতার। বাকিদেরও দ্রুত স্বাস্থ্যপরীক্ষা হবে। তার পর স্থির হবে, ভবিষ্যতে এদের আরও হাল্কা কোনও রেডিয়ো কলার পরানো হবে কি না।

    কাদের শরীরে সংক্রমণ ছড়িয়েছিল? জানা গিয়েছে, বুধবার চিকিৎসা হয়েছে রকস্টার্স বলে পরিচিত নামিবিয়ার দুই পুরুষ চিতা এলটন ও ফ্রেডির। প্রথমে প্রশ্ন উঠছিল, কেন শুধু পুরুষ চিতাদের ঘাড়ের কাছেই মারণ সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। কিন্তু এ দিন মাদি চিতা সাভানারও রেডিয়ো কলার খুলে ঘাড়ে সংক্রমণের চিকিৎসা হয় বলে খবর। কারও ক্ষেত্রেই ব্যাকটিরিয়া ও ম্যাগটের সংক্রমণ মাত্রাছাড়া পরিস্থিতিতে যায়নি। চিকিৎসকরা তাদের ক্ষতকে 'মাইল্ড' ও 'মডারেট' মনে করছেন। আপাতত তিন জনই স্থিতিশীল, থাকছে কোয়ারান্টিন বোমায়।

    বাকিরা সুস্থ আছে? কুনোর বনাধিকারিকদের কাছে এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। কারণ ভরা বর্ষা এবং প্রবল আর্দ্রতায় ব্যাকটিরিয়া সংক্রমণ দ্রুত ছড়ালে আরও চিতা মারা যাবে। তাই আগামী সপ্তাহের মধ্যেই মুক্ত জঙ্গল ও ঘেরাটোপ মিলিয়ে কুনোয় থাকা বাকি ১৩টি চিতার স্বাস্থ্যপরীক্ষা করতে চান তিন দেশের পশু বিশেষজ্ঞরা। বিশেষ করে দেখা হবে, তেজস-সূরজ বা এলটন-ফ্রেডির মতো আরও কারও ঘাড়ে রেডিয়ো কলারের আশপাশে ত্বকের সংক্রমণ ছড়িয়েছে কি না। বর্ষাকালে রেডিয়ো কলার সাময়িক ভাবে খুলে রাখা হবে কি না, তা নিয়েও আলোচনা হবে বলে জানা যাচ্ছে।
  • Link to this news (এই সময়)