• সীমার আইএসআই যোগ? জেরা করতেই উদ্ধার একাধিক পাক পাসপোর্ট, দানা বাঁধছে রহস্য
    ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস | ২০ জুলাই ২০২৩
  • পাকিস্তানি ভাবীকে জেরা করে উদ্ধার করা হয়েছে ৫টি পাকিস্তানি পাসপোর্ট। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে একটি অব্যবহৃত পাসপোর্ট। পাকিস্তানের বাসিন্দা সীমা হায়দারকে উত্তর প্রদেশ অ্যান্টি-টেরর স্কোয়াড দু’দিন ধরে জেরা করে। পুলিশ বলেছে যে তারা তার কাছ থেকে পাঁচটি পাকিস্তানি পাসপোর্ট, একটি অব্যবহৃত পাসপোর্ট এবং একটি পরিচয়পত্র উদ্ধার করেছে। সেই সঙ্গে পাওয়া গিয়েছে চারটি মোবাইল ফোন এবং দুটি ভিডিও ক্যাসেট। সেগুলি ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। জেরা করা হয়েছে শচীনকেও।

    ‘পাকিস্তানে গেলে আমাকে মেরে ফেলা হবে, আমি শচীনের সঙ্গে থাকতে চাই’, মোদী সরকারের কাছে ইতিমধ্যে আবেদন করেন সীমা হায়দারের। ২০১৯ সালে অনলাইন গেম PUBG খেলার সময় সীমা এবং শচীন একে অপরের সংস্পর্শে আসেন। এর পরে পাকিস্তানি মহিলা তার দেশ ছেড়ে গ্রেটার নয়ডায় শচীনের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। কিন্তু সীমাকে ঘিরে ক্রমেই দানা বাঁধছে রহস্য। পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের সঙ্গে সীমা হায়দরের কোনও যোগ রয়েছে কি না, সে বিষয়ে খতিয়ে দেখছে উত্তরপ্রদেশ এটিএস। জানা গিয়েছে সীমার কাকা এবং দাদা পাক সেনা বাহিনীতে কর্মরত।

    অনলাইন গেমের মাধ্যমে প্রেম। তারপরে তার প্রেমিকের জন্য দেশ ছেড়ে হাজার হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ভারতে আসেন পাক মহিলা। সম্প্রতি শিরোনামে আসা এই প্রেমের কাহিনী অবাক করেছে সকলকে। মহিলা পাকিস্তানের বাসিন্দা এবং ইতিমধ্যে বিবাহিত। মহিলার চার সন্তানও রয়েছে। পাকিস্তানি মহিলা সীমা গোলাম হায়দার এবং তার ভারতীয় প্রেমিক শচীন মীনাকে অবৈধভাবে বসবাস করার জন্য নয়ডা পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

    শুক্রবার (৮ জুলাই) গ্রেটার নয়ডার একটি আদালত তাদের দু’জনকে জামিন দেয়। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর সীমা (৩০) এখন তার চার সন্তানকে নিয়ে শচীনের (২৫) বাড়িতে রয়েছেন। সীমা ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন যে তিনি ভারতে শচীনের সঙ্গেই থাকতে চান। কারণ সে তাকে খুব ভালোবাসে। পাশাপাশি এক সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওই মহিলা বলেছেন, তাকে এখন পাকিস্তানে পাঠানো হলে সেখানে তাকে মেরে ফেলা হবে। কারণ তিনি ইতিমধ্যেই তার ধর্ম পরিবর্তন করে হিন্দু হয়ে গেছেন।

    গত ৪ঠা জুলাই সীমা ও শচীনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সীমান্ত পেরিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ এবং একজন পাকিস্তানিকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে শচীনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেল থেকে বেরিয়ে সীমা জানান, ‘২০২০ সাল থেকে তিনি তার প্রথম স্বামীর সঙ্গে তার কোন যোগাযোগ নেই’। তাকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানো হলে সেখানেই তাকে হত্যা করা হবে। আসলে, সীমার প্রথম স্বামী ভারত সরকারের কাছে তার স্ত্রী ও সন্তানদের ফেরত পাঠানোর আবেদন করেছেন।

    মহিলা আরও বলেন, ‘স্বামী শুধু অজুহাত দিচ্ছেন’। সীমার চার সন্তানেরই বয়স সাত বছরের নিচে। একই সময়ে, শচীন বলেন, ‘দু’জনই ২০১৯ সালে অনলাইন গেম PubG-এর মাধ্যমে একে অপরের সংস্পর্শে এসেছিলেন। এর পর দুজনেই প্রথমে বন্ধুত্ব করেন এবং পরে প্রেমে পড়েন।

    শচীন আরও জানিয়েছেন, ‘আমরা যখন নেপালে ছিলাম, সেখানেই বিয়ে করেছি। আমি সীমাকে আমার সঙ্গে ভারতে আমার বাড়িতেই রাখতে চাই। সীমা এখন হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছেন। অনলাইন গেম খেলতে গিয়ে শচীন ও সীমা প্রেমে পড়লে দুজনেই একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। সীমা পাকিস্তানে্র বাসিন্দা আর শচীন নয়ড্র। দুজনেই নেপালে দেখা করার পরিকল্পনা করেছিলেন।

    ২০২৩ সালের মার্চ মাসে, সীমা করাচি থেকে নেপাল এবং নয়ডা থেকে শচীনও নেপালে পৌঁছেছিলেন। নেপালে অনেক দিন একসঙ্গে ছিলেন দুজনেই। এর পর সীমা পাকিস্তানে ফিরে যান এবং শচীনও ভারতে ফিরে আসেন। এরপর করাচিতে ট্রাভেল এজেন্টের মাধ্যমে ভারতে আসার পরিকল্পনা করেন সীমা।

    নেপাল হয়ে ভারতে প্রবেশ করেন সীমা। ১৩ মে নেপাল হয়ে গৌতম বুদ্ধ নগরের রবুপুরা এলাকায় শচীনের বাড়িতে পৌঁছান সীমা। নয়ডা পুলিশ জানিয়েছে, পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের জৈসমাবাদের বাসিন্দা সীমা হায়দার প্রথম বিয়ে করেছিলেন ২০১৪ সালে গোলাম রাজার সঙ্গে। গোলাম করাচিতে থাকতেন। ২০১৯ সালে কাজের জন্য সৌদি আরবে গিয়েছিলেন গোলাম। দুজনেরই তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে যাদের বয়স সাত বছরের নিচে।
  • Link to this news (ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস)