• 'মমতার জন্যই ভোট দিতে পারেন রাজ্যের মানুষ', ২১শে জুলাইয়ের স্মৃতিচারণায় রনজিৎ
    এই সময় | ২০ জুলাই ২০২৩
  • 21 July Martyr'S Day Rally : সালটা ১৯৯৩। সেই সময়ে তৎকালীন যুব কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গের সভানেত্রী ছিলেন আজকের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার জন্য সচিত্র ভোটার কার্ডের দাবি তোলেন তিনি। সেই দাবি নিয়ে তৎকালীন রাজ্যের বাম সরকারের মূল সচিবালয় মহাকরণ অভিযানের ডাক দেওয়া হয় কংগ্রেসের তরফে। ২১ শে জুলাইয়ের দিনটিতে এই আন্দোলনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সামিল হন যুব কংগ্রেস কর্মীরা।

    কিন্তু অভিযোগ, সেই সময়ে গুলি চালানো হয় তাঁদের মিছিলে। তাতে মৃত্যু হয় ১৩ জনের। ঘটনা ঘিরে সেই সময়ে তুঙ্গে ওঠে রাজনৈতিক তরজা। পরবর্তীকালে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল গঠন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন দলের জন্মলগ্নের পরেও ২১ শে জুলাই ভোলেননি তিনি।

    প্রতি বছরই এই দিনটি শহিদ দিবস হিসাবে পালন করে আসছে তৃণমূল। ১৯৯৩ সালে কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ‘নো আইডেন্টিটি কার্ড - নো ইলেকশন’ আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন, সেই দিন উপস্থিত ছিলেন মহিষাদলের বর্ষীয়ান অরুনকুমার দিন্ডা ও রনজিৎ ঘোষ।

    সেই দিনের অভিজ্ঞতার কথা ২০২৩ সালের ২১ শে জুলাইয়ের আগে তুলে ধরলেন তাঁরা । সেদিনের ঘটনার স্মৃতিচারণ করে রনজিৎ ঘোষ বলেন, 'সেই সময় বাড়িতে বাবাকে লুকিয়ে কলকাতা গিয়েছিলাম। এদিকে এলাকায় রটে গিয়েছিল রনজিৎ মারা গিয়েছে। প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলাম, কিন্তু ভালো মতো আঘাত লেগেছিল আমার। রাস্তার ধারে পড়েছিলাম। সেখানকার বিহারী ও মাড়োয়াড়ি সম্প্রদায়ের মানুষ সাহায্য করেছিলেন। তাঁদের সাহায্য পেয়ে হাওড়া স্টেশন এসে বাড়ি ফিরেছিলাম। বাবা আমাকে কাছে পেয়ে কেঁদে উঠেছিলেন।'

    রনজিৎ আরও বলেন, 'সেই সময়ে ওই আন্দোলন না হলে ভোটার কার্ড সচিত্র পরিচয়পত্র হত না। এটার পিছনে মূল অবদান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।' আরেক প্রত্যক্ষদর্শী অরুনকুমার দিন্দা বলেন, 'সেদিনের কথা ভাবলে আজও খারাপ লাগে। ভয় পেয়েছিলাম বাড়ি ফিরতে পারব কিনা। কিছু পুলিশ আমাদের সাহায্য করেছিলেন সেখান থেকে বেরিয়ে যেতে।'

    তিনি আরও বলেন, 'সেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই আন্দোলনের জন্যই আজকের রাজ্য তথা সারা দেশের মানুষ সঠিকভাবে ভোট দিতে পারেন । কারণ ওই ঘটনার আগে পর্যন্ত রাজ্যে বামেরা ভোট হওয়ার আগেই ভোট লুঠ করে নিত। তৎকালীন মুখ্য নির্বাচন কমিশনারও এটা উপলব্ধি করে ভোটার কার্ডে ফটো লাগানোর বিষয়টি মঞ্জুর করেন।'

    সেদিনের ওই গুলিকাণ্ডের কথা মনে পড়লে আজও শিউরে ওঠেন এই দুই প্রত্যক্ষদর্শী বৃদ্ধ। তাঁদের একটাই আবেদন, যাই হয়ে যাক না কেন, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনা যেন আর না ঘটে।
  • Link to this news (এই সময়)